চামড়ার বাজারে মন্দাঃ পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা by মফিজুল সাদিক
এবারের পবিত্র ঈদ-উল আজহায় চামড়ার বাজারে মন্দা ভাব লক্ষ্য করা গেছে। গত কোরবানির ঈদের তুলনায় এবার প্রতিটি গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়া পানির দরে বিক্রি হচ্ছে।
চামড়ার বাজার মন্দার জন্য একে অপরকে দূষছে।খুচরা বিক্রেতারা দুষছেন পাইকারি বিক্রেতাদের। পাইকারি বিক্রেতারা আবার বলছেন, ট্যানারি মালিকেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চামড়ার বাজারের খারাপ অবস্থা সৃষ্টি করছেন।
অপরদিকে ট্যানারি মালিকেরা বিশ্ববাজার থেকে চামড়ার অর্ডার না পাওয়াকে দায়ী করছেন। এছাড়া সরকারের কাছ থেকে চামড়া কেনার জন্য ঋণ না পাওয়াকেও দায়ী করছেন ট্যানারি মালিকেরা।
সবদিক দিয়ে বিবেচনা করলে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ খুচরা বিক্রেতারা।
রাজধানীর সিটি কলেজ মোড়ে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ধানমণ্ডি ৬ নম্বর থেকে রবিউল ইসলাম রিকশাযোগে ৪টি চামড়া নিয়ে এসেছিলেন। ২টি বড় গরুর চামড়া ও ২টি ছাগলের চামড়া। পাইকারি চামড়া ক্রেতারা তার ৪টি চামড়ার দাম বলেন, মাত্র ২ হাজার ৫০০ টাকা।
রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘গতবার যে চামড়া ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি, এবার একই চামড়ার দাম বলছেন, মাত্র ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।’’
তিনি আরো বলেন, রাজধানীতে পানির দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকেরা দাম দিচ্ছেন না। এমনকি তারা যে চামড়া কিনবেন সে নিশ্চয়তাও দিচ্ছেন না।
ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী ওসমানও বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ট্যানারি মালিকেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম কমালে আমরা বেশি দামে চামড়া বিক্রি করবো কোথায়?’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ট্যানারি মালিকেরা বলছেন, তারা নাকি সরকারের কাছ থেকে ঋণ পাননি। বিশ্ববাজারে মন্দার কথা বলেও তারা আমাদের কাছ থেকে কম দামে চামড়া কিনছেন।’’
গতবারের তুলনায় সব ধরনের চামড়া কম দামে কিনছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পাইকারি ব্যবসায়ী রইস মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘দাম কম থাকার কারণে এবার আমরা গরুর কাঁচা চামড়া কিনছি ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৮০০ টাকায়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা গত কোরবানির ঈদে গরুর চামড়া ১০০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় দিয়ে চামড়া কিনেছিলাম। ছাগলের চামড়া কিনেছিলাম ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় । এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়।’’
এবার মহিষের চামড়ার চাহিদা সবচেয়ে কম। পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিতে আগ্রহী নন। তবে অন্যান্য বাজারে ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকায় প্রতিটি মহিষের চামড়া বিক্রি হচ্ছে।
ট্যানারি মালিকেরা কম দামে চামড়া কিনছেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে। তারা বলছেন, ‘‘সরকারের কাছ থেকে এবার ঋণ পাইনি পর্যাপ্ত। এছাড়া বিশ্ববাজার মন্দা।’’ তবে মালিকেরা আরো বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে চামড়া গোডাউনে মজুদ আছে।এছাড়া বাইরের দেশ থেকে চামড়া রফতানি করার অর্ডার পাচ্ছেন না তারা।
আঞ্জুমান ট্রেডিং কর্পোরেশন ও অঙ্গন লেদার কমপ্লেক্সের মালিক মো. মহীউদ্দিন মিঙা বাংলানিউজকে বলেন, সরকার এবার ১০ ভাগের এক ভাগও মালিকপক্ষকে ঋণ দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, ‘‘আগের প্রচুর চামড়া মজুদ আছে। আমরা সেগুলোই বিক্রি করতে পারছি না।’’
চামড়ার দাম কম ও বাজার মন্দার কারণ হিসাবে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘প্রতি বছর সরকার আমাদের ঋণ বেশি করে দেয়। কিন্তু এবার দিয়েছে অনেক কম। গত কারবানির ঈদে সরকার আমাদের ঋণ দিয়েছিল ৩৬৫ কোটি টাকা। কিন্তু এবার দিয়েছে মাত্র ৩৪০ কোটি টাকা।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকার প্রণোদনাও কমিয়ে দিয়েছে। সরকার প্রতিবার আমাদের ১০০ কোটি টাকা শুল্ক ফেরত দিতো। কিন্তু এবার তা দেয়নি। এবার ব্যাংকেও তারল্য সংকট।‘’
তারপরও এবার তারা ৬০ লাখ গরুর চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু সেই পরিমাণ টাকা নেই।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘৭০ শতাংশ চামড়া আমরা রপ্তানি করে থাকি হংকং, চায়না, দক্ষিণ কোরিয়া এবং উত্তর কোরিয়ায়। কিন্তু দেশগুলো এবার আমাদের রফতানির জন্য অর্ডার দিচ্ছে না।’’
যদি রফতানি কম হয়, ভারতে চামড়া পাচার হয়ে যেতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, চামড়ার দাম বাড়া ও কমার ক্ষেত্রে আমেরিকার বাজার বড় একটা ফ্যাক্টর। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ চামড়া রফতানি কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে বলেও জানান শাহিন আহম্মেদ।
সবদিক দিয়ে বিবেচনা করলে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ খুচরা বিক্রেতারা।
রাজধানীর সিটি কলেজ মোড়ে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে ধানমণ্ডি ৬ নম্বর থেকে রবিউল ইসলাম রিকশাযোগে ৪টি চামড়া নিয়ে এসেছিলেন। ২টি বড় গরুর চামড়া ও ২টি ছাগলের চামড়া। পাইকারি চামড়া ক্রেতারা তার ৪টি চামড়ার দাম বলেন, মাত্র ২ হাজার ৫০০ টাকা।
রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘গতবার যে চামড়া ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি, এবার একই চামড়ার দাম বলছেন, মাত্র ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।’’
তিনি আরো বলেন, রাজধানীতে পানির দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকেরা দাম দিচ্ছেন না। এমনকি তারা যে চামড়া কিনবেন সে নিশ্চয়তাও দিচ্ছেন না।
ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ী ওসমানও বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘ট্যানারি মালিকেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম কমালে আমরা বেশি দামে চামড়া বিক্রি করবো কোথায়?’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ট্যানারি মালিকেরা বলছেন, তারা নাকি সরকারের কাছ থেকে ঋণ পাননি। বিশ্ববাজারে মন্দার কথা বলেও তারা আমাদের কাছ থেকে কম দামে চামড়া কিনছেন।’’
গতবারের তুলনায় সব ধরনের চামড়া কম দামে কিনছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। পাইকারি ব্যবসায়ী রইস মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘দাম কম থাকার কারণে এবার আমরা গরুর কাঁচা চামড়া কিনছি ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৮০০ টাকায়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা গত কোরবানির ঈদে গরুর চামড়া ১০০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় দিয়ে চামড়া কিনেছিলাম। ছাগলের চামড়া কিনেছিলাম ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায় । এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়।’’
এবার মহিষের চামড়ার চাহিদা সবচেয়ে কম। পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিতে আগ্রহী নন। তবে অন্যান্য বাজারে ১২০০ টাকা থেকে ১৩০০ টাকায় প্রতিটি মহিষের চামড়া বিক্রি হচ্ছে।
ট্যানারি মালিকেরা কম দামে চামড়া কিনছেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে। তারা বলছেন, ‘‘সরকারের কাছ থেকে এবার ঋণ পাইনি পর্যাপ্ত। এছাড়া বিশ্ববাজার মন্দা।’’ তবে মালিকেরা আরো বলছেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে চামড়া গোডাউনে মজুদ আছে।এছাড়া বাইরের দেশ থেকে চামড়া রফতানি করার অর্ডার পাচ্ছেন না তারা।
আঞ্জুমান ট্রেডিং কর্পোরেশন ও অঙ্গন লেদার কমপ্লেক্সের মালিক মো. মহীউদ্দিন মিঙা বাংলানিউজকে বলেন, সরকার এবার ১০ ভাগের এক ভাগও মালিকপক্ষকে ঋণ দেয়নি।
তিনি আরো বলেন, ‘‘আগের প্রচুর চামড়া মজুদ আছে। আমরা সেগুলোই বিক্রি করতে পারছি না।’’
চামড়ার দাম কম ও বাজার মন্দার কারণ হিসাবে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহম্মেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘প্রতি বছর সরকার আমাদের ঋণ বেশি করে দেয়। কিন্তু এবার দিয়েছে অনেক কম। গত কারবানির ঈদে সরকার আমাদের ঋণ দিয়েছিল ৩৬৫ কোটি টাকা। কিন্তু এবার দিয়েছে মাত্র ৩৪০ কোটি টাকা।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সরকার প্রণোদনাও কমিয়ে দিয়েছে। সরকার প্রতিবার আমাদের ১০০ কোটি টাকা শুল্ক ফেরত দিতো। কিন্তু এবার তা দেয়নি। এবার ব্যাংকেও তারল্য সংকট।‘’
তারপরও এবার তারা ৬০ লাখ গরুর চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু সেই পরিমাণ টাকা নেই।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘৭০ শতাংশ চামড়া আমরা রপ্তানি করে থাকি হংকং, চায়না, দক্ষিণ কোরিয়া এবং উত্তর কোরিয়ায়। কিন্তু দেশগুলো এবার আমাদের রফতানির জন্য অর্ডার দিচ্ছে না।’’
যদি রফতানি কম হয়, ভারতে চামড়া পাচার হয়ে যেতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি আরো বলেন, চামড়ার দাম বাড়া ও কমার ক্ষেত্রে আমেরিকার বাজার বড় একটা ফ্যাক্টর। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ চামড়া রফতানি কমে যাওয়ায় বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েছে বলেও জানান শাহিন আহম্মেদ।
No comments