গুঞ্জন 'হাওয়া' করে দিয়ে হাজির কাস্ত্রো

সব গুঞ্জন-গুঞ্জরণকে 'হাওয়া' করে দিয়ে জনসমক্ষে হাজির কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। গত মার্চ থেকে তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে, অর্থাৎ পত্রিকার পাতায় বা টিভির পর্দায় খবর হয়ে আসছেন না। এ সুযোগে তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে নানা গুঞ্জন ডালপালা মেলে মিডিয়ায়। মৃত্যু তাঁর দুয়ারে কড়া নাড়ছে_এমন কথাও চাউর হয়।


এবার কাস্ত্রো নিজেই বললেন, এসব বানোয়াট খবর, নির্জলা মিথ্যা। গতকাল সোমবার এক নিবন্ধে তিনি বলেন, 'আমি ভালো আছি। শেষবার কবে যে আমার মাথাব্যথা হয়েছে, তাও আমার স্মরণে নেই।'
আগের দিন রবিবার কাস্ত্রোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর ভেনিজুয়েলার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট এলিয়াস হোসে আউয়া মিলানো দাবি করেন, ৮৬ বছর বয়সী কাস্ত্রোর 'শারীরিক অবস্থা খুবই ভালো, প্রাণবন্ত'। রাজধানী হাভানার একটি হোটেলে কাস্ত্রোর সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, পাঁচ ঘণ্টার ওই বৈঠকে কাস্ত্রোর স্ত্রী দালিয়া সোতো দেল ভালেও উপস্থিত ছিলেন। নিজের দাবির পক্ষে মিলানো কাস্ত্রো ও দালিয়ার সঙ্গে তাঁর ছবিও দেখান। আলাপচারিতা শুরুর আগে ওই হোটেলের ব্যবস্থাপক আন্তোনিও মার্তিনেজ বলেন, 'আমরা দীর্ঘসময় কাস্ত্রোর সঙ্গলাভের সুযোগ পেতে যাচ্ছি।' তিনি কাস্ত্রোর সঙ্গে ছবি তোলেন, তাতে মিলানোর হাস্যোজ্জ্বল উপস্থিতিও আছে। কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা গ্রানমায় প্রকাশিত নিবন্ধে কাস্ত্রো বলেন, তাঁকে নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যেসব কথাবার্তা ছাপা হচ্ছে, তা মিথ্যা। তিনি ভালো আছেন। বিশ্বের তথ্যমাধ্যমের অধিকাংশের মালিক সুবিধাভোগী ধনিকশ্রেণী। অনেকেই তাদের কথায় কান দেয়; তবে দিন যত যাচ্ছে তাদের ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাচ্ছে। তারাই এসব আজেবাজে কথা ছাপছে।
নিবন্ধের শেষে কাস্ত্রো বলেন, 'শেষবার কবে আমার মাথাব্যথা হয়েছিল তাও ভুলে গেছি। ওরা (গণমাধ্যম) যে কতটা মিথ্যাবাদী, তা প্রমাণের জন্য আমি আমার কয়েকটি ছবিও আপনাদের সামনে হাজির করছি।'
কাস্ত্রো নিবন্ধে জানান, লেখালেখি আর পড়াশোনা করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি। জনসমক্ষে হাজির না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'নিশ্চয় সংবাদপত্রের পাতা দখল করে রাখা আমার মূল কাজ নয়।' গ্রানমায় ছাপা হওয়া ছবিগুলো তুলেছেন কাস্ত্রোর ছেলে অ্যালেঙ্। একটি ছবিতে কাউবয় শার্ট ও হ্যাট পরা কাস্ত্রোকে হাস্যোজ্জ্বল দেখাচ্ছিল। কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, তিনি শুক্রবারের 'গ্রানমা'র একটি কপি পড়ছেন।
কিউবার প্রায় পাঁচ দশকের শাসক ফিদেল কাস্ত্রো ২০০৮ সালে দেশের শাসনভার আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রোর হাতে তুলে দেন। শারীরিক অবস্থার কারণেই ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। গত ২৮ মার্চের পর থেকে তাঁকে বাইরে কোথাও দেখা না যাওয়ায় তাঁর স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত গুঞ্জন শুরু হয়। সূত্র : বিবিসি, এএফপি, জিনিউজ।

No comments

Powered by Blogger.