'অর্থমন্ত্রীকে আবারও বলির পাঠা করা হয়েছে'
'সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচার হয়নি, লেনদেন হয়েছে' সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মাত্র কয়েকদিন আগে সিলেটের এক সভায় অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, সুইস ব্যাংকসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারে আমরাও দায়ী। এধরনের স্ববিরোধী বক্তব্য আওয়ামী নেতাদের চিরাচরিত টেকনিক। রিজভী বলেন, আসলে ক্ষমতাসীনদের উচ্চপর্যায়ের অনেক নেতারাই এই লাখ লাখ কোটি টাকা পাচারে জড়িত। তাদের চাপেই অর্থমন্ত্রীকে আগের কথা থেকে সরে আসতে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে আবারও বলির পাঠা করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী। রিজভী বলেন, এটা সর্বজনবিদিত যে, সরকারি ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুটপাটে শুন্য হয়ে গেছে। সরকারের লুটপাট আর দুর্নীতিতে তারা এখন টালমাটাল হয়ে গেছেন। সেদিন আর বেশি দূরে নয়-লুটপাটের জন্য একদিন জনগণের কাছে জবাবদিহি করতেই হবে। অর্থমন্ত্রী যতোই ‘জাহাজমার্কা বাজেট’ দিন না কেন, দেশের অর্থনীতি যে ফাঁকা, ফাঁপা শুন্যগর্ভ তা দেশ-বিদেশের কারো নিকট অজানা নয়।
তাই যতই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করেন না কেন তাতে লাভ হবে না। তিনি বলেন, আজকে একটি দৈনিক পত্রিকায় নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ-পদোন্নতি কমিটির যিনি প্রধান তিনি গণবদলী ও পদোন্নতির ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানেন না খবর প্রকাশিত হয়েছে। ইসির নিয়োগ, পদোন্নতি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পূণর্বিন্যাস এবং দক্ষতা উন্নয়ন কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এ বিষয়ে ইসি’র সচিবকে নোট দিয়েছেন। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা দেশবাসীর মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। এতে স্বয়ং ইসি’র অনেক কর্মকর্তাও ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। এই ঘটনায় কমিশনের শুধু ভাবমূর্তিই নষ্ট হয়নি বরং এতে নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। রিজভী আরও বলেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ডিসেম্বর থেকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার প্রাক্কালে অশুভ উদ্দেশে এই পরিকল্পিত গণবদলী ও পদোন্নতির ঘটনা ঘটানো হয়েছে কিনা সেটি নিয়ে সকলের মনে বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের এই ব্যাপক পরিবর্তন একটি সুদুরপ্রসারী নীল নকশারই অংশ। আগামী নির্বাচনগুলোকে প্রভাবিত করার জন্যই একটা চক্রান্তজাল বিস্তারের আলামত কিনা সেটাই দেশের ভোটারদেরকে এখন ভাবিয়ে তুলেছে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে রিজভী বলেন, সুন্দরবনের সুরক্ষাকে বিপন্ন করছে সরকারের একগুঁয়েমি নীতি। কয়লা পুড়িয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে জাগ্রত দেশবাসী প্রতিবাদমূখর। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মানববসতি অনিবার্য ধ্বংসের মুখে পতিত হবে। প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র নির্মূল হয়ে যাবে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্য চরম হুমকির মুখে পড়বে। কিন্তু সরকার নাছোড়বান্দার মতো দেশের পরিবেশ, জলবায়ু এবং মানুষকে ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। তিনি বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের যে মহাদুর্নীতি সেটির আরেকটি বড় সুযোগ সৃষ্টি হবে এই রামপাল প্রকল্পে, সেজন্য সরকার এখন মরিয়া হয়ে প্রতিবাদকারীদের ওপর চালাচ্ছে নিষ্ঠুর উৎপীড়ণ। রক্ত ঝড়াচ্ছে দেশ ও পরিবেশ বাঁচানোর লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারীদের ওপর।
No comments