দিল্লিতে বসেই ভারতকে হুশিয়ারি চীনা থিঙ্কট্যাঙ্কের
পাকিস্তানের সঙ্গে যেন চীনকে গুলিয়ে ফেলা না হয়। ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর চীনেরও আকাশ-পাতাল পরিবর্তন ঘটেছে। ভারত যেন সেটা মনে রাখে। সিকিম সীমান্তের কাছে ডোকলামে দু’দেশের সেনা যখন মুখোমুখি দাঁড়িয়ে, ঠিক সেই সময় নয়াদিল্লিতে বসেই এমন হুমকি দিয়েছে চীনের একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পররাষ্ট্র ও অর্থনীতি নির্ধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ওই থিঙ্কট্যাঙ্কের শীর্ষ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সম্প্রতি দিল্লি সফর করেছে। যার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল, চলতি অচলাবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের কড়া বার্তা পৌঁছে দেয়া। খবর আনন্দাবাজর পত্রিকার। চীনা সূত্রের দাবি, ভারতীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মন্তব্যের প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে বেইজিংয়ে। অরুণ জেটলি বলেন, ভারত সেই ১৯৬২ সালে বসে নেই। আমরা এ কথাটাই ভারতীয় নেতৃত্বকে মনে করিয়ে দিতে চাইছি যে, গত পঞ্চান্ন বছরে চীনেও বহু পরিবর্তন হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের দাবি, ‘ডোকলাম আমাদের ভূখণ্ডে অবস্থিত। ভারতের কোনো অধিকার নেই এখানে নাক গলানোর।’ ভারতের পাল্টা বক্তব্য, ‘ভারত, চীন এবং ভুটানের ত্রিপাক্ষিক সীমান্ত রেখা নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে আমাদের মতপার্থক্য রয়েছে। ডোকলাম চীন ভূখণ্ডে নয়, সিকিম-ভুটান সীমান্তে। সেখান থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়ি করিডর। সে কারণেই ওখানে বেইজিংয়ের পরিকাঠামো তৈরির কাজকর্ম ভারতের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক।’
চীনা সূত্রের বক্তব্য, ‘দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের প্রতি ইতিবাচক বার্তা দিয়েই শুরু করেন। কিন্তু আলোচনার টেবিলে এমন ছোটখাটো সব সমস্যার কথা তোলেন, যাতে বড় ছবিটাই অস্পষ্ট হয়ে যায়! চীন মনে করে, ওই সমস্যাগুলো আমলাস্তরেই মিটিয়ে ফেলা যায়। আমাদের সরকার চায় ধাপে ধাপে সমস্যার সমাধান করতে। কিন্তু মোদি একসঙ্গে সব মতপার্থক্যকে সামনে আনেন। ফলে চীনা নেতৃত্বের ধারণা হয়েছে, ভারত আসলে সমাধান নয়, ওই সব সমস্যা জিইয়ে রাখতে চায়।’ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বক্তব্য উড়িয়ে বলেছে, চীন যেগুলোকে ছোটখাটো বলছে, তার মধ্যে কাশ্মীরের নাগরিকদের স্টেপলড ভিসা দেয়া বা অরুণাচলকে বারবার চীনা মানচিত্রে দেখানোর মতো গুরুতর ব্যাপার আছে। এগুলোকে বাদ দিয়ে আলোচনা সম্ভবই নয়। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ঘাটতি প্রসঙ্গে বেইজিংয়ের দাবি, ভারতীয় পণ্যের মেধাস্বত্বের বিষয়টি এতটাই জটিল যে, চীনা বা পাশ্চাত্যের মাপকাঠিতে তা কার্যত অচল। চীন যেভাবে হৈ হৈ করে ভারতীয় বাজারে ঢুকেছে, তার সিকিভাগও ভারত সে দেশে ঢুকতে পারেনি। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেটের পুঁজিও এখন নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছে চীন। চীনা ব্র্যান্ড ‘ওপো’ এবং ‘ভিভো’ যথাক্রমে টিম ইন্ডিয়া ও আইপিএল ক্রিকেটের স্পনসর। অন্যদিকে সামান্য পেট খারাপ, মাথা ধরার ওষুধ পর্যন্ত রফতানি করতে গিয়ে চীনা দেয়ালে ধাক্কা খাচ্ছে নয়াদিল্লি!
No comments