ইউরিয়া প্রয়োগের সাশ্রয়ী পদ্ধতি by আসাদুল্লাহ্ সরকার
ধানখেতে
সরাসরি না ছিটিয়ে পাতায় বিশেষ পদ্ধতিতে (পানিতে মিশিয়ে যন্ত্রের
সাহায্যে) ছিটালে ইউরিয়া সার স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ৩০-৩৫ শতাংশ কম
লাগে। এতে চাষাবাদের খরচ কমে যায়। বিঘাপ্রতি ধানের ফলনও বাড়ে তিন মণ
পর্যন্ত। গত আমন ও বোরো মৌসুমে এই পদ্ধতিতে সার প্রয়োগ করে দিনাজপুর,
ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা ভালো ফলাফল পেয়েছেন বলে
জানিয়েছেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রাজশাহী বিভাগীয়
যুগ্ম পরিচালক আরিফ হোসেন খান ধানখেতে ইউরিয়া সার কম খরচ করে অধিক ফলন
পাওয়ার এই বিশেষ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন।
কৃষিবিদ আরিফ হোসেন খান জানান, তিনি এই প্রযুক্তির নাম দিয়েছেন ‘ধান চাষের ইউরিয়া স্প্রে প্রযুক্তি’। ধান চাষে মাটিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করায় ৭০ শতাংশ অপচয় হয়। আর স্প্রে (ছিটানো) করে পাতার মাধ্যমে প্রয়োগ করলে মাত্র ১০ শতাংশ অপচয় হয়। এক কেজি ইউরিয়া সার ধানগাছের পাতায় ছিটালে মাটিতে চার কেজি প্রয়োগের সমান কাজ করে। শুধু ধানই নয়, সব ফসলে এই পদ্ধতিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া যেতে পারে।
আরিফ খান এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সার প্রয়োগের বিষয়ে বলেন, ১৪০ দিন জীবনকালের ব্রি-২৮ জাতের ক্ষেত্রে ধান রোপণের বয়স ৩০ দিন হলে প্রথমবার সার স্প্রে করতে হবে, দ্বিতীয় স্প্রে হবে ৪৫ দিনের সময় এবং তৃতীয়বার স্প্রে করতে হবে ৬০ দিনের সময়। স্প্রের দ্রবণ তৈরি করার জন্য প্রতি লিটার পানিতে ৩৮ গ্রাম ইউরিয়া এবং ১২ দশমিক ৫ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার মিশিয়ে সকাল বা বিকেলে স্প্রে করতে হবে। জমিতে একবার স্প্রে করতে ৪৮ লিটার দ্রবণ ব্যবহার করতে হবে। ১৬ লিটারের এক স্প্রের মেশিনে দ্রবণ তৈরি করতে ৬০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ২০০ গ্রাম পটাশ সার মেশাতে হবে। আর ১৬০ দিন জীবনকালের ব্রি-২৯ জাতের ক্ষেত্রে প্রতি লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১২ দশমিক ৫ গ্রাম পটাশ মেশাতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম স্প্রে ৪০ দিনের সময়, দ্বিতীয় স্প্রে ৫৫ দিনের সময় এবং তৃতীয় স্প্রে ৭০ দিনের সময় করতে হবে।
আরিফ খান আরও বলেন, এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মূল বিষয় বা সূত্র হলো, মাটিতে ৫০ শতাংশ ইউরিয়া দিয়ে ধানগাছের পর্যাপ্ত পাতা তৈরি করে তারপর সর্বাধিক কুশি উৎপাদন পর্যায় থেকে গামুর পর্যায় (হেডিং স্টেজ) সময়ের মধ্যে তিনবারে পাতায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ইউরিয়া (১ দশমিক ২৫ শতাংশ পটাশ দ্রবণসহ) স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয়। বোরো মৌসুমে রোপণের সময় ধানের চারার বয়স ৩৫-৪৫ দিনের মধ্যে থাকলে ভালো হবে। এলাকা, মৌসুম বা ধানের জাতভিত্তিক স্প্রের সময় কিছু হেরফের হতে পারে। সময়টি ধানের জাতের জীবনকালের ওপর এবং ধানগাছের পাতার রং দেখে নির্ধারণ করতে হবে।
আরিফ হোসেন বলেন, সংকটকালীন কৃষকেরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পেতে পারেন। এ সময়ে বেশি জমিতে কম সার ছিিটয়ে সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক বাবুল চন্দ্র রায়। গত বছর তিনি নয় বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছিলেন। ওই সময় ধান রোপণকালে ও পরে বিঘাপ্রতি ২৫ কেজি ইউরিয়া সার সনাতন পদ্ধতিতে ছিটিয়েছেন। কিন্তু এ বছর ইউরিয়া সার পানিতে মিশিয়ে মেশিন দিয়ে পাতায় প্রয়োগ করায় বিঘাপ্রতি ১৬ কেজি ইউরিয়া লেগেছে। অর্থাৎ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ৩৬ শতাংশ ইউরিয়া কম লেগেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষক হাফিজুল ইসলাম জানান, তিনি ৬০ বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের আমন ধানের খেতে ইউরিয়া ছিটিয়ে প্রতি বিঘায় তিন মণ ধান বেশি পেয়েছেন।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষক আবদুস সালাম জানান, গত বোরো মৌসুমে তিনি ২২ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধানে পানির সঙ্গে ইউরিয়া মিশিয়ে ছিটিয়েছেন। এতে ৩৫ শতাংশ ইউরিয়া সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি বিঘাপ্রতি দুই মণ ধান বেশি পেয়েছেন।
এই পদ্ধতির উদ্ভাবক আরিফ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম আলোয় তাঁর উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর কৃষিসচিব এস এম নাজমুল ইসলাম প্রযুক্তিটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের খামারে আমনের খেতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে বিজ্ঞানীদের নির্দেশ দেন। পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও দাপ্তরিকভাবে ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি।
আরিফ হোসেন বলেন, এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ধান চাষ করলে দেশে প্রতিবছর ৫ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার সাশ্রয় করা সম্ভব হতে পারে।
দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবশ্যই কৃষকেরা উপকৃত হবেন। কারণ, ইউরিয়া মেশিনের সাহায্যে পাতায় ছিটালে মাটির গুণাগুণ ঠিক থাকে এবং সার সাশ্রয় করা যায়।
বিএডিসি দিনাজপুর কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স জোনের উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, গত আমন মৌসুমে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার বেশ কয়েকজন কৃষকের খেতে আরিফ হোসেনের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ইউরিয়া প্রয়োগ করিয়ে ভালো ফলাফল পেয়েছেন। চলতি বোরো মৌসুমে দিনাজপুরে অনেক বড় বড় চুক্তিবদ্ধ কৃষকের খেতে এ পদ্ধতিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ধান চাষেইউরিয়া স্প্রে
ইউরিয়া কম ব্যবহার করেও অধিক ফলন পাওয়া যায়। এ সার স্প্রে (ছিটানো) এক বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। শুধু ধানই নয়, সব ফসলে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়।
পাতায় ছিটাতে হবে
এক কেজি ইউরিয়া সার ধানগাছের পাতায় ছিটালে মাটিতে চার কেজি প্রয়োগের সমান কাজ করে। এই প্রযুক্তিতে ব্যবহার করলে ৯০ শতাংশ বেশি কার্যকর হয়
ছিটানোর পদ্ধতি
মাটিতে ৫০ শতাংশ ইউরিয়া দিয়ে ধানগাছের পর্যাপ্ত পাতা তৈরি করে তারপর সর্বাধিক কুশি উৎপাদন পর্যায় থেকে গামুর পর্যায় সময়ের মধ্যে তিনবারে পাতায় ১৫-২০ শতাংশ ইউরিয়া (১ দশমিক ২৫ শতাংশ পটাশ দ্রবণসহ) স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয়
সাফল্য পেয়েছেন যে কৃষক
নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষক আবদুস সালাম গত বোরো মৌসুমে ২২ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। এতে ৩৫ শতাংশ ইউরিয়া
সাশ্রয় হয়েছে
কৃষিবিদ আরিফ হোসেন খান জানান, তিনি এই প্রযুক্তির নাম দিয়েছেন ‘ধান চাষের ইউরিয়া স্প্রে প্রযুক্তি’। ধান চাষে মাটিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করায় ৭০ শতাংশ অপচয় হয়। আর স্প্রে (ছিটানো) করে পাতার মাধ্যমে প্রয়োগ করলে মাত্র ১০ শতাংশ অপচয় হয়। এক কেজি ইউরিয়া সার ধানগাছের পাতায় ছিটালে মাটিতে চার কেজি প্রয়োগের সমান কাজ করে। শুধু ধানই নয়, সব ফসলে এই পদ্ধতিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া যেতে পারে।
আরিফ খান এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সার প্রয়োগের বিষয়ে বলেন, ১৪০ দিন জীবনকালের ব্রি-২৮ জাতের ক্ষেত্রে ধান রোপণের বয়স ৩০ দিন হলে প্রথমবার সার স্প্রে করতে হবে, দ্বিতীয় স্প্রে হবে ৪৫ দিনের সময় এবং তৃতীয়বার স্প্রে করতে হবে ৬০ দিনের সময়। স্প্রের দ্রবণ তৈরি করার জন্য প্রতি লিটার পানিতে ৩৮ গ্রাম ইউরিয়া এবং ১২ দশমিক ৫ গ্রাম এমওপি (পটাশ) সার মিশিয়ে সকাল বা বিকেলে স্প্রে করতে হবে। জমিতে একবার স্প্রে করতে ৪৮ লিটার দ্রবণ ব্যবহার করতে হবে। ১৬ লিটারের এক স্প্রের মেশিনে দ্রবণ তৈরি করতে ৬০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ২০০ গ্রাম পটাশ সার মেশাতে হবে। আর ১৬০ দিন জীবনকালের ব্রি-২৯ জাতের ক্ষেত্রে প্রতি লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১২ দশমিক ৫ গ্রাম পটাশ মেশাতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম স্প্রে ৪০ দিনের সময়, দ্বিতীয় স্প্রে ৫৫ দিনের সময় এবং তৃতীয় স্প্রে ৭০ দিনের সময় করতে হবে।
আরিফ খান আরও বলেন, এই প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মূল বিষয় বা সূত্র হলো, মাটিতে ৫০ শতাংশ ইউরিয়া দিয়ে ধানগাছের পর্যাপ্ত পাতা তৈরি করে তারপর সর্বাধিক কুশি উৎপাদন পর্যায় থেকে গামুর পর্যায় (হেডিং স্টেজ) সময়ের মধ্যে তিনবারে পাতায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ইউরিয়া (১ দশমিক ২৫ শতাংশ পটাশ দ্রবণসহ) স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয়। বোরো মৌসুমে রোপণের সময় ধানের চারার বয়স ৩৫-৪৫ দিনের মধ্যে থাকলে ভালো হবে। এলাকা, মৌসুম বা ধানের জাতভিত্তিক স্প্রের সময় কিছু হেরফের হতে পারে। সময়টি ধানের জাতের জীবনকালের ওপর এবং ধানগাছের পাতার রং দেখে নির্ধারণ করতে হবে।
আরিফ হোসেন বলেন, সংকটকালীন কৃষকেরা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পেতে পারেন। এ সময়ে বেশি জমিতে কম সার ছিিটয়ে সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার কৃষক বাবুল চন্দ্র রায়। গত বছর তিনি নয় বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছিলেন। ওই সময় ধান রোপণকালে ও পরে বিঘাপ্রতি ২৫ কেজি ইউরিয়া সার সনাতন পদ্ধতিতে ছিটিয়েছেন। কিন্তু এ বছর ইউরিয়া সার পানিতে মিশিয়ে মেশিন দিয়ে পাতায় প্রয়োগ করায় বিঘাপ্রতি ১৬ কেজি ইউরিয়া লেগেছে। অর্থাৎ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ৩৬ শতাংশ ইউরিয়া কম লেগেছে।
ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষক হাফিজুল ইসলাম জানান, তিনি ৬০ বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের আমন ধানের খেতে ইউরিয়া ছিটিয়ে প্রতি বিঘায় তিন মণ ধান বেশি পেয়েছেন।
নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষক আবদুস সালাম জানান, গত বোরো মৌসুমে তিনি ২২ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধানে পানির সঙ্গে ইউরিয়া মিশিয়ে ছিটিয়েছেন। এতে ৩৫ শতাংশ ইউরিয়া সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি বিঘাপ্রতি দুই মণ ধান বেশি পেয়েছেন।
এই পদ্ধতির উদ্ভাবক আরিফ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম আলোয় তাঁর উদ্ভাবিত প্রযুক্তি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর কৃষিসচিব এস এম নাজমুল ইসলাম প্রযুক্তিটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের খামারে আমনের খেতে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করতে বিজ্ঞানীদের নির্দেশ দেন। পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও দাপ্তরিকভাবে ফলাফল এখনো পাওয়া যায়নি।
আরিফ হোসেন বলেন, এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ধান চাষ করলে দেশে প্রতিবছর ৫ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার সাশ্রয় করা সম্ভব হতে পারে।
দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবশ্যই কৃষকেরা উপকৃত হবেন। কারণ, ইউরিয়া মেশিনের সাহায্যে পাতায় ছিটালে মাটির গুণাগুণ ঠিক থাকে এবং সার সাশ্রয় করা যায়।
বিএডিসি দিনাজপুর কন্ট্রাক্ট গ্রোয়ার্স জোনের উপপরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, গত আমন মৌসুমে তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার বেশ কয়েকজন কৃষকের খেতে আরিফ হোসেনের উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ইউরিয়া প্রয়োগ করিয়ে ভালো ফলাফল পেয়েছেন। চলতি বোরো মৌসুমে দিনাজপুরে অনেক বড় বড় চুক্তিবদ্ধ কৃষকের খেতে এ পদ্ধতিতে ইউরিয়া সার ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ধান চাষেইউরিয়া স্প্রে
ইউরিয়া কম ব্যবহার করেও অধিক ফলন পাওয়া যায়। এ সার স্প্রে (ছিটানো) এক বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। শুধু ধানই নয়, সব ফসলে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যায়।
পাতায় ছিটাতে হবে
এক কেজি ইউরিয়া সার ধানগাছের পাতায় ছিটালে মাটিতে চার কেজি প্রয়োগের সমান কাজ করে। এই প্রযুক্তিতে ব্যবহার করলে ৯০ শতাংশ বেশি কার্যকর হয়
ছিটানোর পদ্ধতি
মাটিতে ৫০ শতাংশ ইউরিয়া দিয়ে ধানগাছের পর্যাপ্ত পাতা তৈরি করে তারপর সর্বাধিক কুশি উৎপাদন পর্যায় থেকে গামুর পর্যায় সময়ের মধ্যে তিনবারে পাতায় ১৫-২০ শতাংশ ইউরিয়া (১ দশমিক ২৫ শতাংশ পটাশ দ্রবণসহ) স্প্রের মাধ্যমে প্রয়োগ করতে হয়
সাফল্য পেয়েছেন যে কৃষক
নাটোরের সিংড়া উপজেলার কৃষক আবদুস সালাম গত বোরো মৌসুমে ২২ বিঘা জমিতে ব্রি-২৯ জাতের ধানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। এতে ৩৫ শতাংশ ইউরিয়া
সাশ্রয় হয়েছে
‘‘এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে ধান চাষ করলে দেশে প্রতিবছর ৫ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার সাশ্রয় করা সম্ভব হতে পারে
আরিফ হোসেন
বিভাগীয় যুগ্ম পরিচালক, বিএডিসি রাজশাহী
No comments