রাজশাহীতে শ্রমিক ইউনিয়নের ভোটে সংঘর্ষ-গোলাগুলি

রাজশাহীতে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলি হয়েছে। এতে সাংবাদিকসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। বুধবার গভীর রাতে ভোট গণনার সময় এ ঘটনা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্বাচনী বোর্ডের প্রধানসহ তিন সদস্যকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ চলে। ব্যালট পেপার বাছাই শেষ হয় রাত ১টার দিকে। এরপর ভোট গণনা শুরু হলে সভাপতি প্রার্থী কামাল হোসেন রবির সমর্থক ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক শীর্ষ নেতার নেতৃত্বে সেখানে হামলা চালিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় আরেক সভাপতি প্রার্থী রফিকুল ইসলামের সমর্থক এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাহাতাব হোসেন চৌধুরীর কর্মীরা বাধা দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয়পক্ষ ধারালো ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার ছবি তুলতে গেলে এটিএন বাংলার রিপোর্টার সুজাউদ্দিন ছোটনকে পিটিয়ে তার ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, পরাজয়ের শংকায় রাত সাড়ে ১২টার দিকে সভাপতি প্রার্থী কামাল হোসেন রবি ও তার লোকজন ভোট গণনার আগেই তাকে বিজয়ী ঘোষণার দাবি জানান।
আমি তাতে রাজি না হলে তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করা হয়। তিনি জানান, সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর আধা ঘণ্টার মধ্যে ফিরে এসে রবির লোকজন এ তাণ্ডব চালায়। এ সময় বাধা দিতে গেলে নির্বাচন কমিশনারসহ তার লোকজনকে মারপিট ও ভাংচুর চালিয়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলে বলে জানান মাহাতাব হোসেন। তবে এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কামাল হোসেন রবিকে পাওয়া যায়নি। এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট অংকুর সেন, সদস্য অ্যাডভোকেট আলী হোসেন পেয়ারা ও জহুরুল ইসলামকে আটক থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাতভর তাদের থানাতেই রাখা হয়। থানা হেফাজতে থাকা প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট অংকুর সেন বৃহস্পতিবার যুগান্তরকে জানান, ভোট গণনায় দেরি হওয়ায় সরকার দলীয় ক্যাডাররা হামলা চালায়। তারা সশস্ত্র অবস্থায় এসে ব্যালট পেপারও ছিনতাই করে ত্রাস সৃষ্টি করে। পরে নিরাপত্তার কথা বলে পুলিশ তাদের থানায় আটকে রেখেছে। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি শাহাদত হোসেন খান জানান, ভোট গণনা শুরুর আগেই শ্রমিকদের এক পক্ষ কেন্দ্রে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় অপর পক্ষ বাধা দিতে গেলে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর আগে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১১টি পদে ৬০ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৪৯৫ জন।

No comments

Powered by Blogger.