বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জের-সিআইএ প্রধানের পদত্যাগ

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) পরিচালক ডেভিড পেট্রায়াস পদত্যাগ করেছেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জের ধরে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। চার তারকার এ জেনারেল মনে করেন, দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের আচরণ 'গ্রহণযোগ্য' নয়। জানা গেছে, জীবনীকার পলা ব্রডওয়েলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন পেট্রায়াস।


প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পুনর্নির্বাচিত হওয়ার মাত্র তিন দিনের মাথায় গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটল। ওবামা প্রশাসনের জন্য একে আকস্মিক আঘাত হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। ওবামা শুরুতে গররাজি থাকলেও পরবর্তী সময়ে পেট্রায়াসের (৬০) পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন।
কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবিআই) এক অনুসন্ধানে পেট্রায়াসের সম্পর্কের বিষয়টি বের হয়ে আসে। তবে পেট্রায়াস-পলার সম্পর্কের স্বরূপ উদ্ঘাটন এফবিআইয়ের অনুসন্ধানের উদ্দেশ্য ছিল না। পেট্রায়াসের ব্যক্তিগত কম্পিউটার আর কেউ ব্যবহার করছে কি না তা জানতেই তদন্ত চালায় তারা। তাদের আশংকা ছিল, পেট্রায়াসের ই-মেইল অ্যাকাউন্ট দেখার সুযোগ পেয়েছেন পলা। এ তদন্তের একপর্যায়ে দুজনের ঘনিষ্ঠতার বিষয়টি এফবিআইয়ের নজরে আসে। মূলত সিআইএর অভ্যন্তরীণ তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণেই ওই তদন্ত শুরু হয়েছিল। পেট্রায়াসের ভুল খুঁজতে নয়।
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে পেট্রায়াসকে তদন্তের বিস্তারিত জানানো হয়। ওবামা জেনেছেন গত বুধবার সকালে। ওই দিনই সিআইএ পরিচালক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগের আগ্রহ প্রকাশ করেন। সদ্য পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর প্রশাসনের এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ হঠাৎ করে শূন্য হয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুরুতে খুব সহজভাবে নেননি ওবামা। শুরুতে পেট্রায়াসের পদত্যাগপত্রও গ্রহণ করেননি। বরং এ ব্যাপারে রাতে ভাববেন বলে পেট্রায়াসকে জানান। শেষে অবশ্য সিআইএ পরিচালকের মতই মেনে নেন তিনি। সিআইএ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেওয়ার মাত্র ছয় ঘণ্টা আগে বিষয়টি কংগ্রেসকে জানানো হয়।
পরে গণমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে পেট্রায়াস বলেন, 'বিয়ের ৩৭ বছর পর বাইরের সম্পর্কে জড়িয়ে অত্যন্ত বাজে বিবেচনাবোধের পরিচয় দিয়েছি আমি। এ ধরনের ব্যবহার স্বামী হিসেবেই হোক বা আমাদের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্যই হোক_কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।' ঘটনা প্রকাশের পর পলার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পেট্রায়াসের জীবনী নিয়ে লেখা তাঁর 'অল ইন : দ্য এডুকেশন অব ডেভিড পেট্রায়াস' এ বছরের গোড়ার দিকেই প্রকাশিত হয়। পেট্রায়াস ইরাক ও আফগানিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক বাহিনীর নেতৃত্ব দেন। দুই ক্ষেত্রেই ব্যাপক সাফল্যের ছাপ রাখেন তিনি। ২০১১ সালে তাঁকে সিআইএর পরিচালক পদে বসানো হয়। এর আগে এই পদে ছিলেন লিওন প্যানেট্টা। পরে প্যানেট্টা প্রতিরক্ষামন্ত্রী হন। পেট্রায়াস ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট পয়েন্ট সামরিক একাডেমী থেকে স্নাতক করেন। স্ত্রী হলি পেট্রায়াসের সঙ্গে সেখানেই তাঁর পরিচয়। তাঁদের দুই সন্তান আছে।

No comments

Powered by Blogger.