২০৪৮ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হবে মাছ
২০৪৮ সালের মধ্যেই এই গ্রহ থেকে বিলুপ্ত হবে মাছ। পৃথিবীর সব সমুদ্র থেকে মাছ উধাও হয়ে যাবে- এমনই অনুমান করছেন ইকোলজিস্ট ও ইকোনমিস্টদের একটি আন্তর্জাতিক দল। হ্যালিফক্সের ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী বরিস ওয়ার্মের নেতৃত্বে ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, সুইডেন ও পানামার বহু গবেষক একটি গবেষণার পর এ তথ্য জানিয়েছেন। গবেষকরা জানিয়েছেন, দূষণ, বাসস্থান ধ্বংস, আবহাওয়া পরিবর্তন এবং অতিরিক্ত হারে মাছ ধরার কারণে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত হবে মাছ। তারা জানিয়েছেন, তারা যা অনুমান করেছিলেন লাগাতার গবেষণার ফলে বুঝতে পেরেছেন বাস্তবটা আরও ভয়ংকর। যে হারে সামুদ্রিক মাছের বিভিন্ন প্রজাতি বিলুপ্ত হচ্ছে তা রীতিমতো ভয়াবহ। ধীরগতিতে নয়, বরং এই ধ্বংসলীলা চলছে ভীষণ দ্রুততার সঙ্গে। গবেষকরা আশংকা করছেন, যেভাবে বায়োডায়ভার্সিটির পতন হচ্ছে তাতে সামুদ্রিক পরিবেশ আর মানুষের জীবনধারা বহন করতে পারবে না। ইতিমধ্যেই ২৯ শতাংশ খাবারযোগ্য সামুদ্রিক মাছের প্রজাতি হ্রাস পেয়েছে। সামগ্রিকভাবে সামুদ্রিক মাছের ক্ষেত্রে এই হার ৯০ শতাংশ। সামুদ্রিক মাছের গুরুত্ব কিন্তু শুধু আমাদের খাবার প্লেটেই শেষ হয়ে যায় না। সামুদ্রিক মাছ পানির বিষাক্ত পদার্থ ফিল্টার করে। শোরলাইন রক্ষা করে। রেড টাইডের মতো অ্যালগাম ব্ল–ম প্রতিরোধ করে। অর্থাৎ সামুদ্রিক মাছের অবর্তমানে আসলে ধ্বংস হয়ে যাবে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র। ফলে বাড়বে দূষণ। সমুদ্রে বাস্তুতন্ত্র, বায়োডায়ভার্সিটির পতন সরাসরি প্রভাব ফেলবে মানুষের সভ্যতার ওপর। সোজা কথায় মানব সভ্যতা, জীবন সরাসরি ধ্বংসের খুব কাছাকাছি চলে আসবে। সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে অত্যাধিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলছে ব্যাপক হারে সমুদ্র দূষণ। ভিন্ন ভিন্ন সামুদ্রিক পরিবেশে ৩২ রকমের পরীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা আশংকা প্রকাশ করেছেন এখনই সমুদ্র দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে ফলাফল মারাত্মক হতে পারে। পৃথিবীজুড়ে ১২টি সামুদ্রিক অঞ্চলের ১ হাজার বছরের ইতিহাসের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এই আশংকা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।
No comments