পাইরেটস অব দ্য সুন্দরবন by রানা আব্বাস
ভাগ্যিস, গোর ভারবিন্সকি-রব মার্শালদের পৃথিবীর বৃহৎ শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনে পা পড়েনি। যারা একটু-আধটু হলিউডের চলচ্চিত্রের খোঁজখবর রাখেন তারা নিশ্চয় এ দুই ভদ্রলোককে চিনতে পেরেছেন। ঠিকই ধরেছেন, এ দু'জনই হলিউডের বিখ্যাত ফ্যান্টাসি অ্যাডভেঞ্চার ধাঁচের সিরিজ চলচ্চিত্র 'পাইরেটস অব দ্য ক্যারাবিয়ানে'র পরিচালক।
নিশ্চয় জানেন, এ পর্যন্ত নির্মিত চার পর্বের এ চলচ্চিত্রটির প্রথম তিনটি পর্ব পরিচালনা করেছেন ভারবিন্সকি এবং মার্শাল পরিচালনা করেছেন চতুর্থ পর্বটি।
যা হোক, যে কথা হচ্ছিল। এ দু'জন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক যদি বঙ্গদেশের সুন্দরবন সম্পর্কে একটু খোঁজখবর করতেন, তাহলে নিশ্চিত নতুন আর একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের রসদ তারা খুঁজে পেতেন এবং সে চলচ্চিত্রের নাম হতো 'পাইরেটস অব দ্য সুন্দরবন'! বিষয়টি মোটেও কৌতুককর নয়। সম্প্রতি সুন্দরবনে বনদস্যুতা যে হারে বেড়েছে তাতে এহেন ভাবনার উদ্রেক হওয়াটা একেবারেই অমূলক নয়।
চলচ্চিত্র ছেড়ে এবার বাস্তবের জমিনে আসা যাক। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন নিয়ে আমাদের যেমন গর্ব, তেমনি নানা শঙ্কা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে এ বনের অপরিমেয় ক্ষতি হয়ে যাবে_ এমনটাই আশঙ্কা বিজ্ঞানী-গবেষকদের। মোদ্দা কথা, সুন্দরবনের প্রতিবেশ-পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েই আমাদের যত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কিন্তু সুন্দরবনের বনদস্যু সমস্যাটি আমাদের কাছে সে তুলনায় কমই গুরুত্ব পেয়ে থাকে।
পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী, সুন্দরবন এবং এর আশপাশের উপকূলীয় এলাকা বর্তমানে জলদস্যু ও বনদস্যুদের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের হাতে রয়েছে রাইফেল, স্টেনগান, নাইন এমএম পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের দেড় শতাধিক অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। সুন্দরবনকেন্দ্রিক এসব সশস্ত্র বাহিনীর হাতে প্রায়ই পর্যটক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হামলার শিকার হচ্ছেন। দস্যুদের হাতে গোটা সুন্দরবন এলাকায় চাঁদাবাজি, জেলে অপহরণ, ট্রলার ছিনতাই, মুক্তিপণ আদায়, লুটপাট, বাঘ-হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার যেন নিত্যদিনের ঘটনা। দুর্ধর্ষ এসব জলদস্যু ও বনদস্যুদের অপতৎপরতার কারণে সুন্দরবনের ঐতিহ্য, পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে।
শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বনদস্যুরা অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করে সুন্দরবনে দস্যুতা চালাচ্ছে। কেউ কেউ অর্থের লোভে বনদস্যুদের সঙ্গে আঁতাত করছে বলে সংবাদপত্রে খবর চাউর হতে দেখা গেছে।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন রক্ষায় প্রতি ২৮ বর্গকিলোমিটারে একজন নিরাপত্তা প্রহরী দায়িত্ব পালন করছেন। এ বনরক্ষীদের নেই আধুনিক সরঞ্জামাদি। থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল দিয়ে তাদের মোকাবেলা করতে হয় অত্যাধুনিক অস্ত্রধারী দস্যুদের। এছাড়া বনরক্ষীদের নেই তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা। দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা বন অভ্যন্তরে প্রবেশ করে উজাড় করে দিচ্ছে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। অবাধে শিকার করছে বন্যপ্রাণী। প্রতিনিয়ত লুট করছে কোটি টাকার প্রাকৃতিক সম্পদ।
সুন্দরবনকে বাঁচাতে অচিরেই বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বনরক্ষীদের সংখ্যা ও আধুনিক সরঞ্জাম। সুন্দরবনের জন্য তৈরি করা প্রয়োজন পৃথক একটি সশস্ত্র বাহিনী। সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে বনদস্যুতার মতো গুরুতর এ সমস্যাটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
rana_geographer@yahoo.com
যা হোক, যে কথা হচ্ছিল। এ দু'জন বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক যদি বঙ্গদেশের সুন্দরবন সম্পর্কে একটু খোঁজখবর করতেন, তাহলে নিশ্চিত নতুন আর একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের রসদ তারা খুঁজে পেতেন এবং সে চলচ্চিত্রের নাম হতো 'পাইরেটস অব দ্য সুন্দরবন'! বিষয়টি মোটেও কৌতুককর নয়। সম্প্রতি সুন্দরবনে বনদস্যুতা যে হারে বেড়েছে তাতে এহেন ভাবনার উদ্রেক হওয়াটা একেবারেই অমূলক নয়।
চলচ্চিত্র ছেড়ে এবার বাস্তবের জমিনে আসা যাক। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন নিয়ে আমাদের যেমন গর্ব, তেমনি নানা শঙ্কা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে এ বনের অপরিমেয় ক্ষতি হয়ে যাবে_ এমনটাই আশঙ্কা বিজ্ঞানী-গবেষকদের। মোদ্দা কথা, সুন্দরবনের প্রতিবেশ-পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়েই আমাদের যত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। কিন্তু সুন্দরবনের বনদস্যু সমস্যাটি আমাদের কাছে সে তুলনায় কমই গুরুত্ব পেয়ে থাকে।
পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী, সুন্দরবন এবং এর আশপাশের উপকূলীয় এলাকা বর্তমানে জলদস্যু ও বনদস্যুদের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের হাতে রয়েছে রাইফেল, স্টেনগান, নাইন এমএম পিস্তলসহ বিভিন্ন ধরনের দেড় শতাধিক অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। সুন্দরবনকেন্দ্রিক এসব সশস্ত্র বাহিনীর হাতে প্রায়ই পর্যটক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হামলার শিকার হচ্ছেন। দস্যুদের হাতে গোটা সুন্দরবন এলাকায় চাঁদাবাজি, জেলে অপহরণ, ট্রলার ছিনতাই, মুক্তিপণ আদায়, লুটপাট, বাঘ-হরিণসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার যেন নিত্যদিনের ঘটনা। দুর্ধর্ষ এসব জলদস্যু ও বনদস্যুদের অপতৎপরতার কারণে সুন্দরবনের ঐতিহ্য, পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেদের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে।
শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বনদস্যুরা অত্যাধুনিক অস্ত্র সংগ্রহ করে সুন্দরবনে দস্যুতা চালাচ্ছে। কেউ কেউ অর্থের লোভে বনদস্যুদের সঙ্গে আঁতাত করছে বলে সংবাদপত্রে খবর চাউর হতে দেখা গেছে।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন রক্ষায় প্রতি ২৮ বর্গকিলোমিটারে একজন নিরাপত্তা প্রহরী দায়িত্ব পালন করছেন। এ বনরক্ষীদের নেই আধুনিক সরঞ্জামাদি। থ্রি-নট-থ্রি রাইফেল দিয়ে তাদের মোকাবেলা করতে হয় অত্যাধুনিক অস্ত্রধারী দস্যুদের। এছাড়া বনরক্ষীদের নেই তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা। দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থার সুযোগে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা বন অভ্যন্তরে প্রবেশ করে উজাড় করে দিচ্ছে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। অবাধে শিকার করছে বন্যপ্রাণী। প্রতিনিয়ত লুট করছে কোটি টাকার প্রাকৃতিক সম্পদ।
সুন্দরবনকে বাঁচাতে অচিরেই বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বনরক্ষীদের সংখ্যা ও আধুনিক সরঞ্জাম। সুন্দরবনের জন্য তৈরি করা প্রয়োজন পৃথক একটি সশস্ত্র বাহিনী। সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে বনদস্যুতার মতো গুরুতর এ সমস্যাটিকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
rana_geographer@yahoo.com
No comments