চৌহালী উপজেলা পরিষদ রক্ষা বাঁধে ধস

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা পরিষদ রক্ষা বাঁধের একাংশ ধসে গেছে। গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে ধস নামায় উপজেলা পরিষদের একটি আবাসিক ভবনসহ বাঁধের পাশের বহু বাড়িঘর ও জমিজমা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।


উপজেলা প্রশাসন ও টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, চার দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও যমুনা নদীতে অব্যাহত পানি বাড়ার কারণে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ১ দশমিক ৭৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁধের ২০০ মিটার ধসে যায়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাঁধে ধস নামা থেমেছে। তবে বেলা তিনটার দিকে উপজেলা পরিষদের একটি আবাসিক ভবনের অর্ধেক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধে ধস নামার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাতেই লোকজন বাড়িঘর সরিয়ে নিতে শুরু করে।
উপজেলা পরিষদের ভবনগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সর্বশেষ পাওয়া খবরে, দুই শতাধিক বাড়িঘর ও ৩০০ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
চৌহালী উপজেলা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রাশিদুল হাসান জানান, সদরের খাসকাউলিয়া থেকে উজানের এই বাঁধের নিচে বুদ্বুদ ওঠার পর মুহূর্তের মধ্যে ধসে যেতে শুরু করে। অনেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিতে পারেনি। নদীর পূর্বে নাগরপুরের দিকে প্রায় ২০০ মিটার বাঁধ ধসে গেছে। এ পর্যন্ত খাসধলাই গ্রামের কবরস্থান ও মসজিদ, রেহাই কাউলিয়া মাদ্রাসা, সরকারি উচ্চবিদ্যালয়সহ দুই শতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। উপজেলা পরিষদসহ আশপাশের স্থান থেকে লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীন কুমার জানান, সোমবার রাতে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনরোধে পাউবো ব্যবস্থা নিলেও রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তারা। এখন উপজেলা পরিষদ চত্বর হুমকির মুখে। এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চৌহালীর পাশের জেলা টাঙ্গাইল পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী জ্যোতি প্রকাশ ঘোষ জানান, যমুনা নদীর গতিপ্রকৃতি বোঝা দুষ্কর। ছয় মাস আগে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা পরিষদ রক্ষা করার জন্য নদীর স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। ইতিপূর্বে দুই দফায় বাঁধে ধস নেমেছিল। সেগুলো মেরামত করা হয়। এখন বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ও ধস নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.