জাতিসংঘের কোন প্রতিনিধিকে এখনই ঢাকায় চায় না সরকার
দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুনের উদ্যোগের বিষয়ে সরকার অবহিত। তবে এখনই তার কোন প্রতিনিধিকে ঢাকায় চায় না সরকার। নীতিনির্ধারকরা মনে করেন গণমাধ্যমে বিষয়গুলো যেভাবে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে ‘পরিস্থিতি ততটা নাজুক নয়’। তাছাড়া, ৫ই জানুয়ারি নির্বাচনের আগের অবস্থা আর সেই নির্বাচনের বছরপূর্তির পরের অবস্থাও এক নয়। সরকার পতনে বিরোধী জোটের টানা কর্মসূচি, দেশব্যাপী সংঘাত-সহিংসতা এবং শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ছেড়ে অফিসে অবস্থানে সরকার ও শাসক জোটে ‘উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা থাকলেও’ সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই মনে করেন নীতিনির্ধারকরা। বিএনপি আন্দোলনের ডাক দিয়ে সন্ত্রাস করছে এবং সেখানে নিরীহ লোকজন হতাহত হচ্ছে শাসক জোটের বরাবরের এমন অভিযোগের পুনরুল্লেখ করে সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা গতকাল মানবজমিনকে বলেন, কয়েক বছর ধরে বিশ্বের দেশে দেশে চরমপন্থিদের উত্থানের চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ কঠোর প্রশাসনিক অ্যাকশনে তাদের মোকাবিলা করছে। অনেকে মারা পড়ছে। জাতিসংঘসহ সবাই এতে ওয়াকিবহাল। বাংলাদেশে চরমপন্থিদের ছায়া পড়েছে এবং বিএনপির কর্মসূচিতে তার ছাপ রয়েছে মন্তব্য করে সরকারের প্রভাবশালী ওই প্রতিনিধি বলেন, বিদেশীরাও এটা বুঝে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ এখনও বুঝাপড়ার মধ্যে রয়েছে জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট এক প্রতিনিধি বলেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় সরকার এই মুহূর্তে জাতিসংঘের কোন প্রতিনিধিকে ঢাকায় স্বাগত জানাতে প্রস্তুত নয়। আর সরকার না চাইলে আন্তঃরাষ্ট্রীয় ওই সংস্থা কোন উদ্যোগই এগিয়ে নিতে পারবে না। পরবর্তীতে কি হবে জানি না। যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের চাপ রয়েছে স্বীকার করে ওই প্রতিনিধি বলেন, সরকার বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ের সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরার চেষ্টা করবে। সেখানে জাতিসংঘের প্রতিনিধিও থাকবেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা গতকাল বলেন, বিদেশী বন্ধু-উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে সহিংস কর্মকা- তুলে ধরার কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আজ ‘বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস লুণ্ঠিত মানবতা’ শীর্ষক রাজধানীতে একটি চিত্র প্রদর্শনী হবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত ওই কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। সেখানে ঢাকাস্থ বিদেশী কূটনীতিকদের অনেককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
No comments