মালাওয়িতে ‘বাল্যবিবাহ’ নিষিদ্ধ, বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮
দক্ষিণ-পূর্ব
আফ্রিকার দেশ মালাওয়িতে বাল্যবিবাহ ‘নিষিদ্ধ’ করতে দেশটির পার্লামেন্টে
সর্বসম্মতিক্রমে একটি আইন পাস করা হয়েছে। দেশটিতে মেয়েদের ন্যূনতম বয়স ১৮
বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। মালাওয়িতে অর্ধেক মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার। এ
আইনকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির নারী অধিকার সংগঠনগুলো। এ পদক্ষেপকে মালাওয়ি
মেয়েদের জন্য মহান একটি দিন বলে মন্তব্য করেছেন অধিকার কর্মীরা। এ খবর
দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি মালাওয়ি।
নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, হতদরিদ্র এ দেশটির উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে
যুগান্তকারী এ সিদ্ধান্ত। আইনটি পাসে অন্যতম ভূমিকা রাখা পার্লামেন্ট সদস্য
জেসি কাবউয়িলা বলেন, এ আইনটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের দেশে
বাল্যবিবাহ অনেক বড় একটি সমস্যা। পরিসংখ্যানে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি
বাল্যবিবাহের ঘটনার দিক থেকে অন্যতম বাংলাদেশ। ১৮ বছর বয়সে পা রাখার আগেই
দেশটির অর্ধেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। আর, ১৫ বছর বয়সে ৮ জনে ১ জন মেয়ে বিয়ে
করে। বাল্যবিবাহের কারণে শিক্ষা ও অন্যান্য অধিকার থেকে মেয়েরা শুধু
বঞ্চিতই হয় না, একই সঙ্গে সন্তান জন্মদানের সময় তারা মাতৃত্বকালীন মৃত্যু
বা গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সমূহ ঝুঁকিতে থাকে। কারণ, এতো অল্প বয়সে তাদের শরীর
সন্তান-ধারণের জন্য সমর্থ হয় না। অল্প বয়সে বিয়ের কারণে আরও বেশি ঘরোয়া
সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। পার্লামেন্ট সদস্য
জেসি এ বিষয়গুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাল্যবিবাহের সমস্যা থাকলে, আমরা
উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করতে পারি না। তিনি আরও বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন দেশের
উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক এবং নারীরা যদি শিক্ষিত না হয়, তাদের
ক্ষমতায়ন সম্ভব নয়। বর্তমানে দেশটিতে পিতামাতার অনুমতি সাপেক্ষে ১৫ বা ১৬
বছর বয়সে মেয়েরা বিয়ে করতে পারে। কিন্তু, অনেকেই আরও কম বয়সে বিয়ে করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু আইনের প্রয়োগে বাল্যবিবাহ রোধ করা সম্ভব হবে না। এ
জন্য প্রয়োজন গণ-সচেতনতা।
No comments