ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন গণমাধ্যমের জন্য সুখবর by ড. মুহাম্মদ আশকার ইবনে শাইখ
প্রবাসে বসে বাংলাদেশ থেকে একটি সুখবর পেলাম। অনেক দিনের কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির সুরাহা করে বর্তমান মহাজোট সরকার পুনর্বার প্রমাণ দিতে সক্ষম হয়েছে, তারা গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের ব্যাপারে উদার এবং শ্রদ্ধাশীল। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ জাতীয় সংসদে বহুল প্রত্যাশিত ফৌজদারি কার্যবিধি (সংশোধন) বিল পাস হয়েছে।
একই সঙ্গে রহিত হয়েছে মানহানিকর কোনো সংবাদ প্রকাশের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাংবাদিকসহ গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে সরাসরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিধান। সংশোধনীর ফলে আদালত অভিযুক্তদের সমন জারি করে তলব করতে পারবেন। বইয়ের লেখক-প্রকাশকদের ক্ষেত্রেও এই বিধান প্রযোজ্য। গৃহীত সিদ্ধান্তটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের অর্জন। মতপ্রকাশের ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে যে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে, এই মহাজোট সরকারের শাসনামলে তা শুধু গণতন্ত্রের ভিতকেই শক্তিশালী করবে না, সমাজকেও কলুষমুক্ত করতে ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলেই বিশ্বাস করি। যে সমাজে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিদ্যমান, গণমাধ্যম মুক্ত, সে সমাজই আলোকিত।
যে বিধানটি সংশোধিত হলো, তা অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত ছিল। কোনো কোনো সময় বিধানটির অপব্যবহার হয়েছে। অন্যদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হয়েছেন_এমন নজিরও আছে। নতুন বিধানের ফলে অভিযুক্তরা আইনি পন্থায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন এবং অযথা হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পাবেন। গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন, বস্তুনিষ্ঠ নয় এমন তথ্য বা বক্তব্য উপস্থাপনের ফলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হলে, মর্যাদার হানি ঘটলে অবশ্যই এর আইনি প্রতিকার দরকার। হলুদ সাংবাদিকতা বলে একটি কথা আছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুসংখ্যক সাংবাদিক তা করেন না এমনটি বলা যাবে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে কিন্তু অনিচ্ছাকৃতভাবেও তথ্যবিভ্রাট ঘটে যায়। স্বাধীনতার নামে কেউ যাতে স্বেচ্ছাচারিতা চালাতে না পারেন, এটি নিশ্চিত করাই জরুরি। ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের ফলে সবার দায়দায়িত্ব আরো অনেক অনেক বেড়ে গেল। আমরা বিশ্বাস করি, সত্য-ন্যায়-সুনীতি-সুন্দরের যুদ্ধে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সবাই এক কাতারে দাঁড়াবেন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ দুটোই মানুষের মৌলিক অধিকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ও বটে। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে এ ব্যাপারে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। তবে এ কথাও সত্য, কোনো স্বাধীনতা বা অধিকারই অবারিত নয়, আইনের ঊধর্ে্বও নয়। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা-দায়বদ্ধতা যে সমাজে যত বেশি পুষ্ট, সে সমাজই তত বেশি আলোকিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রক্তস্নাত বাংলাদেশে এর সব কটিরই ব্যত্যয় ঘটেছে কখনো কখনো। এর জন্য মাশুলও কম গুনতে হয়নি। সময় বদলেছে, অনেক কিছু এগিয়ে চলেছে, তাই আমাদের প্রত্যাশার বিষয়টিও সংগত কারণেই অধিকতর বলিষ্ঠ থেকে বলিষ্ঠতর হচ্ছে। গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা সম্পর্কেও সংশ্লিষ্ট সবার সজাগ থাকা চাই। একের স্বাধীনতা অন্যের যাতে বিড়ম্বনা-বিপদের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকা চাই। এ বিষয়গুলো দায়িত্বশীলরা মনে রেখে চললেই বিপত্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকবে না।
ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের ফলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিধি আরো বিস্তৃত হলো। দ্রুত বিকাশমান গণমাধ্যমের জন্য এটি একটি সুবার্তা, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জও বটে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য গণমাধ্যমের স্বীকৃত নিয়মনীতি মেনে চলা অত্যাবশ্যক। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাউকে যাতে খাটো করা না হয়, মর্যাদার হানি ঘটানো না হয়, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার দায়-দায়িত্ব রয়েছে। সরকার সরকারের কাজ করেছে, আমাদেরও করতে হবে আমাদের কাজ। আমাদের কাঙ্ক্ষিত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রয়াসটাই জরুরি। বাংলাদেশে যেভাবে গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটেছে এবং ঘটছে তা দেশ-জাতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক। এর সুফল যাতে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠী পায়, তা নিশ্চিত করাও একটা চ্যালেঞ্জ।
লেখক : লন্ডনপ্রবাসী গণমাধ্যম গবেষক
যে বিধানটি সংশোধিত হলো, তা অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত ছিল। কোনো কোনো সময় বিধানটির অপব্যবহার হয়েছে। অন্যদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা হয়রানির শিকার হয়েছেন_এমন নজিরও আছে। নতুন বিধানের ফলে অভিযুক্তরা আইনি পন্থায় আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন এবং অযথা হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পাবেন। গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন, বস্তুনিষ্ঠ নয় এমন তথ্য বা বক্তব্য উপস্থাপনের ফলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হলে, মর্যাদার হানি ঘটলে অবশ্যই এর আইনি প্রতিকার দরকার। হলুদ সাংবাদিকতা বলে একটি কথা আছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুসংখ্যক সাংবাদিক তা করেন না এমনটি বলা যাবে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে কিন্তু অনিচ্ছাকৃতভাবেও তথ্যবিভ্রাট ঘটে যায়। স্বাধীনতার নামে কেউ যাতে স্বেচ্ছাচারিতা চালাতে না পারেন, এটি নিশ্চিত করাই জরুরি। ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের ফলে সবার দায়দায়িত্ব আরো অনেক অনেক বেড়ে গেল। আমরা বিশ্বাস করি, সত্য-ন্যায়-সুনীতি-সুন্দরের যুদ্ধে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সবাই এক কাতারে দাঁড়াবেন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ দুটোই মানুষের মৌলিক অধিকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ও বটে। সংবিধানের তৃতীয় ভাগের ৩৯ নম্বর অনুচ্ছেদে এ ব্যাপারে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। তবে এ কথাও সত্য, কোনো স্বাধীনতা বা অধিকারই অবারিত নয়, আইনের ঊধর্ে্বও নয়। স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা-দায়বদ্ধতা যে সমাজে যত বেশি পুষ্ট, সে সমাজই তত বেশি আলোকিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রক্তস্নাত বাংলাদেশে এর সব কটিরই ব্যত্যয় ঘটেছে কখনো কখনো। এর জন্য মাশুলও কম গুনতে হয়নি। সময় বদলেছে, অনেক কিছু এগিয়ে চলেছে, তাই আমাদের প্রত্যাশার বিষয়টিও সংগত কারণেই অধিকতর বলিষ্ঠ থেকে বলিষ্ঠতর হচ্ছে। গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা সম্পর্কেও সংশ্লিষ্ট সবার সজাগ থাকা চাই। একের স্বাধীনতা অন্যের যাতে বিড়ম্বনা-বিপদের কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকা চাই। এ বিষয়গুলো দায়িত্বশীলরা মনে রেখে চললেই বিপত্তি ঘটার সম্ভাবনা থাকবে না।
ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের ফলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পরিধি আরো বিস্তৃত হলো। দ্রুত বিকাশমান গণমাধ্যমের জন্য এটি একটি সুবার্তা, অন্যদিকে চ্যালেঞ্জও বটে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য গণমাধ্যমের স্বীকৃত নিয়মনীতি মেনে চলা অত্যাবশ্যক। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাউকে যাতে খাটো করা না হয়, মর্যাদার হানি ঘটানো না হয়, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার দায়-দায়িত্ব রয়েছে। সরকার সরকারের কাজ করেছে, আমাদেরও করতে হবে আমাদের কাজ। আমাদের কাঙ্ক্ষিত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সম্মিলিত প্রয়াসটাই জরুরি। বাংলাদেশে যেভাবে গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটেছে এবং ঘটছে তা দেশ-জাতির জন্য একটি ইতিবাচক দিক। এর সুফল যাতে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠী পায়, তা নিশ্চিত করাও একটা চ্যালেঞ্জ।
লেখক : লন্ডনপ্রবাসী গণমাধ্যম গবেষক
No comments