ভার্চুয়াল দর্শক by মাহফুজুর রহমান মানিক
আজকের দুনিয়ায় যেখানে যা-ই ঘটুক না কেন তার দর্শক কেবল সেখানকার মানুষ নয়। ইন্টারনেট এবং সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে দুনিয়ার একপ্রান্তের ঘটনাবলি আরেক প্রান্তের মানুষও স্বচক্ষে দেখতে পারেন; তারাই ভার্চুয়াল দর্শক এবং এই ভার্চুয়াল দর্শকের সংখ্যাটা কিন্তু কোথাও কোথাও মূল দর্শকের চেয়েও বেশি।
সাম্প্রতিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের কথা বলা যায়। শিকাগোতে ওবামার বিজয় ভাষণে ঠিক কত দর্শক উপস্থিত ছিলেন। এ বছর তার নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা পাওয়া যায়নি। তবে চার বছর আগে ওবামার বিজয় ভাষণে উপস্থিত দর্শক সংখ্যা সংবাদমাধ্যম হিসাব করেছে দুই লাখ ৪০ হাজার।
ওবামার এবারের বিজয় তাহলে কতসংখ্যক ভার্চুয়াল দর্শক দেখেছে? নিউইয়র্ক টাইমস নিয়েলসেনের সূত্র ধরে তার একটা হিসাব বের করেছে। তারা ঠিক এভাবে রিপোর্টটা শুরু করেছে_ 'মঙ্গলবার রাতে যখন নির্বাচনের ভোট গোনা হচ্ছিল ১২টিরও অধিকসংখ্যক টিভি চ্যানেলে এ দৃশ্য দেখেছে ৬৬ মিলিয়নের (ছয় কোটি ৬০ লাখ) বেশি মানুষ।' সংবাদমাধ্যম এনবিসি, ফক্সনিউজ, এবিসি, সিএনএন, সিবিএস ইত্যাদির মাধ্যমেই প্রধানত লাইভ দেখেছে মানুষ। বারাক ওবামা আমেরিকার সময় রাত ১টা ৪৫ মিনিটে তার বিজয় ভাষণ দিয়েছিলেন। ভাষণের সময় ফক্সনিউজে দর্শক ছিল ২০ লাখ ৭০ হাজার, আর সিএনএনের দর্শকসংখ্যা ৮০ লাখ ২০ হাজার। ওবামা কেবল প্রত্যক্ষ দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখেছেন কিংবা তাদের অভিবাদনের জবাবে হাত নেড়ে স্বাগত জানিয়েছেন। লাখ লাখ ভার্চুয়াল দর্শকের উচ্ছ্বাস তিনি শোনেননি বা দেখেননি; কিন্তু তারা হয়তো ঠিকই প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, অভিবাদন জানিয়েছেন।
ভার্চুয়াল দর্শকদের সীমাবদ্ধতা আসলে এখানেই। তারা ঘটনাস্থলের সবই দেখবেন কিন্তু নিজেরা প্রতিক্রিয়া জানালেও সংশ্লিষ্টরা দেখবে না। এখন অবশ্য আরেক ধরনের ভার্চুয়াল দর্শক দাঁড়িয়ে গেছেন। যারা আসলে দর্শক নন, পাঠক। লাইভ ব্লগিং পড়ে তারা ঘটনাকে দেখেন। তাদের জন্য অবশ্য ভার্চুয়াল দর্শক অভিধাটা মানায় কি-না বোদ্ধারাই ঠিক করবেন। তারা একজন প্রত্যক্ষদর্শী ব্লগারের ব্লগ পড়ে ঘটনা জানেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েও এরকম লাইভ ব্লগিং করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। নিউইয়র্ক টাইমস, আল-জাজিরা, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, ইকোনমিস্ট ইত্যাদির কথা বলতেই হবে। এ দর্শকদের সংখ্যা অবশ্য এখনও সেভাবে হিসাব করে বের করা হয়নি।
দিন যত যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো ঘটনাকে পাঠকের দোরগোড়ায় তৎক্ষণাৎ পেঁৗছে দিতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দুনিয়ার সব আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছে তারা। টিভি চ্যানেলে যেমন তৎক্ষণাৎ দেখা যায়, রেডিওতে শোনা যায়, অনলাইন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ পড়া যায়, তেমনি মুদ্রিত সংবাদপত্রও অনলাইন সংবাদে জোর দিচ্ছে। কার আগে কে সংবাদ পেঁৗছাতে পারবে এ নিয়েই এখন প্রতিযোগিতা। আর এর মূলে রয়েছেন ভার্চুয়াল দর্শক, শ্রোতা কিংবা পাঠক। এখন সবকিছু সহজলভ্য হয়েছে। মানুষ হাজার হাজার মাইল দূরের আমেরিকা কেন, পাশের ফ্ল্যাটে কিছু ঘটলেই ইন্টারনেটে বসে যায় কী ঘটছে জানার জন্য। তারা ঠিকই খবরটা পেয়ে যায়। আমেরিকার নির্বাচনের মতো এ রকম দূরদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে আগে মানুষের কয়েক দিনও লেগে যেত। এখন কয়েক সেকেন্ডও লাগে না। কী হচ্ছে সেটা স্বচক্ষেই দেখছে।
নিউইয়র্ক টাইমস যা দেখিয়েছে ছয় কোটি ৬০ লাখ মানুষ টিভির পর্দায় নির্বাচন দেখেছে। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকে দেখেছে, তবে এর মধ্যে একটা বড় সংখ্যায় আমেরিকানও রয়েছে নিঃসন্দেহে। ভার্চুয়াল দর্শক এ রকম দিন দিনই বাড়ছে, আরও বাড়বে।
mahfuz.manik@gmail.com
ওবামার এবারের বিজয় তাহলে কতসংখ্যক ভার্চুয়াল দর্শক দেখেছে? নিউইয়র্ক টাইমস নিয়েলসেনের সূত্র ধরে তার একটা হিসাব বের করেছে। তারা ঠিক এভাবে রিপোর্টটা শুরু করেছে_ 'মঙ্গলবার রাতে যখন নির্বাচনের ভোট গোনা হচ্ছিল ১২টিরও অধিকসংখ্যক টিভি চ্যানেলে এ দৃশ্য দেখেছে ৬৬ মিলিয়নের (ছয় কোটি ৬০ লাখ) বেশি মানুষ।' সংবাদমাধ্যম এনবিসি, ফক্সনিউজ, এবিসি, সিএনএন, সিবিএস ইত্যাদির মাধ্যমেই প্রধানত লাইভ দেখেছে মানুষ। বারাক ওবামা আমেরিকার সময় রাত ১টা ৪৫ মিনিটে তার বিজয় ভাষণ দিয়েছিলেন। ভাষণের সময় ফক্সনিউজে দর্শক ছিল ২০ লাখ ৭০ হাজার, আর সিএনএনের দর্শকসংখ্যা ৮০ লাখ ২০ হাজার। ওবামা কেবল প্রত্যক্ষ দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখেছেন কিংবা তাদের অভিবাদনের জবাবে হাত নেড়ে স্বাগত জানিয়েছেন। লাখ লাখ ভার্চুয়াল দর্শকের উচ্ছ্বাস তিনি শোনেননি বা দেখেননি; কিন্তু তারা হয়তো ঠিকই প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, অভিবাদন জানিয়েছেন।
ভার্চুয়াল দর্শকদের সীমাবদ্ধতা আসলে এখানেই। তারা ঘটনাস্থলের সবই দেখবেন কিন্তু নিজেরা প্রতিক্রিয়া জানালেও সংশ্লিষ্টরা দেখবে না। এখন অবশ্য আরেক ধরনের ভার্চুয়াল দর্শক দাঁড়িয়ে গেছেন। যারা আসলে দর্শক নন, পাঠক। লাইভ ব্লগিং পড়ে তারা ঘটনাকে দেখেন। তাদের জন্য অবশ্য ভার্চুয়াল দর্শক অভিধাটা মানায় কি-না বোদ্ধারাই ঠিক করবেন। তারা একজন প্রত্যক্ষদর্শী ব্লগারের ব্লগ পড়ে ঘটনা জানেন এবং সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েও এরকম লাইভ ব্লগিং করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। নিউইয়র্ক টাইমস, আল-জাজিরা, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল, ইকোনমিস্ট ইত্যাদির কথা বলতেই হবে। এ দর্শকদের সংখ্যা অবশ্য এখনও সেভাবে হিসাব করে বের করা হয়নি।
দিন যত যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো ঘটনাকে পাঠকের দোরগোড়ায় তৎক্ষণাৎ পেঁৗছে দিতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে দুনিয়ার সব আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছে তারা। টিভি চ্যানেলে যেমন তৎক্ষণাৎ দেখা যায়, রেডিওতে শোনা যায়, অনলাইন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ পড়া যায়, তেমনি মুদ্রিত সংবাদপত্রও অনলাইন সংবাদে জোর দিচ্ছে। কার আগে কে সংবাদ পেঁৗছাতে পারবে এ নিয়েই এখন প্রতিযোগিতা। আর এর মূলে রয়েছেন ভার্চুয়াল দর্শক, শ্রোতা কিংবা পাঠক। এখন সবকিছু সহজলভ্য হয়েছে। মানুষ হাজার হাজার মাইল দূরের আমেরিকা কেন, পাশের ফ্ল্যাটে কিছু ঘটলেই ইন্টারনেটে বসে যায় কী ঘটছে জানার জন্য। তারা ঠিকই খবরটা পেয়ে যায়। আমেরিকার নির্বাচনের মতো এ রকম দূরদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবর পেতে আগে মানুষের কয়েক দিনও লেগে যেত। এখন কয়েক সেকেন্ডও লাগে না। কী হচ্ছে সেটা স্বচক্ষেই দেখছে।
নিউইয়র্ক টাইমস যা দেখিয়েছে ছয় কোটি ৬০ লাখ মানুষ টিভির পর্দায় নির্বাচন দেখেছে। দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকে দেখেছে, তবে এর মধ্যে একটা বড় সংখ্যায় আমেরিকানও রয়েছে নিঃসন্দেহে। ভার্চুয়াল দর্শক এ রকম দিন দিনই বাড়ছে, আরও বাড়বে।
mahfuz.manik@gmail.com
No comments