বিদ্যালয় নদীগর্ভে উঠানে পাঠদান

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার চিলমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হওয়ায় বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। মাটিতে বসেই শিশু শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে।


বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবদুর রশিদ জানান, বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সুজা মিয়ার বাড়ির উঠানে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গত সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীর কাছে সাবেক ইউপি সদস্য সুজা মিয়ার বাড়ির উঠানে শিশুদের পাঠদান চলছে।
পাঠদানরত শিক্ষক মোছা. শারমিন আকন্দ বলেন, খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ থাকে না। এ ছাড়া বৃষ্টি হলে স্কুল ছুটি দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী খোকন মিয়া ও আইরিন জানায়, এভাবে খোলা জায়গায় ক্লাস করতে ভাল লাগে না। পানি ও ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা না থাকায় খুব অসুবিধায় পড়তে হয়।
অভিভাবক মোন্তাজ মিয়া বলেন, ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আমার মতো অনেক অভিভাবকই দুশ্চিন্তায় থাকেন। কারণ, খেলতে গিয়ে যেকোনো সময় শিশুরা ব্রহ্মপুত্র নদের পড়ে যেতে পারে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. নিলুফা ইয়াসমিন জানান, ১৯২২ সালে চিলমারী ইউনিয়নের বৈলমনদিয়ার খাতায় বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। নদীভাঙনের ফলে ১৯৭৭ সালে পুনরায় রমনা মডেল ইউনিয়নের টোন গ্রামে ২৭ শতক জমির ওপর বিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয়। এবারের বন্যায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করায় বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে সাতজন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬৭। খোলা জায়গায় পাঠদান করায় শিশু শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। এ ছাড়া বসার জায়গা না থাকায় ক্লাস শেষে সুজা মিয়ার ঘরে শিক্ষকদের বসতে হয়। এর ফলে বাড়ির মালিক ও শিক্ষক উভয়কে অসুবিধায় পড়তে হয়।
চিলমারী উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শম্ভু চরণ দাস জানান, ওই বিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থা জানিয়ে জেলা প্রাথমকি শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.