চীনকে রুখতে ভারতের ‘ফ্রিডম করিডোর’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সাবরমতীর তীরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে দোলনায় পাশে বসিয়ে অন্তরঙ্গতার বার্তা দিয়েছিলেন। তবে এখন তিনি ভিন্ন পথে হাঁটছেন। মঙ্গলবার গান্ধীনগরে ‘আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক’-এর বার্ষিক সাধারণ সভার বৈঠকে যোগ দেন মোদি। আফ্রিকার বাইরের কোনো দেশে এ ধরনের বৈঠক এটাই প্রথম। এদিন মোদির বক্তব্যের মূল কথা চীন যদি ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়, তবে ভারতও আফ্রিকার দেশগুলোকে নিয়ে ‘ফ্রিডম করিডোর’ তৈরি করবে। আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর দিয়ে যাওয়া চীনের মহাসড়ক প্রকল্প ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’-এর পাল্টা প্রয়াস হিসেবেই একে ধরা হচ্ছে। ভারত মহাসাগরের তীরে অবস্থিত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে নিয়ে গড়ে উঠবে ‘ফ্রিডম করিডোর’। এত যুক্ত হবে মোজাম্বিক, তানজানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের পাশে থাকছে জাপানও। দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা তৎপরতার বিরুদ্ধে এ করিডোর হবে পাল্টা কূটনীতি। আফ্রিকার ৫৪টি দেশের সবার যে সমান আর্থিক অবস্থা, তা নয়। কিছু দেশের আর্থিক হাল খারাপ,
কোথাও আবার বৃদ্ধির হার ৭-৮ শতাংশ। মোজাম্বিকের মতো দেশে তেল ও গ্যাসের সমৃদ্ধি আফ্রিকার সামগ্রিক ছবিকেই বদলে দিচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন সংস্থা আফ্রিকায় তেল ও গ্যাসের ক্ষেত্রে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান বেশ কয়েকবার আফ্রিকার নানান প্রান্তে ছুটে গেছেন। তেল ও গ্যাসের ক্ষেত্রে গত বছর ৪০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে ভারত। আগামী বছর আরও ৬০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের কথা। ‘আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক’-এর আর্থিক অবস্থা এখন তাই ভালো। ভারতও এ ব্যাঙ্কে নিজেদের বিনিয়োগ বাড়াতে তৎপর। মোদি জানালেন, ভারত আফ্রিকায় পঞ্চম বৃহত্তম লগ্নিকারী। গত ২০ বছরে ভারত ৫৪০০ কোটি ডলার লগ্নি করেছে। চীন নিয়ে ভারতের উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। দক্ষিণ চীন সাগর এলাকায় বেইজিংয়ের তৎপরতায় শুধু ভারত নয়, উদ্বিগ্ন জাপানও। এদিকে আফ্রিকার যে দেশগুলো ভারত মহাসাগরের দিকে, সেগুলোর সঙ্গে কোনো সামরিক সমন্বয় ছিল না। বরং সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারতের এ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ভারত যখন চীন সম্পর্কে কট্টর মনোভাব নিতে চলেছে, আফ্রিকা মহাদেশের কিছু দেশও ভারতের ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.