পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে-এটা বাংলাদেশ তথা মানবতার দাবি
একাত্তরের গণহত্যা বা মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের কারণে পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে- বাংলাদেশের এ দাবির যথার্থতা নিয়ে কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার গত শুক্রবার বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত সফরে এলে দুই দেশের সুসম্পর্কের স্বার্থে তাঁকে এই ঐতিহাসিক সত্যটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এর আগেও পাকিস্তানের রাষ্ট্র এবং সরকারপ্রধান যাঁরাই বাংলাদেশ সফর করে গেছেন, তাঁরাও ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে বলেছেন, অতীতকে ভুলে গিয়ে 'আমাদের' সামনে এগোতে হবে। পাকিস্তান বরাবরই জাতিগতভাবে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি 'অতীত ভুলে এগিয়ে চলার' আহ্বান জানাচ্ছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত নাৎসি বাহিনীকে খুঁজে বের করে বিচার করা হয়েছে। সাম্প্রতিককালে কম্বোডিয়ায় খেমাররুজদের মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং বসনিয়া-হারজেগোভেনিয়ার জাতিগত শুদ্ধি অভিযান- সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে। একই অপরাধে বিচার হয়েছে বসনিয়ার মিলোসেভিচ ও চিলির পিনোশেরও। এ ছাড়া প্রথম মহাযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জাপান প্রায়ই ওই সব দেশের কাছে ক্ষমা চাইছে।
অতীতের জঘন্য যত অপরাধ কিংবা সভ্যতার কলঙ্ক, তা সচেতনভাবে স্মরণ রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে সভ্যতা। অতীতের অনেক গৌরবোজ্জ্বল অর্জন যেমন ভোলা যায় না, তেমনি ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় অতীতের অপরাধ। ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রয়োজনে অতীতের কলঙ্কমোচনের দায়িত্বও প্রজন্ম-পরম্পরায় নিতে হয়। পাকিস্তানিরা তাদের অতীত ভুলে থাকার চেষ্টা আজ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস আমরা ভুলতে পারি না। যে ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত আমাদের ৩০ লাখ মানুষের আত্মাহুতি এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মর্মান্তিক ও করুণ ঘটনাবলি। যে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রভৃতি। যুগ যুগ ধরে আমরা আমাদের লাখ লাখ শহীদকে স্মরণ করব, সেই সঙ্গে ঘাতকদের কথাও মনে পড়বে। মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রার ভিত্তিই হলো অতীত অভিজ্ঞতা বা ঐতিহ্যকে ধারণ করে সম্মুখে চলা। যুদ্ধবিরোধী চেতনা সৃষ্টির জন্যই প্রয়োজন যুদ্ধের ইতিহাস পাঠ।
একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে- বাংলাদেশের এ দাবি ঐতিহাসিক-মানবিক ও বিশ্ব শান্তির পক্ষে জাতিসংঘের দালিলিক অধিকার। পাকিস্তান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কথা স্বীকার করতে হবে। পাকিস্তানেরই কিছু মানবতাবাদী মহান কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ, আসমা জাহাঙ্গীর ও অন্য মানবতাবাদী কর্মীরা এটা উপলব্ধি করেছেন। দক্ষিণ এশীয় সার্ক দেশ হিসেবে সুসম্পর্কের স্বার্থেই পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্তরের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
অতীতের জঘন্য যত অপরাধ কিংবা সভ্যতার কলঙ্ক, তা সচেতনভাবে স্মরণ রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে সভ্যতা। অতীতের অনেক গৌরবোজ্জ্বল অর্জন যেমন ভোলা যায় না, তেমনি ভুলে যাওয়া সম্ভব নয় অতীতের অপরাধ। ভবিষ্যৎ নির্মাণের প্রয়োজনে অতীতের কলঙ্কমোচনের দায়িত্বও প্রজন্ম-পরম্পরায় নিতে হয়। পাকিস্তানিরা তাদের অতীত ভুলে থাকার চেষ্টা আজ করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস আমরা ভুলতে পারি না। যে ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত আমাদের ৩০ লাখ মানুষের আত্মাহুতি এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির মর্মান্তিক ও করুণ ঘটনাবলি। যে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সৃষ্টি হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতিস্তম্ভ, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রভৃতি। যুগ যুগ ধরে আমরা আমাদের লাখ লাখ শহীদকে স্মরণ করব, সেই সঙ্গে ঘাতকদের কথাও মনে পড়বে। মানব সভ্যতার অগ্রযাত্রার ভিত্তিই হলো অতীত অভিজ্ঞতা বা ঐতিহ্যকে ধারণ করে সম্মুখে চলা। যুদ্ধবিরোধী চেতনা সৃষ্টির জন্যই প্রয়োজন যুদ্ধের ইতিহাস পাঠ।
একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে- বাংলাদেশের এ দাবি ঐতিহাসিক-মানবিক ও বিশ্ব শান্তির পক্ষে জাতিসংঘের দালিলিক অধিকার। পাকিস্তান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কথা স্বীকার করতে হবে। পাকিস্তানেরই কিছু মানবতাবাদী মহান কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ, আসমা জাহাঙ্গীর ও অন্য মানবতাবাদী কর্মীরা এটা উপলব্ধি করেছেন। দক্ষিণ এশীয় সার্ক দেশ হিসেবে সুসম্পর্কের স্বার্থেই পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে একাত্তরের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
No comments