সিরিয়ার ধ্বংসস্তুপে নিমজ্জিত বাসিন্দাদের একসঙ্গে ইফতার
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের অদূরেই অবস্থিত দৌমা এলাকা। চলমান যুদ্ধে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এ এলাকার বেশিরভাগই এখন ধ্বংসস্তুপে নিমজ্জিত। কিন্তু এরই মধ্যে সেখানকার বাসিন্দারা একসঙ্গে ইফতার করার ব্যবস্থা করেছেন। খবর বিবিসি। খবরে বলা হয়, সিরিয়ার অবরুদ্ধ শহর দৌমার বাসিন্দারা একসঙ্গে ইফতার করছেন এমন কিছু ছবি অনলাইনে ব্যাপক শেয়ার হচ্ছে। বিবিসি ট্রেন্ডিং তার চিত্র তুলে এনেছে। সিরিয়ান আদালেহ ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান ইফতারের এ ব্যবস্থা করেছেন। রমজানের শেষ দশ দিন প্রতিষ্ঠানটি দৌমার বাসিন্দাদের খাবার সরবরাহ করবে। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রতি পূর্বাঞ্চলীয় ঘৌটা এলাকায় সহায়তা দেবার লক্ষ্যে সিরিয়ান আদালেহ ফাউন্ডেশনের কাজ শুরু হয়। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম শুরু করে। সিরিয়ায় চলমান অবরোধ-সংঘর্ষের জেরে সেখানে খাদ্যের দাম অনেক চড়া। ইফতারির জন্য যে খাবার দৌমায় সরবরাহ দেয়া হয় সেটি তৈরি করা হয় পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা ঘৌটায়। প্রায় চার বছর ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে দৌমা এলাকা। ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর গত মাসে প্রথমবারের মতো একটি সাহায্য সংস্থা দৌমায় প্রবেশ করতে পারে।
বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এই এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করে জায়েশ-আল-ইসলাম, আর গত কয়েক বছর ধরে এই এলাকাকে লক্ষ্য করে সিরিয়া সরকারি বাহিনী অনবরত বিমান ও বোমা হামলা চালিয়ে আসছে। সিরিয়ান আদালেহ ফাউন্ডেশনের কল্যানে শহরের প্রায় একশোর মতো বাসিন্দা একসঙ্গে ইফতার গ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে একজন বলছেন "বিমান হামলার ভয়ে আমরা মসজিদে লুকিয়ে ইফতার করেছি অনেক সময়"। "বিমান হামলার ভয়ে আমরা সাধারণত এ ধরনের আয়োজন করি না। কিন্তু সাম্প্রতিক চুক্তির সুবিধা আমরা নিচ্ছি" -মানবাধিকার সংস্থার একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে এমনটাই বলছিলেন। এদিকে দৌমায় ধ্বংসস্তুপে একসঙ্গে শহরবাসীর ইফতার করার ছবিগুলো অনলাইনে হাজার হাজার মানুষ শেয়ার করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব ছবি ভাইরাল হয়েছে। সিরিয়ার একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট টুইটারে ছবিগুলো পোস্ট করে লিখেছেন "দৌমায় মৃত্যুর পরিবর্তে আজ জীবনের ছোঁয়া'। আরেকজন টুইটার ব্যবহারকারী এই খাবারকে বর্ণনা করছে 'ইফতার অব হিরোজ' বলে। "অনেক জটিল পরিস্থিতির মধ্যে এই মানুষগুলো মানুষের জন্য কাজ করছে এবং অন্যদের জন্যও উদাহরণ তৈরি করছে"-লিখেছেন আরেকজন। ছবিগুলো অনলাইনে প্রকাশের পর হাজার হাজার মানুষ এটি শেয়ার করছে ও নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। ছবিগুলো শেয়ার করে রোজাদারদের সুস্বাস্থ্যও কামনা করেছেন সিরিয়ার নামকরা কজন সাংবাদিকও। অনেক ব্যবহারকারী এটাও বলেছেন যে ছবিগুলোতে যে শিশুদের দেখা যাচ্ছে তারা সবাই যুদ্ধে পরিবার-পরিজন হারানো এতিম।
No comments