কুইক রেন্টাল-বিদ্যুতের কৃত্রিম সংকটে বাংলাদেশ by নাসরিন সিরাজ
গত ২২ জুন একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার আয়োজনে অনুষ্ঠিত আলোচনা থেকে জানলাম, ২০০৯ সালে আমাদের বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল ৭০০ থেকে ৯০০ মেগাওয়াট। বেসরকারি হিসাবে ঘাটতি ছিল দুই হাজার মেগাওয়াটের মতো। তখন পুরোনো পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো মেরামত করলেই এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো যেত।
কিন্তু সেই সাশ্রয়ী ও যুক্তিসংগত পথে না গিয়ে দেশে গ্যাস ও অর্থ নেই—এই প্রচার চালিয়ে তখন তেলচালিত ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল/কুইক রেন্টাল) বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যক্তিমালিকানায় বসানো হলো। ২০১২ সালে এসে দেখা যাচ্ছে, এই রেন্টাল/কুইক রেন্টাল প্ল্যান্টগুলোর সর্বোচ্চ উৎপাদনক্ষমতা সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট, আমরা এই সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াটের জন্যই তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা ভাড়া দিচ্ছি, বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ব্যবহূত তেলের দামে ভর্তুকি দিচ্ছি কিন্তু কার্যত তারা গড়ে উৎপাদন করছে মাত্র এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। আলোচনার সারাংশ হলো: আসলে রেন্টাল/কুইক রেন্টালের পথে আমাদের যাওয়ার কোনো প্রয়োজনই ছিল না। ইতিমধ্যে সরকারও স্বীকার করেছে যে রেন্টাল/কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বাবদ টাকা খরচ করতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি হয়ে গেছে আর তাই তারা পুরোনো ১৫টি প্ল্যান্টের ২৬টি ইউনিট মেরামত করার সিদ্ধান্তে এসেছে।
এদিকে বাস্তবতা হলো, বিদ্যুতের দাম দ্রুততর গতিতে বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তাই আমাদের খাওয়া, পরা, বাসা ভাড়া দেওয়া, বাচ্চাদের শিক্ষা ও অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কষ্ট হচ্ছে। সামনে বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে বলে পত্রিকা মারফত সরকার আমাদের জানিয়ে দিয়েছে। তার মানে হলো, আমাদের সামনে আরও খারাপ সময় আসছে। এখন প্রশ্ন হলো, সরকারের এই অপরিণামদর্শী কার্যকলাপের জন্য আমরা সাধারণ মানুষ কেন খেসারত দেব? সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি হচ্ছে, আমাদের ওপর করের বোঝা বাড়ছে আর সরকার ইনডেমনিটি আইন পাস করেছে যে আমরা রেন্টাল/কুইক রেন্টালের বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারব না। এ কেমন কথা?
গণতন্ত্রের মানে হচ্ছে, দেশের আসল সরকার আসলে আমরা সবাই। এখানে সরকার গণতন্ত্র নিশ্চিত করে না। দেশ পরিচালনা করতে আমরা যাঁদের চেয়ারে বসিয়েছি, তাঁদের পরিচালনার দায়িত্ব আসলে আমাদেরই। শুধু পাঁচ বছর পর ভোট দিয়ে চেয়ারের লোক বদল আমাদের কাজ নয়, পাঁচটি বছর চেয়ারে বসে যেন আমাদের সেবার কাজটি সরকার ঠিকঠাকভাবে করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ। অথচ, রেন্টাল/কুইক রেন্টাল নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বিবেচনা করার কথা বলেছেন একজন প্রতিমন্ত্রী। ভয় দেখিয়ে জনগণের মুখ বন্ধ করা, এ তো গণতন্ত্রবিরোধী, তাই না?
গত ২৫ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শোতে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী আনিসুল হক। তিনি তাঁর নিজস্ব গবেষণার সূত্রে দাবি করেছেন যে ‘রেন্টাল/কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপন্ন না হলে দেশে প্রতিদিন ১০ রিখটার স্কেলে অর্থনৈতিক ভূমিকম্প হতো।’ টক শোতে তাঁকে বলতে শুনলাম, গবেষণার তথ্য হিসেবে তিনি নাকি পুরোপুরি ‘বিদেশি’ তথ্য ব্যবহার করেছেন। আর গবেষণা করেছেন একজন ‘বাংলাদেশি ব্যবসায়ী’ হিসেবে। পরে কথায় কথায় বের হলো আসলে তিনি ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো আর পিডিবির বার্ষিক রিপোর্টের তথ্য। গবেষণায় ‘দেশি তথ্য’ ব্যবহার কোনো সমস্যা নয়। আর গবেষণার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশি ব্যবসায়ী’ অবস্থানটাও বাড়তি কিছু যুক্ত করে না। কারণ, একজন ব্যবসায়ী বাংলাদেশি হলে তিনি সরকারকে ছাড় দেবেন বিষয়টি তা নয়। আর তিনি যে গবেষণা করেছেন তাঁর মূল অনুমানগুলোতে সমস্যা রয়েছে। যেমন, রেন্টাল/কুইক রেন্টালে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে সেখানে তথ্যগত বিভ্রান্তি রয়েছে। এর প্রমাণ পেতে যে কেউ পিডিবির ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রতিদিন কোন প্ল্যান্ট কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, সেটা দেখতে পারেন। ৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে এমন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে এপ্রিল-জুনের বেশির ভাগ দিনই বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল শূন্য।
সবাই একবাক্যে স্বীকার করি যে আমাদের বিদ্যুৎ দরকার আর সবাই প্রশ্ন করি কীভাবে আমরা বিদ্যুৎ পাব। বিদ্যুৎসংকট বিষয়ে টক শো সরাসরি সম্প্রচার হলে সাধারণ দর্শকদের যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তাতেও স্পষ্ট হয় যে লোকজন ‘বিশেষজ্ঞদের’ বক্তব্য শোনার চেয়ে ত্বরিতগতিতে বিদ্যুৎসংকটের সমাধান চায়। গত ২৫ জুন সেই টক শোতেও দেখলাম এক দর্শক খুদে বার্তায় পরামর্শ পাঠিয়েছে, দেশে পারমাণবিক প্রকল্প বসানো দরকার তাতে নিরাপদে আমরা বিদ্যুৎ পাব (অথচ, গত বছরই জাপানে ভূমিকম্পের পর ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর বিশ্বের প্রথম সারির অনেক দেশ পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।) অনেকের কাছে মনে হয় আনু মুহাম্মদই দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় বাধা, কারণ তিনি ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পবিরোধীদের নেতা। রাগ করে অনেকেই বলেন, ‘মাটির নিচে কয়লা রেখে আমাদের কী হবে।’ এভাবে আমরা ঘুরপাক খেতে থাকি কিন্তু বহুজাতিক তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমাদের যে উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) আছে, সেগুলোতে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থই যে স্বীকৃতি পায়, সেটা আমরা দেখি না।
এসব প্রশ্ন আমরা এড়িয়ে যাই। অথচ এসব প্রশ্নের সঙ্গেই আমাদের বিদ্যুতের সংকট ও সমাধানের সরাসরি সম্পর্ক আছে। এসব প্রশ্ন করা দরকার কারণ, বাংলাদেশের বিদ্যুতের সংকটকে পুঁজি করে এ দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, ঠকানো হচ্ছে। ‘জাতীয় কমিটি’ বা ‘তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’ ১৯৯৫ সাল থেকে এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক করছে। তাদের আমরা পাত্তা না দিয়ে থাকতে পারতাম কিন্তু দেখছি তারা যে পরিণামের আশঙ্কা প্রকাশ করছে (যেমন: রেন্টাল/কুইক রেন্টালের অপ্রয়োজনীয়তা) সে ধরনের ঘটনাই ঘটছে। বাস্তবে আমরা দেখছি বিদ্যুতের দাম বাড়ছে অথচ ‘জাতীয় কমিটি’ দাবি করেছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ দুই টাকায় উৎপাদন করা যেত। ‘কার কথা আমরা বিশ্বাস করব? জাতীয় কমিটির না সরকারের?’ এ রকম বিভ্রান্তি আমাদের অনেকেরই। যেন আমরা ভুলে গেছি যে আমাদের নিজেদের ঘাড়ের ওপরেই আছে একটি মাথা। পত্রপত্রিকা, গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য আর দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা আমাদের বিভ্রান্তি দূর করতে পারি।
নাসরিন সিরাজ: নৃবিজ্ঞানী ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা।
nasrinsiraj@yahoo.com
এদিকে বাস্তবতা হলো, বিদ্যুতের দাম দ্রুততর গতিতে বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। তাই আমাদের খাওয়া, পরা, বাসা ভাড়া দেওয়া, বাচ্চাদের শিক্ষা ও অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কষ্ট হচ্ছে। সামনে বিদ্যুতের দাম আরও বাড়বে বলে পত্রিকা মারফত সরকার আমাদের জানিয়ে দিয়েছে। তার মানে হলো, আমাদের সামনে আরও খারাপ সময় আসছে। এখন প্রশ্ন হলো, সরকারের এই অপরিণামদর্শী কার্যকলাপের জন্য আমরা সাধারণ মানুষ কেন খেসারত দেব? সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার খালি হচ্ছে, আমাদের ওপর করের বোঝা বাড়ছে আর সরকার ইনডেমনিটি আইন পাস করেছে যে আমরা রেন্টাল/কুইক রেন্টালের বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারব না। এ কেমন কথা?
গণতন্ত্রের মানে হচ্ছে, দেশের আসল সরকার আসলে আমরা সবাই। এখানে সরকার গণতন্ত্র নিশ্চিত করে না। দেশ পরিচালনা করতে আমরা যাঁদের চেয়ারে বসিয়েছি, তাঁদের পরিচালনার দায়িত্ব আসলে আমাদেরই। শুধু পাঁচ বছর পর ভোট দিয়ে চেয়ারের লোক বদল আমাদের কাজ নয়, পাঁচটি বছর চেয়ারে বসে যেন আমাদের সেবার কাজটি সরকার ঠিকঠাকভাবে করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করাই আমাদের কাজ। অথচ, রেন্টাল/কুইক রেন্টাল নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করলে তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বিবেচনা করার কথা বলেছেন একজন প্রতিমন্ত্রী। ভয় দেখিয়ে জনগণের মুখ বন্ধ করা, এ তো গণতন্ত্রবিরোধী, তাই না?
গত ২৫ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শোতে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী আনিসুল হক। তিনি তাঁর নিজস্ব গবেষণার সূত্রে দাবি করেছেন যে ‘রেন্টাল/কুইক রেন্টালে বিদ্যুৎ উৎপন্ন না হলে দেশে প্রতিদিন ১০ রিখটার স্কেলে অর্থনৈতিক ভূমিকম্প হতো।’ টক শোতে তাঁকে বলতে শুনলাম, গবেষণার তথ্য হিসেবে তিনি নাকি পুরোপুরি ‘বিদেশি’ তথ্য ব্যবহার করেছেন। আর গবেষণা করেছেন একজন ‘বাংলাদেশি ব্যবসায়ী’ হিসেবে। পরে কথায় কথায় বের হলো আসলে তিনি ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো আর পিডিবির বার্ষিক রিপোর্টের তথ্য। গবেষণায় ‘দেশি তথ্য’ ব্যবহার কোনো সমস্যা নয়। আর গবেষণার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশি ব্যবসায়ী’ অবস্থানটাও বাড়তি কিছু যুক্ত করে না। কারণ, একজন ব্যবসায়ী বাংলাদেশি হলে তিনি সরকারকে ছাড় দেবেন বিষয়টি তা নয়। আর তিনি যে গবেষণা করেছেন তাঁর মূল অনুমানগুলোতে সমস্যা রয়েছে। যেমন, রেন্টাল/কুইক রেন্টালে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে সেখানে তথ্যগত বিভ্রান্তি রয়েছে। এর প্রমাণ পেতে যে কেউ পিডিবির ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রতিদিন কোন প্ল্যান্ট কত বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, সেটা দেখতে পারেন। ৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে এমন একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে এপ্রিল-জুনের বেশির ভাগ দিনই বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল শূন্য।
সবাই একবাক্যে স্বীকার করি যে আমাদের বিদ্যুৎ দরকার আর সবাই প্রশ্ন করি কীভাবে আমরা বিদ্যুৎ পাব। বিদ্যুৎসংকট বিষয়ে টক শো সরাসরি সম্প্রচার হলে সাধারণ দর্শকদের যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তাতেও স্পষ্ট হয় যে লোকজন ‘বিশেষজ্ঞদের’ বক্তব্য শোনার চেয়ে ত্বরিতগতিতে বিদ্যুৎসংকটের সমাধান চায়। গত ২৫ জুন সেই টক শোতেও দেখলাম এক দর্শক খুদে বার্তায় পরামর্শ পাঠিয়েছে, দেশে পারমাণবিক প্রকল্প বসানো দরকার তাতে নিরাপদে আমরা বিদ্যুৎ পাব (অথচ, গত বছরই জাপানে ভূমিকম্পের পর ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর বিশ্বের প্রথম সারির অনেক দেশ পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।) অনেকের কাছে মনে হয় আনু মুহাম্মদই দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় বাধা, কারণ তিনি ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পবিরোধীদের নেতা। রাগ করে অনেকেই বলেন, ‘মাটির নিচে কয়লা রেখে আমাদের কী হবে।’ এভাবে আমরা ঘুরপাক খেতে থাকি কিন্তু বহুজাতিক তেল কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আমাদের যে উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) আছে, সেগুলোতে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থই যে স্বীকৃতি পায়, সেটা আমরা দেখি না।
এসব প্রশ্ন আমরা এড়িয়ে যাই। অথচ এসব প্রশ্নের সঙ্গেই আমাদের বিদ্যুতের সংকট ও সমাধানের সরাসরি সম্পর্ক আছে। এসব প্রশ্ন করা দরকার কারণ, বাংলাদেশের বিদ্যুতের সংকটকে পুঁজি করে এ দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, ঠকানো হচ্ছে। ‘জাতীয় কমিটি’ বা ‘তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’ ১৯৯৫ সাল থেকে এ ব্যাপারে আমাদের সতর্ক করছে। তাদের আমরা পাত্তা না দিয়ে থাকতে পারতাম কিন্তু দেখছি তারা যে পরিণামের আশঙ্কা প্রকাশ করছে (যেমন: রেন্টাল/কুইক রেন্টালের অপ্রয়োজনীয়তা) সে ধরনের ঘটনাই ঘটছে। বাস্তবে আমরা দেখছি বিদ্যুতের দাম বাড়ছে অথচ ‘জাতীয় কমিটি’ দাবি করেছে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ দুই টাকায় উৎপাদন করা যেত। ‘কার কথা আমরা বিশ্বাস করব? জাতীয় কমিটির না সরকারের?’ এ রকম বিভ্রান্তি আমাদের অনেকেরই। যেন আমরা ভুলে গেছি যে আমাদের নিজেদের ঘাড়ের ওপরেই আছে একটি মাথা। পত্রপত্রিকা, গবেষণায় প্রকাশিত তথ্য আর দৈনন্দিন জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই আমরা আমাদের বিভ্রান্তি দূর করতে পারি।
নাসরিন সিরাজ: নৃবিজ্ঞানী ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা।
nasrinsiraj@yahoo.com
No comments