চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭.২৪% হবে : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ হবে। তিনি আজ মঙ্গলবার সংসদে সরকারি দলের মামুনুর রশীদ কিরনের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাবের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানান। মন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে (২০১৭-১৮) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১১ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, উৎপাদন, রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণকে উৎসাহিত করতে সম্ভাবনাময় এলাকাসমূহে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ১শ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। ২০১৭ সালের মে পর্যন্ত ২২টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদনের প্রদান করা হয়েছে। ৫৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য স্থান নির্বাচন এবং ৭৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। মুহিত বলেন, এছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আরো ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে। আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতায় বিদ্যুৎ, গ্যাস প্রাপ্তিতে বিলম্ব, বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকরণে প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতা, নিষ্কণ্টক জমির অভাব, ঋণের উচ্চ সুদের হার ইত্যাদি বাধা অপসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, রেকর্ড ও রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি আধুনিকায়নের কার্যক্রম দ্রুততর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আর্থিক খাতে সংস্কারের মাধ্যমে ঋণের সুদের হার হ্রাস পাশাপাশি বিদেশ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি সীমিত রাখাসহ ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ব্যক্তিখাতে ঋণের প্রবাহ নির্বিঘ্ন রাখা হয়েছে। আর্থিক খাতে পরিচালন পদ্ধতিসহ দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ঋণের সুদের হার কমিয়ে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে বিনিয়োগ বোর্ড ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের কার্যক্রমকে একীভূত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিআইডিএ) গঠন করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধি সঞ্চারী (ট্রান্সফরমেশনাল প্রজেক্ট) ১০টি বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মুহিত বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিতকরণে শ্রম, সেবা ও পণ্যের উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্পসমূহের কাজ চলমান রয়েছে। মুহিত বলেন, শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে হচ্ছে ‘ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনএসডিএ) গঠন করা হয়েছে। দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রমে নিরবচ্ছিন্ন অর্থের যোগান নিশ্চিত করতে ‘ন্যাশনাল হিউমেন রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এনএইচআরডিএফ) গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুতায়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
No comments