ঐশীর বক্তব্য শুনলেন হাইকোর্ট
মালিবাগে স্ত্রীসহ পুলিশের পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তাঁদের মেয়ে ঐশী রহমানকে আজ সোমবার হাইকোর্টে হাজির করা হয়। খাসকামরায় তাঁর বক্তব্য শোনেন আদালত। পরে তাঁকে নিয়ে যায় কারা কর্তৃপক্ষ। হাইকোর্টের নির্দেশে সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঐশীকে আদালতে হাজির করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যক্রম শুরু হয়। ঐশীর করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ওপর এই বেঞ্চে শুনানি চলছে। আজকের শুনানির শুরুতে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম বলেন, এই মামলায় মানবাধিকারকর্মীরা একটি রিট করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার আগে-পরে ঐশীর মানসিক অবস্থা বিষয়ে চিকিৎসকেরা প্রতিবেদন দিয়েছেন। বিচারিক আদালতে ওই প্রতিবেদন দেখানো হয়েছে। আসামিপক্ষ ওই প্রতিবেদনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। ঐশীর সঙ্গে বিশেষভাবে কথা বলা হবে। এ সময় রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষর একজন করে আইনজীবী উপস্থিত থাকবেন। আদালতের এই বক্তব্যের পর সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে ঐশীকে খাসকামরায় নেওয়া হয়। দুই বিচারপতি এজলাস ত্যাগ করেন। বেলা ১১টার পর ঐশীকে কারা কর্তৃপক্ষ খাসকামরা থেকে নিয়ে যায়। ঐশীর আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী প্রথম আলোকে বলেন, খাসকামরায় প্রায় ১৫ মিনিটের মতো ঐশীর বক্তব্য শুনেছেন আদালত। তাঁকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন।
স্ত্রীসহ মাহফুজুর রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া তাঁদের সন্তান ঐশীকে আজ (১০ এপ্রিল) আদালতে হাজির করতে ৩ এপ্রিল নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। আইজি প্রিজনের প্রতি এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ঐশীর করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানিকালে আইজি প্রিজনের প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গত ১২ মার্চ ঐশীর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট মালিবাগের বাসা থেকে পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তাঁর স্ত্রীর ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন মাহফুজের ভাই মশিউর রহমান এ ঘটনায় পল্টন থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই ঐশী পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল রায় দেন। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদণ্ড ও তাঁর বন্ধু মিজানুর রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই বছরের ১৯ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে। পরে তা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত হয়। ওই বছরের ৬ ডিসেম্বর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন ঐশী। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুক (মামলাবৃত্তান্ত) প্রস্তুত করা হয়।
No comments