গ্রুপিং-কর্মী সংকটে খুলনায় ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্রদল
চোরাকারবারি ও বিবাহিতদের নিয়ে খুলনা মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি করায় দৃশ্যত ঝিমিয়ে পড়েছে সংগঠনের কার্যক্রম। ৯ মাসেও ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় দলের ভেতরেও ক্ষোভ রয়েছে। এছাড়া কর্মী সংকটের পাশাপাশি নেতাদের মধ্যে বিদ্যমান গ্রুপিংও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে কার্যক্রমে। ছাত্রদল নেতাদের দাবি, পুলিশ ও ছাত্রলীগের বাধায় কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। কর্মী সংকটের কারণে মাত্র দুইজন নিয়ে কলেজ কমিটি গঠনের রেকর্ড রয়েছে খোদ মহানগরেই। সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর শরীফুল ইসলাম বাবুকে সভাপতি ও হেলাল আহম্মেদ সুমনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৪০ সদস্যের মহানগর এবং আবদুল মান্নান মিস্ত্রীকে সভাপতি ও গোলাম মোস্তফা তুহিনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যের জেলা কমিটি করা হয়। সভাপতি বাবু একাধিকবার মাদক মামলায় গ্রেফতার হন এবং মান্নান বিবাহিত। ফলে দলের ভেতর তাদের নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। একাধিক কর্মীর সঙ্গে আলাপে জানা যায়, নগর ছাত্রদল ৯ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি কোনো কর্মিসভা করাও সম্ভব হয়নি। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১২টি কলেজের মধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাড়া অন্য কোনো কলেজে কোনো তৎপরতাই নেই। ২২ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে তল্লাশির প্রতিবাদে খুলনায় মহানগর ছাত্রদল আলাদাভাবে মিছিল বের করে। এক গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান সভাপতি বাবু ও সাধারণ সম্পাদক সুমন। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন কমিটির সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদার প্রিন্স ও যুগ্ম সম্পাদক তাজিম বিশ্বাস।
এছাড়া অন্য কর্মসূচিতে মহানগর কমিটির ৪০ নেতার বেশিরভাগকেই দেখা যায় না। জনতে চাইলে আলাউদ্দিন তালুকদার প্রিন্স যুগান্তরকে বলেন, মাঠপর্যায়ে নেতারা পদ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ। কেন্দ্রীয় ও মহানগরের নেতাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সিটি কলেজের ছাত্রদল কর্মী তানজির বারী হামিম বলেন, দীর্ঘদিন পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহম্মেদ সুমন যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ ও ছাত্রলীগ কলেজে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। সুষ্ঠু রাজনীতির পরিবেশ নেই কলেজগুলোয়। তিনি বলেন, ঘোষণা দিয়েও কর্মিসভা করা হয়নি। তবে নগরীর প্রত্যেক ওয়ার্ড, থানা ও কলেজ ইউনিটের কর্মীদের নিয়ে পার্টি অফিসে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। গ্রুপিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, বড় দলে গ্রুপিং থাকতেই পারে। পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ড, থানা, কলেজ ইউনিট ও নগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। এদিকে জেলা ছাত্রদলেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে তোড়জোড় নেই। জেলার ৯টি উপজেলা ও ২টি পৌরসভার ছাত্রদলের কমিটি গঠন করতে গিয়ে কর্মী সংকটের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সম্প্রতি পাইকগাছা উপজেলার শহীদ আবু মূসা ডিগ্রি কলেজে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দিয়েই কলেজ ইউনিটের কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা অনেকটা সমালোচিত হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের গোলাম মোস্তফা তুহিন বলেন, কিছু ইউনিটে আমাদের কোনো কর্মী ছিল না। নতুন করে কর্মী সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে ১৭টি কলেজ ইউনিট, পাইকগাছা, কয়রা, পূর্ব রূপসা ও বটিয়াঘাটা থানায় ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
No comments