আদালতের আদেশ দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্তব্ধ করা যায় না -বিএনপি
গণতন্ত্র
পুনরুদ্ধারের আন্দোলন দমনের জন্য আদালতকে ব্যবহার করা আওয়ামী লীগের
রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব
সালাহউদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, বিচার বিভাগকে বিরোধী দল ও ভিন্নমত দমনের
হাতিয়ারে পরিণত করেছে সরকার। অবৈধ সরকার ন্যায্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের
আন্দোলনকে দমনের শেষ চেষ্টা হিসেবে আদালতকে ব্যবহার করছে আওয়ামী লীগ। এটা
তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বেও প্রমাণ। আদালতের আদেশ দিয়ে গণতান্ত্রিক
আন্দোলনকে কখনও স্তব্ধ করা যায় না বলে জানান তিনি। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো
এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, চূড়ান্ত দলীয়করণ ও
বিচারক অভিশংসন আইন বিচারিক নৈরাজ্য সৃষ্টির মূল কারণ। ফলে রাষ্ট্রীয়
কাঠামোর ভারসাম্যহীনতার শেষ পরিণতি ভোগ করছে জাতি। স্বাধীনতা পরবর্তী মুজিব
সরকার বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন এবং অধীনস্থ বিভাগে পরিণত
করেছিল সাংবিধানিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস বিচার
বিভাগের স্বাধীনতা হরণের ইতিহাস। তিনি বলেন, আইন বিভাগ অর্থাৎ সার্বভৌম
সংসদ এখন ‘বিকাশ মার্কা’ এমপিদের আড্ডাখানা। জাতীয় সংসদ এখন জাতীয় বিষয়াদি ও
আইন প্রণয়নের কেন্দ্র বিন্দু নয়, এটা এখন খালেদা জিয়া এবং জিয়া পরিবারের
বিরুদ্ধে বিষোদগার কেন্দ্র। সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় বেগম
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের
জানা নেই। তার খাবার ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে যে নিষ্ঠুর বাড়াবাড়ি করছেন
তার পরিণাম শুভ হবে না। বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রীয়
সন্ত্রাস, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, অপহরণ, জুলুম-নির্যাতন,
হামলা-মামলা ও গণগ্রেপ্তারের দায়ভার হুকুমদাতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকেই
নিতে হবে। রাষ্ট্রশক্তির দমন-পীড়ণের প্রতিক্রিয়ায় গণশক্তির বহুমাত্রিক
উত্থান হয়েছে। সেই গণশক্তির সুনামিতে স্বৈরশাসকরা খড়-কুটোর মতো ভেসে যাবে
অচিরেই। তিনি বলেন, রোববার মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার বিএনপি নেতা কাজী
মশিয়ার রহমানকে ওসি বিপ্লব কুমার নাথের নেতৃত্বে গুলি করে ঠাণ্ডা মাথায়
হত্যা করা হয়। একইভাবে দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে রানীরবন্দর শাখার
ছাত্রশিবিরের সভাপতি মতিয়ার রহমানকে যৌথবাহিনী গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে
গুলি ও নৃশংস অত্যাচারের মাধ্যমে হত্যা করে। আমরা সরকারি বাহিনীর এহেন
জঘন্য নরহত্যার তীব্র ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পরিবর্র্তীতে
পরিস্থিতিতে এহেন ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী আদালতে
বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা
প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচনসহ সকল গণদাবি
পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধ-হরতাল এবং গণআন্দোলন অব্যাহত
থাকবে। সংগ্রামী জনতার বিজয় আসন্ন।
No comments