বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা
রোববার
সকাল থেকে ডাকা ৭২ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচির সমর্থনে শনিবার সারা দেশে
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দিয়েছিল ২০
দলীয় জোট। এদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষের
পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। ঠাকুরগাঁও ও মাগুরায় পুলিশের
সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে; সিলেট, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ আরও
কিছু জায়গায় পুলিশি বাধার মুখে পড়েছে বিক্ষোভ কর্মসূচি। আইন-শৃংখলা
বাহিনীর হাতে এদিন আটকও হয়েছেন বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী। আমরা
উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সেই যে গাজীপুরে বিএনপির সমাবেশ করতে দেয়া হল
না, তারপর থেকে সংগঠনটিকে কোথাও দাঁড়াতেই দিতে চাইছে না সরকার। এর কারণ
আমাদের বোধগম্য নয়। দেশে তো জরুরি অবস্থাও বিরাজ করছে না। তাহলে কেন এই
বাধা? এটা ঠিক, বিরোধী দলের অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি চলাকালে পেট্রলবোমায় দগ্ধ
হচ্ছে সাধারণ মানুষ, ইতিমধ্যে গত দেড় মাসের অবরোধে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা
গেছেন অর্ধশতাধিক নর-নারী। এককথায় দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির চরম অবনতি
ঘটেছে। কিন্তু কথা হচ্ছে, বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে না দিলেই কি নাশকতা
বন্ধ হবে? নাকি নাশকতা বন্ধ করার একটা উপায় হতে পারে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া?
সরকার বিএনপিকে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের সুযোগ দেয়ার পরও যদি নাশকতা বন্ধ
না হয়, সেক্ষেত্রে সরকারের বলার সুযোগ থাকবে যে, বিরোধী দল সত্যি সত্যি
সন্ত্রাসের মাধ্যমেই ক্ষমতায় যেতে চায়। সরকার সে পথে কেন হাঁটছে না, তা এক
প্রশ্ন বটে। সরকারের আরও কিছু আচরণ ব্যাখ্যার অতীত। খালেদা জিয়ার কার্যালয়
কেন অবরুদ্ধ করা হল, সেখানে কেন বালুর ট্রাক রাখা হল, কার্যালয়ে খাবার
নেয়ায় কেন বাধা দেয়া হচ্ছে- এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর নেই। আমাদের প্রশ্ন,
এসব করে কি বর্তমান নাশকতা বন্ধ করা যাবে? এটা স্পষ্ট, সাধারণ মানুষ
পেট্রলবোমা সংস্কৃতিকে যেমন ধিক্কার জানাচ্ছে, অন্যদিকে সরকারের দমননীতিরও
সমালোচনা করছে। তারা আসলে শান্তি চায় এবং এই শান্তি যেভাবে আসতে পারে,
সরকার ও বিরোধী দল সেভাবেই অ্যাক্ট করবে- এটাই চায়। বিরোধী দল আইনানুগ
আন্দোলন করবে- এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। আবার সমাজে শান্তি-শৃংখলা
রক্ষায় সরকার প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। এ দুয়ের কীভাবে সমন্বয় হতে পারে, সেটাই
উদ্ভাবনের চেষ্টা করা উচিত দু’পক্ষের।
আমরা বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার বিষয়টির নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বকে অনুরোধ করতে চাই, তারা যেন শুধুই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করেন, কোনো ধরনের নাশকতার সঙ্গে জড়িয়ে না যান। সংঘাত তৈরি করা খুব সহজ কাজ, শান্তি স্থাপন সহজ নয়। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে সুবিবেচনার সঙ্গে কাজ করতে হবে। এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না কারও মধ্যেই। উভয় পক্ষই মনে করছে, জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে একে অন্যকে পরাস্ত করতে পারবে। এটা ভ্রান্তিবিলাস ছাড়া কিছুই নয়। বল প্রয়োগের পরিণাম ক্ষতি ছাড়া অন্যকিছু নয়। অহিংস নীতিই সমাজে আনতে পারে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা। ভবিষ্যতে বিরোধী দলের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকার বাধা দেবে না আশা করি। বিরোধী দলকেও সরে আসতে হবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি থেকে।
আমরা বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার বিষয়টির নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বকে অনুরোধ করতে চাই, তারা যেন শুধুই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করেন, কোনো ধরনের নাশকতার সঙ্গে জড়িয়ে না যান। সংঘাত তৈরি করা খুব সহজ কাজ, শান্তি স্থাপন সহজ নয়। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সবাইকে সুবিবেচনার সঙ্গে কাজ করতে হবে। এটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না কারও মধ্যেই। উভয় পক্ষই মনে করছে, জোর-জবরদস্তির মাধ্যমে একে অন্যকে পরাস্ত করতে পারবে। এটা ভ্রান্তিবিলাস ছাড়া কিছুই নয়। বল প্রয়োগের পরিণাম ক্ষতি ছাড়া অন্যকিছু নয়। অহিংস নীতিই সমাজে আনতে পারে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা। ভবিষ্যতে বিরোধী দলের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকার বাধা দেবে না আশা করি। বিরোধী দলকেও সরে আসতে হবে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি থেকে।
No comments