সেনবাগে পল্লী বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, আরেকদিকে দিনে ও রাতে সমান তালে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়ে ওঠেছে মানুষেন জীবন। বিদ্যুতের লোডশেডিং প্রচন্ড গরমে অতিষ্ঠ লোকজন। আর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, সেনবাগে চাহিদার তুলনায় তার বিদ্যুৎ পাচ্ছেন ৪ ভাগের এক ভাগ। এতে করে তারাও গ্রাহকদের নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ দিতে না পারায় প্রতিনিয়তই গালামন্দ শুনতে হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সেনবাগ জোনাল অফিসে বিদ্যুতের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানাজার (ডিজিএম) বিজয় চন্দ্রা সাহার মুখোমুখি হলে তিনি জানান, সেনবাগ মোট বিদ্যুতের চাহিদা ২৫ মেগাওয়াট। এরমধ্যে দুইটি সাব-স্টেশনে সেনবাগ রাস্তার মাথায় ১৫ ও কেশারপাড় সাব স্টেশনে ১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু উভয় সাব স্টেশনে পিক আওয়ারে বর্তমানে বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সরবরাহ মাত্র ৪ মেগাওয়াট। আর অফপিক আওয়ারে রাত ১১টা থেকে পরদিন বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাত্র ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছেন। এতে করে দিনে রাতে সমান তালে বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে বলে স্বীকার করেন তিনি। এছাড়াও সেনবাগের বিদ্যুতের লাইনগুলো অনেক পুরনো। এখানে দুইটি সাব-স্টেশন ২৪ মেগাওয়াট লোড নেওয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন। কিন্তু এ উপজেলায় মোট বিদ্যুতের চাহিদা ৩০ মেগাওয়াট। সারাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন শতভাগ হলেও এখানে শতভাগ বিদ্যুৎ পেলেও শুরু সঞ্চালন লাইনের কারণে তা গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা যায় না। এতে অনেকটা বাধ্য হয়েই লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। অপরদিকে সেনবাগে আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৬২ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহক ২৪ ঘন্টার মধ্যে দিনে-রাতে মিলে বিদ্যুৎ পান সর্বোচ্চ দেড় থেকে ২ ঘন্টা।
বাকি সময় থাকে বিদ্যুৎবিহীন। এতে করে এখানকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে লোকসান দিচ্ছে ও হয়রানি হচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, এখানে ঝড় তুফানের প্রয়োজন হয় না, আকাশে মেঘ দেখা দিলেই সেনবাগ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এখানে প্রতি ঘন্টায় ১০ থেকে ১৫ বারেরও বেশি লোডশেডিং হয়। এমনই লোডশেডিংয়ের ক্ষোভের কথা মোবাইল ফোনে জানান সেনবাগ উপজেলা ৭নং মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারী একরামুল হক সোহাগ। সায়েস্তানগর গ্রামের গৃহিণী রোকসানা আক্তার জানান, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে কারণে স্কুলপড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলেও বিল কিন্তু কমছে না। অপরদিকে ছমির মুন্সির হাট বাজারের ব্যবসায়ী বাহার উল্লা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যুৎ ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে তার আইপিএসটি পর্যন্ত ভালো চার্জ হচ্ছে না। এতে করে কোনো ধরণের কাজ-কর্ম করতে না পারায় ব্যবসা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

No comments

Powered by Blogger.