ঘাতককে গণপিটুনি থেকে বাঁচালেন মসজিদের ইমাম
লন্ডনের ফিন্সবুরি পার্কে মুসল্লিদের ওপর ভ্যান চালিয়ে দেয়ার ঘটনায় সন্দেহভাজন ওই ভ্যানচালককে ক্ষিপ্ত জনগণের রোষানল থেকে বাঁচিয়েছেন মসজিদের এক ইমাম। উত্তেজিত জনতার হাতে পড়লে গণপিটুনিতে হয়তো মৃত্যুই হতো তার। তখন আর পুলিশের পক্ষে ওই চালককে জীবিত উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হতো না। কিন্তু তা হতে দেননি ইমাম মোহাম্মদ মাহমুদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট জানায়, পুলিশ পৌঁছার আগে ক্ষিপ্ত জনতা তাকে ঘিরে ফেলে এবং তার শরীরের যেখানে খুশি সেখানে আঘাত করতে শুরু করে। উত্তপ্ত ওই পরিস্থিতির মধ্যে মাথা ঠাণ্ডা রেখে কাজ করতে দেখা গেছে ওই ইমামকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, পুলিশ না আসা পর্যন্ত গণপিটুনির হাত থেকে হামলাকারী ভ্যানচালককে সুরক্ষা দেন তিনি। পরে পুলিশ এসে ভ্যানচালককে গ্রেফতার করে। পুলিশের ধারণা, ওই চালক একাই হামলা চালিয়েছে।
হামজা নিমানি নামের এক মুসল্লি বলেন, ঘটনার পর রক্তমাখা রাস্তায় কয়েকজনকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। এ সময় একজন লোককে প্রায় শতাধিক মানুষ ঘিরে ফেলে। এতে মসজিদের মধ্যে থাকা প্রায় ৩ শতাধিক মুসল্লি স্তম্ভিত হন এবং চিৎকার দিয়ে ওঠেন। আবদুল নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ঘটনার পরপরই জনগণ ওই ভ্যানচালকের ওপর চড়াও হয়। তখন তিনি ‘আমাকে সাহায্য করুন’ বলে চিৎকার দিতে থাকে। সে পালানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু আমরা তাকে ধরে রেখেছিলাম।’ আবদুল আরও বলেন, ‘আরেকটু হলে সে হয়তো মারা যেত, কারণ সবাই তাকে কিল-ঘুষি দিচ্ছিল। তখনই ইমাম এসে বলেন, তাকে আর মারবেন না। পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত তাকে ধরে রাখুন।’ পরে পুলিশ এসে ওই ভ্যানচালককে আটক করলে সে হাসছিল এবং মুসলিমদের নিয়ে বিদ্রƒপাত্মক কথা বলছিল। ইতিমধ্যে লন্ডনের মুসলিম ওয়েলফেয়ার হাউস থেকে ইমাম মাহমুদকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। মুসলিম ওয়েলফেয়ারের প্রধান নির্বাহী তৌফিক কাসিমী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মোহাম্মদ মাহমুদের সাহস ও নির্ভীকতার কারণে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি শান্ত করা সম্ভব হয়েছে, আরও বেশি প্রাণহানি ও রক্তাক্ততা ঠেকানো গেছে।’
No comments