কিশোরগঞ্জের চার উপজেলায় প্রসূতি অস্ত্রোপচার বন্ধ! by সাইফুল হক মোল্লা

চিকিৎসকসহ জনবলের অভাবে কিশোরগঞ্জের চারটি উপজেলা হাসপাতালে দীর্ঘদিন প্রসূতির অস্ত্রোপচার (সিজার অপারেশন) বন্ধ রয়েছে। ফলে ওই চার হাসপাতালে অবকাঠামো, যন্ত্রপাতিসহ ২৫ কোটি টাকার মালামাল পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।


সিভিল সার্জন কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালে প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতি মা ও শিশুদের সঠিক, আধুনিক ও উন্নত সেবার দেওয়ার জন্য করিমগঞ্জ, নিকলী, ভৈরব, মিঠামইন ও কটিয়াদীতে তিন থেকে সাড়ে তিন কোটি টাকায় নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনগুলোতে আধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষ নির্মাণ করা হয়। এ কাজে ২৫ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় হয়।
করিমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা গেছে, ২০০৬ সালের অক্টোবরে প্রসূতির অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ১২৫টি অস্ত্রোপচারের পর ডিসেম্বরে প্রসূতি সার্জন আমিনুর রহমান বদলি হওয়ার পর আর কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও সার্জন না থাকায় প্রসূতির অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে যায়। ২০০৩ সালে কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতির অস্ত্রোপচার শুরু হয়। কয়েক মাস পর অবেদনবিদ প্রেষণে অন্যত্র চলে যাওয়ার পর ওই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। মিঠামইনে প্রসূতি সার্জন ও অবেদনবিদ পদে কাউকে নিয়োগই দেওয়া হয়নি।
নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতি সার্জন নিয়োগ হলেও অবেদনবিদ ও সেবিকা না থাকায় অস্ত্রোপচার হয়নি একটিও। একমাত্র ভৈরবে এ কার্যক্রম ভালোভাবে চলছে।
মিঠামইন উপজেলার গোপদীঘি গ্রামের ফজল মিয়া বলেন, ‘মিঠামইন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতিসেবার সব ধরনের ব্যবস্থা থাকার পরও শুধু সার্জনের অভাবে স্ত্রীকে জেলা শহরের একটি ক্লিনিকে নিতে বাধ্য হই। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম নেয়। সব মিলিয়ে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।’
কটিয়াদী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সৈয়দ মো. মঞ্জুরুল হক জানান, এসব সমস্যা ও সংকটের কথা লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
সিভিল সার্জন হোসাইন সারোয়ার খান জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কড়া সিদ্ধান্ত নিয়ে শুধু এ কার্যক্রমের জন্য চিকিৎসক ও সেবিকা নিয়োগ দিয়ে পুরো কার্যক্রমের গতিশীলতা আনতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিষয়টি অনুধাবন করে ব্যবস্থা নেবে বলে তাঁর আশা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক দ্বীন মোহাম্মদ জানান, বিষয়টি তাঁদের নজরে এসেছে। এ ব্যাপারে কাজ চলছে। অতি দ্রুত সিদ্ধান্ত আসবে।

No comments

Powered by Blogger.