বাংলাদেশী সন্দেহে ২০৮ বালক আটক, ব্যাঙ্গালোরে নাটকীয়তা
বাংলাদেশী
সন্দেহে আটক ২০৮ জন মুসলিম বালককে নিয়ে হুলস্থুল কা- ব্যাঙ্গালোর
ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে। এ জন্য তাদেরকে রেলওয়ে পুলিশ সেখানে আটকে রাখে ৫
ঘণ্টা। এ সময় দেখা দেয় ভীষণ বিশৃংখলা ও সহিংসতা। প্রকৃতপক্ষে ওই বালকগুলো
বাংলাদেশী নয়। তাদের বেশির ভাগই বিহারের। এর মধ্যে রয়েছে কয়েকজন প্রাপ্ত
বয়স্ক। তারা স্থানীয় সময় ১১টা ৪০ মিনিটে গুয়াহাটি এক্সেপ্রেস থেকে নামার পর
আটক করা হয়। বলা হয়, তারা বাংলাদেশী। বাংলাদেশ থেকে পাচার করে তাদেরকে
নেয়া হচ্ছে কেরালায়। এমন গুজবে তাদেরকে আটকে রাখা হয় বিকাল ৫টা পর্যন্ত। এ
খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এতে বলা হয়, পরে দেখা যায় ওই
বালকদের বয়স ৯ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। তারা মাদ্রাসা ছাত্র। বার্ষিক ছুটি
শেষে তারা কর্নাটকের বিভিন্ন মাদ্রাসায় ফিরে যাচ্ছিল। এ নিয়ে ব্যাঙ্গালোর
রেলস্টেশনের এক নম্বর প্লাটফরমে সারাদিনই উচ্চ মাত্রার নাটকীয়তা চলতে থাকে।
এতে জড়িয়ে পড়ে আরএসএস নেতাকর্মীরা, মুসলিমদের বিভিন্ন সংগঠন, এনজিওগুলোর
প্রতিনিধিরা ও শিশু পাচার বিরোধী গ্রুপগুলোর সদস্যরা। এক পর্যায়ে পাচার
বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর লাঠি নিয়ে চড়াও হয় কেউ কেউ। ফলে সৃষ্টি হয় এক
বিশৃংখল অবস্থা। তবে তুমাকুরার আমলাপুর মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হারুন
বলেছেন, এসব ছাত্রের বাড়ি বিহারের বিভিন্ন গ্রামে। তারা পবিত্র রমজানের ৬
সপ্তাহের ছুটি শেষে মাদ্রাসায় ফিরছে। তারা বিহারের কৃষাণগঞ্জ থেকে ট্রেনে
উঠেছে। কিন্তু ব্যাঙ্গালুরু ভিত্তিক একজন পাচার বিরোধী কর্মীর ফোনকলে শুরু
হয় উত্তেজনা। ওই ব্যক্তি জিআরপিতে ফোন দেন। বিশাখাপত্তম রেল স্টেশনে সোমবার
স্থানীয় সময় ৩টায় পৌঁছতেই এ ঘটনা ঘটে। সেখানে বেশ কিছু ছেলে নেমে যায়। এ
সময় তাদেরকে যেতে দিতে পুলিশের কাছে অনুরোধ জানান শিক্ষকরা। তারা রাজি হন।
কিন্তু টিটিই তাদের পরিচয় পত্র দেখতে চান। একই ঘটনা ঘটে বিজয়াওয়াদা
স্টেশনে। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে টিভি চ্যানেল ও পুলিশরা এসব ছেলেকে নিয়ে
নেয়। মুভমেন্ট ফর জাস্টিস নামের এনজিওর কর্মী আর কলিমুল্লাহ বলেন, দক্ষিণ
ভারতে শিক্ষার মান ভাল। তাই বিহার, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গের ছেলেদের
সেখানে পাঠানো হয়। এসব পরিবারের বেশির ভাগই গরিব। এমন পরিবারের সন্তানদের
সেখানে বিনামূল্যে খাবার দেয়া হয়। আইনজীবী ডি আনাস বলেন, পুলিশের কাছে
অভিযোগের কোনো কপি না থাকলেও তারা একটি ফোনকলের ওপর ভিত্তি করে ছেলেগুলোকে
আটক করেছে। এ সময় স্থানীয় একটি ট্রাস্প থেকে তাদেরকে খাবার ও পানি দেয়া
হয়েছে। ওদিকে এম ধানুশ ও অন্য দু’জন স্বেচ্ছাসেবক এসব ছেলেকে বাংলাদেশ থেকে
পাচার করা হচ্ছে বলে জিআরপি থানায় অভিযোগ করে। ধানুশ কবলেন, আমরা যখন এই
অভিযোগ জমা দিচ্ছি তখন ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের বিপরীতে আমাদের তিনজন
সদস্যের ওপর ১৫-১৬ জনে আক্রমণ করেছে।
No comments