গির্জায় বিস্ফোরণ : মিসরে জরুরি অবস্থা জারি
মিসরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। রোববার রাতে এই আদেশ জারি করা হয়েছে। তানতা ও আলেকজান্দ্রিয়ায় গির্জা দুটিতে বিস্ফোরণের পর প্রথমে পুরো মিসরে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর সুরক্ষার জন্য সেনা মোতায়েনের আদেশ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসি। এরপর আসে তিন মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারীর ঘোষণা। তবে প্রেসিডেন্টের এ পদক্ষেপের জন্য পার্লামেন্টে অনুমোদন প্রয়োজন হবে। যদিও পার্লামেন্টে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা তার রয়েছে। এদিকে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী বলছে, সংখ্যালঘু এই খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের 'পাম সানডে'র অনুষ্ঠানে হামলাগুলো চালিয়েছে তাদের যোদ্ধারা। সাম্প্রতিক সময়ে তারা মিসরের বেশ কয়েকটি হামলা করেছে, আরো হামলার হুমকি দিয়েছে। রোববার প্রথম বিস্ফোরণটি হয়, উত্তরাঞ্চলীয় তানতা শহরে সেন্ট জর্জ'স কপটিক চার্চে এবং তাতে অন্তত ২৭ জন নিহত হন, আহত হন সত্তর জনেরও বেশি মানুষ। তানতায় বিস্ফোরণ স্থলের বর্ণনা দিয়ে এক ব্যক্তি বলছিলেন যে এটা সকাল নটার দিকে। প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হচ্ছিলো এবং সবাই নিজের জায়গায় বসে ছিলো।
আমি সামনের দিকে ছিলাম এবং হঠাৎ করে সব অন্ধকার হয়ে গেলো। আমি সরে গেলাম আর কয়েকজন আমাকে সিটের ওপরই ঠেলি দিলো। কয়েক সেকেন্ড পর দেখি আমার চারপাশে কয়েকজন পড়ে আছে। চিৎকার শুনতে পাই। লোকজন বলছে বেরিয়ে আসো। তানতার হামলার ঘন্টা খানেক পরেই আলেকজান্দ্রিয়া শহরের আরেকটি গির্জায় দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে, আত্মঘাতী ওই বোমা হামলায় একজন পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। পোপ ফ্রান্সিস এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তার আগামী মাসে মিসর সফরের কথা রয়েছে। হামলার পরপরই ন্যাশনাল ডিফেন্স কাউন্সিলের সাথে বৈঠকে বসেন প্রেসিডেন্ট সিসি। এরপর শক্ত ভাষায় দেয়া ভাষণে তিনি জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দেন। জরুরি অবস্থার কারণে কর্তৃপক্ষ যেকোনো ব্যক্তিকে আটক ও যেকোনো স্থান তল্লাশির সুযোগ পাবে। মিসরের মোট জনগোষ্ঠীর দশ শতাংশ কপটিক খ্রিস্টান। গত ডিসেম্বর মাসে বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়েছিল কায়রোর কপটিক ক্যাথেড্রাল। সাম্প্রতিক বছরে কপটিক খ্রিস্টানদের ওপর সহিংসতার ঘটনা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ২০১৩ সাল থেকে যখন সামরিক বাহিনী নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে উৎখাত করে এবং চরমপন্থিদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় শুরু করে। সূত্র : বিবিসি
No comments