জরুরি সেবা কার্যক্রমগুলোর আরও সক্ষম হওয়া উচিত-শেরেবাংলা নগর টেলিফোন এক্সচেঞ্জ

আগুন লেগেছে ১০ দিন হলো, কিন্তু এখনো সচল হয়নি সব সংযোগ। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এক্সচেঞ্জের আওতাধীন ৮০ হাজার সংযোগের মধ্যে আট-নয় হাজার সংযোগ চালু করতে আরও কয়েক দিন লাগার কথা বলেছে কর্তৃপক্ষ। কেবল শান্তিতে নয়, দুর্ঘটনা বা অসুবিধাজনক পরিস্থিতি তা কতটা মোকাবিলা করে কার্যকর থাকতে পারে,


তা-ই যেকোনো সেবা কার্যক্রমের দক্ষতার শর্ত হওয়া উচিত। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের অধীন টেলিফোন নেটওয়ার্ক-ব্যবস্থা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কতটা সক্ষম, শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এক্সচেঞ্জটি তার একটা উদাহরণ হয়ে থাকল।
প্রথমত, টেলিফোনসেবার মতো অতিপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থাকে যাবতীয় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো করে গড়ে তোলা দরকার। শেরেবাংলার এই এক্সচেঞ্জে আগুন লাগার মতো পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি হয়েছিল এবং তা এড়ানো সম্ভব ছিল কি না, সে বিষয়ে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তদন্ত হওয়া উচিত। দুটি কারণে এই তদন্ত হওয়া উচিত—প্রথমত, নিরাপত্তাব্যবস্থা কতটা দুর্ঘটনাসহ তার পর্যালোচনার জন্য এবং দ্বিতীয়ত, এ ধরনের আকস্মিক পরিস্থিতিতে যা করণীয় তা ঠিকভাবে করা হয়েছিল কি না, তা যাচাইয়ের জন্য। এখান থেকে সমগ্র টেলিকমিউনিকেশনস ব্যবস্থাই প্রয়োজনীয় শিক্ষা নিতে পারবে। পাশাপাশি দুর্ঘটনার কারণ যদি পরিচালনাকারীদের গাফিলতি হয়, সেটাও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর কারিগরি দুর্বলতা হয়ে থাকলে সে ব্যাপারেও পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাত-দিন কাজ করেও সব সংযোগ চালু করা যায়নি। কেবল একটি এক্সচেঞ্জের দুর্ঘটনা মোকাবিলাতেই যদি এত হিমশিম খেতে হয়, তাহলে আরও গুরুতর দুর্ঘটনা, নাশকতা বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সামনে তাঁরা কী করবেন?
সাধারণভাবে বাংলাদেশের সেবা অবকাঠামো নাজুক। আধুনিক সময়ে মানুষের সামর্থ্য ও ঝুঁকি উভয়ই বেড়েছে। প্রাকৃতিক ও মানুষের তৈরি কারণে হরহামেশাই বিপর্যয়ের আশঙ্কা নিয়ে চলতে হয় একবিংশ শতকের মানুষকে। এই পটভূমিতে স্পর্শকাতর ও জরুরি সেবা সুবিধাগুলোর ব্যাপারে আরও যত্নবান ও দক্ষ হয়ে ওঠার প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না।

No comments

Powered by Blogger.