বিদ্যুৎ উৎপাদনে আবার বাড়ছে গ্যাসনির্ভরতা by অরুণ কর্মকার
বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসনির্ভরতা আবার বাড়ছে। এই খাতে সরকারের মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের (ফুয়েল মিক্স) পরিকল্পনা কার্যত ব্যর্থ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিদ্যুতের জন্য গ্যাসের ওপর নতুন করে চাপ বাড়ছে। আগামী দুই বছরে যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু হবে, সেগুলোর প্রায় সবই গ্যাসভিত্তিক। অপরদিকে সরকারের পরিকল্পিত অন্য জ্বালানি ভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর বাস্তবায়ন ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে।
ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে।
বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশে প্রায় ৮৮ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রে। কিন্তু এভাবে একক জ্বালানিনির্ভরতা কোনো খাতের জন্যই স্বাভাবিক নয় বলে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসনির্ভরতা কমিয়ে মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা করে। তা ছাড়া চাহিদার তুলনায় গ্যাসের উৎপাদন ও সরবরাহেও সমস্যা ছিল।
ওই পরিকল্পনায় ডিজেল, ফার্নেস তেল, কয়লা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তখনকার ভয়াবহ বিদ্যুৎ-সংকটের আশু সমাধানের লক্ষ্যে ডিজেল ও ফার্নেস তেলচালিত ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রও চালু হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ডিজেল ও ফার্নেস তেলচালিত কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত হচ্ছে এক হাজার ৮২০ মেগাওয়াট। অবশিষ্ট এক হাজার ৭১০ মেগাওয়াট উৎপাদিত হচ্ছে গ্যাসচালিত কেন্দ্র থেকে (পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাওয়া সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রসহ)।
পিডিবি সূত্র জানায়, গত চার-পাঁচ বছরে তেলচালিত কেন্দ্র থেকে উৎপাদন বাড়ায় বর্তমানে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার প্রায় ৬৭ শতাংশ হচ্ছে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের ক্ষমতা। ফার্নেস তেলচালিত কেন্দ্রের ক্ষমতা হয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। ডিজেল থেকে ছয় শতাংশ। কয়লা থেকে প্রায় আড়াই শতাংশ এবং পানি থেকেও প্রায় আড়াই শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। তবে গত চার বছরের মতো আগামী দুই-তিন বছরেও সরকার গ্যাস ছাড়া অন্য কোনো জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সম্পন্ন করতে পারছে না। বিশেষ করে সরকারের পরিকল্পিত কয়লাভিত্তিক বড় কোনো কেন্দ্র আগামী দুই বছরের মধ্যেও চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ার কথা কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি কেন্দ্রেরও বাস্তবে কাজ শুরু হয়নি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাগেরহাটের রামপালে পরিকল্পিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটি (১৩২০ মেগাওয়াট) আগামী পাঁচ বছরেও চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কয়লাভিত্তিক অন্য কেন্দ্রগুলোর বাস্তবায়নও ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে, আগামী দুই বছরে চালু হওয়ার মতো নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সবই প্রায় গ্যাসচালিত। এর মধ্যে সরকারি খাতের হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালু হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়। কিন্তু আগামী মাস (ডিসেম্বর-১২) থেকেই কেন্দ্রটির পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য গ্যাস লাগবে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ছয় কোটি (৬৪ মিলিয়ন) ঘনফুট।
বেসরকারি খাতে সামিটের ৩৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার মেঘনাঘাট-২ কেন্দ্রটি আগামী বছর আগস্টে চালু হচ্ছে। ওই কেন্দ্রটি দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক (গ্যাস ও ফার্নেস তেল) হলেও এত বড় কেন্দ্র তেলে চালাতে প্রচুর ব্যয় হবে। তাই সেখানে গ্যাসই সরবরাহ করা হবে বলে সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো জানায়। কেন্দ্রটিতে গ্যাস লাগবে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি (৫৫ মিলিয়ন) ঘনফুট।
সামিটের ৩৪১ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিবিয়ানা-২ কেন্দ্রটি চালু হবে ২০১৪ সালের জুনে। এ কেন্দ্রটিতেও দৈনিক প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাস লাগবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলের ব্যবহার বাড়ায় গ্যাসের ওপর থেকে চাপ যেটুকু কমেছিল তা আবার বেড়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা ব্যর্থ হচ্ছে।
বর্তমান সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশে প্রায় ৮৮ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হতো গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রে। কিন্তু এভাবে একক জ্বালানিনির্ভরতা কোনো খাতের জন্যই স্বাভাবিক নয় বলে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসনির্ভরতা কমিয়ে মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা করে। তা ছাড়া চাহিদার তুলনায় গ্যাসের উৎপাদন ও সরবরাহেও সমস্যা ছিল।
ওই পরিকল্পনায় ডিজেল, ফার্নেস তেল, কয়লা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তখনকার ভয়াবহ বিদ্যুৎ-সংকটের আশু সমাধানের লক্ষ্যে ডিজেল ও ফার্নেস তেলচালিত ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পাশাপাশি কয়েকটি গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রও চালু হয়।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসাব অনুযায়ী, বর্তমান সরকারের আমলে এখন পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ৫৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৫০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ডিজেল ও ফার্নেস তেলচালিত কেন্দ্রগুলোতে উৎপাদিত হচ্ছে এক হাজার ৮২০ মেগাওয়াট। অবশিষ্ট এক হাজার ৭১০ মেগাওয়াট উৎপাদিত হচ্ছে গ্যাসচালিত কেন্দ্র থেকে (পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যাওয়া সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রসহ)।
পিডিবি সূত্র জানায়, গত চার-পাঁচ বছরে তেলচালিত কেন্দ্র থেকে উৎপাদন বাড়ায় বর্তমানে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার প্রায় ৬৭ শতাংশ হচ্ছে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রের ক্ষমতা। ফার্নেস তেলচালিত কেন্দ্রের ক্ষমতা হয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ। ডিজেল থেকে ছয় শতাংশ। কয়লা থেকে প্রায় আড়াই শতাংশ এবং পানি থেকেও প্রায় আড়াই শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। তবে গত চার বছরের মতো আগামী দুই-তিন বছরেও সরকার গ্যাস ছাড়া অন্য কোনো জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সম্পন্ন করতে পারছে না। বিশেষ করে সরকারের পরিকল্পিত কয়লাভিত্তিক বড় কোনো কেন্দ্র আগামী দুই বছরের মধ্যেও চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ১৯ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হওয়ার কথা কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র থেকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত একটি কেন্দ্রেরও বাস্তবে কাজ শুরু হয়নি। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বাগেরহাটের রামপালে পরিকল্পিত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগের কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রটি (১৩২০ মেগাওয়াট) আগামী পাঁচ বছরেও চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কয়লাভিত্তিক অন্য কেন্দ্রগুলোর বাস্তবায়নও ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে।
অপরদিকে, আগামী দুই বছরে চালু হওয়ার মতো নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো সবই প্রায় গ্যাসচালিত। এর মধ্যে সরকারি খাতের হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালু হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়। কিন্তু আগামী মাস (ডিসেম্বর-১২) থেকেই কেন্দ্রটির পরীক্ষামূলক উৎপাদনের জন্য গ্যাস লাগবে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ছয় কোটি (৬৪ মিলিয়ন) ঘনফুট।
বেসরকারি খাতে সামিটের ৩৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার মেঘনাঘাট-২ কেন্দ্রটি আগামী বছর আগস্টে চালু হচ্ছে। ওই কেন্দ্রটি দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক (গ্যাস ও ফার্নেস তেল) হলেও এত বড় কেন্দ্র তেলে চালাতে প্রচুর ব্যয় হবে। তাই সেখানে গ্যাসই সরবরাহ করা হবে বলে সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো জানায়। কেন্দ্রটিতে গ্যাস লাগবে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি (৫৫ মিলিয়ন) ঘনফুট।
সামিটের ৩৪১ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিবিয়ানা-২ কেন্দ্রটি চালু হবে ২০১৪ সালের জুনে। এ কেন্দ্রটিতেও দৈনিক প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ঘনফুট গ্যাস লাগবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলের ব্যবহার বাড়ায় গ্যাসের ওপর থেকে চাপ যেটুকু কমেছিল তা আবার বেড়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের পরিকল্পনা ব্যর্থ হচ্ছে।
No comments