পবিত্র কোরআনের আলো-নিজের বিবেককে জাগ্রত করার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করা
২৯. ক্বুল ইন তুখফূ মা- ফী সুদূরিকুম আও তুবদূহু ইয়া'লামহুল্লাহু; ওয়া ইয়া'লামু মা- ফিচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়া মা-ফিলআরদ্বি; ওয়াল্লাহু আ'লা কুলি্ল শাইয়িন ক্বাদীর। ৩০. ইয়াওমা তাজিদু কুল্লু নাফছিম্ মা-আ'মিলাত মিন খাইরিম্ মুহ্দ্বারাওঁয়ামা- আ'মিলাত মিন ছূইন; তাওয়াদ্দু লাও আন্না বাইনাহা- ওয়াবাইনাহূ আমাদাম্ বায়ী'দা-; ওয়া ইউহায্যিরুকুমুল্ল-হু নাফছাহূ ওয়াল্লাহু রাঊফুম্ বিলই'বা-দ। [হুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ২৯-৩০]
অনুবাদ : ২৯. (হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা তোমাদের মনের ভেতর যা কিছু গোপন করে রাখো, অথবা তা জনসমক্ষে প্রকাশ করে দাও আল্লাহ তা অবগত আছেন। এই আকাশমণ্ডল ও এই পৃথিবী এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে, সব কিছুই তিনি জানেন। আল্লাহ তায়ালা সব কিছুর ওপর চূড়ান্তভাবে ক্ষমতাবান।
৩০. যেদিন প্রত্যেকেই তার ভালো কাজ সামনে হাজির দেখতে পাবে, আর যে ব্যক্তির কৃতকর্ম খারাপ থাকবে সে সেদিন কামনা করতে থাকবে তার সেই খারাপ কাজ এবং তার মধ্যে যদি বিস্তর দূরত্ব থাকত, অর্থাৎ সেই কাজের দায়দায়িত্ব তাকে নিতে না হতো। আল্লাহ তায়ালা তো তোমাদের (যারা দায়িত্বনিষ্ঠ নও) তাঁর ক্ষমতা ও শক্তির ব্যাপারে ভয় দেখাচ্ছেন মাত্র, আসলে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে অত্যন্ত অনুগ্রহশীল।
ব্যাখ্যা : এই আয়াত দুটির মাধ্যমে মানুষের বিবেককে জাগরিত করার সূত্র দেওয়া হয়েছে। মানুষ তার বিবেককে জাগরিত করতে পারবে তখন, যখন সে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী হবে যে আল্লাহ তায়ালা সর্বক্ষণ সর্বাবস্থায় তাকে দেখতে পাচ্ছেন। তার মনের ভেতর যা সে গোপন করে রাখছে, অর্থাৎ মানুষকে জানতে দিচ্ছে না বা মনের একান্ত গহিনে পোষণ করছে এবং যা কিছু জনসমক্ষে প্রকাশ করছে, সব কিছুই আল্লাহ জানেন। অর্থাৎ আল্লাহ অন্তর্যামী; তিনি মানুষের অন্তরের খবর রাখেন, বাইরের খবরও রাখেন। তিনি বিশ্ব জাহানের সব কিছু সর্ব মুহূর্তে জানেন এবং সব কিছু তাঁর নিয়ন্ত্রণের ভেতরে। এই বিশ্বাস অন্তরে জাগরিত থাকলে মানুষ সব সময় দায়িত্বনিষ্ঠ থাকবে। এটাই বিবেকের কাছে জবাবদিহিতা এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা। মানুষ যদি নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে না শেখে, তবে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবে এমন সম্ভাবনা খুবই কম। আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হলে নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে আগে। নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহিতা হলো আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার মূল সূত্র। এই আয়াতে আল্লাহ অন্তর্যামী ও সর্বময় নিয়ন্তা হিসেবে পরিচয় প্রকাশ করে মানুষকে বিবেকের প্রতি জবাবদিহিতার দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
৩০ নম্বর আয়াতে কাল হাশর বা শেষ বিচার দিনের চিত্র হাজির করা হয়েছে। সেদিন মানুষ তার ভালো কাজগুলো দেখতে পাবে, অনুরূপভাবে মন্দ কাজগুলোও দেখতে পাবে। কিন্তু মন্দ কাজগুলো দেখে তার খুব আফসোস হবে। তার মনে আকাঙ্ক্ষা হবে এই কাজগুলো যদি তার থেকে হাজার মাইল দূরে থাকত। অর্থাৎ এই কাজগুলো যদি তার সামনে না আসত, তবে কতই না ভালো হতো! এই মন্দ কাজগুলোর দায়িত্ব নিতে তার মন চাইবে না। কিন্তু তখন তার আর কিছু করার থাকবে না। আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতের মাধ্যমে সেই দিনটির কথা এভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল, তাই তিনি চান তাঁর বান্দারা শেষ বিচারের দিন এমন অবস্থার মুখোমুখি না হোক। এ কারণেই তিনি সেই দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাদের সাবধান করছেন। বান্দাকে ভয় দেখানো আল্লাহর উদ্দেশ্য নয়, আসল উদ্দেশ্য সতর্ক করার মাধ্যমে অনুগ্রহ দান করা।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৩০. যেদিন প্রত্যেকেই তার ভালো কাজ সামনে হাজির দেখতে পাবে, আর যে ব্যক্তির কৃতকর্ম খারাপ থাকবে সে সেদিন কামনা করতে থাকবে তার সেই খারাপ কাজ এবং তার মধ্যে যদি বিস্তর দূরত্ব থাকত, অর্থাৎ সেই কাজের দায়দায়িত্ব তাকে নিতে না হতো। আল্লাহ তায়ালা তো তোমাদের (যারা দায়িত্বনিষ্ঠ নও) তাঁর ক্ষমতা ও শক্তির ব্যাপারে ভয় দেখাচ্ছেন মাত্র, আসলে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে অত্যন্ত অনুগ্রহশীল।
ব্যাখ্যা : এই আয়াত দুটির মাধ্যমে মানুষের বিবেককে জাগরিত করার সূত্র দেওয়া হয়েছে। মানুষ তার বিবেককে জাগরিত করতে পারবে তখন, যখন সে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী হবে যে আল্লাহ তায়ালা সর্বক্ষণ সর্বাবস্থায় তাকে দেখতে পাচ্ছেন। তার মনের ভেতর যা সে গোপন করে রাখছে, অর্থাৎ মানুষকে জানতে দিচ্ছে না বা মনের একান্ত গহিনে পোষণ করছে এবং যা কিছু জনসমক্ষে প্রকাশ করছে, সব কিছুই আল্লাহ জানেন। অর্থাৎ আল্লাহ অন্তর্যামী; তিনি মানুষের অন্তরের খবর রাখেন, বাইরের খবরও রাখেন। তিনি বিশ্ব জাহানের সব কিছু সর্ব মুহূর্তে জানেন এবং সব কিছু তাঁর নিয়ন্ত্রণের ভেতরে। এই বিশ্বাস অন্তরে জাগরিত থাকলে মানুষ সব সময় দায়িত্বনিষ্ঠ থাকবে। এটাই বিবেকের কাছে জবাবদিহিতা এবং আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা। মানুষ যদি নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে না শেখে, তবে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করবে এমন সম্ভাবনা খুবই কম। আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হলে নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে আগে। নিজের বিবেকের কাছে জবাবদিহিতা হলো আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার মূল সূত্র। এই আয়াতে আল্লাহ অন্তর্যামী ও সর্বময় নিয়ন্তা হিসেবে পরিচয় প্রকাশ করে মানুষকে বিবেকের প্রতি জবাবদিহিতার দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
৩০ নম্বর আয়াতে কাল হাশর বা শেষ বিচার দিনের চিত্র হাজির করা হয়েছে। সেদিন মানুষ তার ভালো কাজগুলো দেখতে পাবে, অনুরূপভাবে মন্দ কাজগুলোও দেখতে পাবে। কিন্তু মন্দ কাজগুলো দেখে তার খুব আফসোস হবে। তার মনে আকাঙ্ক্ষা হবে এই কাজগুলো যদি তার থেকে হাজার মাইল দূরে থাকত। অর্থাৎ এই কাজগুলো যদি তার সামনে না আসত, তবে কতই না ভালো হতো! এই মন্দ কাজগুলোর দায়িত্ব নিতে তার মন চাইবে না। কিন্তু তখন তার আর কিছু করার থাকবে না। আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতের মাধ্যমে সেই দিনটির কথা এভাবে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত অনুগ্রহশীল, তাই তিনি চান তাঁর বান্দারা শেষ বিচারের দিন এমন অবস্থার মুখোমুখি না হোক। এ কারণেই তিনি সেই দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তাদের সাবধান করছেন। বান্দাকে ভয় দেখানো আল্লাহর উদ্দেশ্য নয়, আসল উদ্দেশ্য সতর্ক করার মাধ্যমে অনুগ্রহ দান করা।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments