২৬ হুন্ডি ব্যবসায়ী এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে
সাগর
পথে অবৈধভাবে বিদেশে লোক পাঠিয়ে টাকা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত শীর্ষ ২৬ হুন্ডি
ব্যবসায়ী এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশ পুলিশের হেডকোয়ার্টারে গঠিত
উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমনই তথ্য। চট্টগ্রাম ও
কক্সবাজারের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটি সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনটি পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। এতে কক্সবাজারের সংসদ
সদস্য বদি ও তার ভাইসহ অনেক প্রভাবশালী মহলের নাম রয়েছে। প্রতিবেদনে
উল্লিখিত হুন্ডি ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছে টেকনাফের জালিয়াপাড়ায় জাফর আলম
ওরফে টিপি জাফর, একই এলাকার জাফর সাদেক, শাহপরীর দ্বীপের হেলাল উদ্দিন,
ফাইসাল, আবদুল্লাহ, মো. জামাল, সাবরাংয়ের হারুন, আবদুস শুক্কুর, টেকনাফ
পৌরসভার ইসলাম, হামিদ হোসেন, সাবরাংয়ের মুফিজুর রহমান, টেকনাফের আবু বক্কর,
নাইট্যংপাড়ার আবু বক্কর, টেকনাফ পৌরসভার নুরুল আবসার, ঢাকার গুলশানের
জুবাইর হোসেন, চট্টগ্রামের খুলশীর পিচ্চি আনোয়ার, ইসলাম, কক্সবাজারের
আবদুল্লাহকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। মূলত এরা খুবই দুর্ধর্ষ শক্তিশালী বলে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য রয়েছে। তবে অভিযুক্তদের মধ্যে টেকনাফ
পৌরসভার চৌধুরীপাড়ার মং মং সেন কারাগারে থেকেও মানব পাচার নিয়ন্ত্রণ করে
বলে নিশ্চিত হয়েছে। অন্যদিকে ইসলাম নামের যে ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে তিনি
টেকনাফ পৌরসভার সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১
মুজিবুর রহমানের প্রধান সহযোগী বলে লেখা হয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা
জানান, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা এতটাই শক্তিশালী যে তারা সরকারের বিভিন্ন
পর্যায়ের ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে ফেলে। বিভিন্ন ঘটনায় তাদের নাম উঠে এলেও
তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় না। গোয়েন্দা পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়,
হুন্ডি ব্যবসায়ীদের নির্দেশ অনুযায়ী দেশের ৪১টি জেলা থেকে লোক সংগ্রহ করে
তাদের দালালরা। আর সমুদ্রপথে ৬০টি পয়েন্টে ট্রলারে পাচারের জন্য নিয়োজিত
থাকে তাদের একাধিক সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেট মালয়েশিয়া বসবাসকারী
বাংলাদেশী, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে থাকা কিছু অসৎ লোকের
মাধ্যমে গড়ে তুলেছে হুন্ডি ব্যবসার নেটওয়ার্ক। এরা কৌশল হিসেবে লোক পাচার
করে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপের অদূরে ৯০ ডিগ্রি বামে। স্থানীয় সূত্র জানায়,
হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়ায় তাদের সম্পদের
পাশাপাশি পরিবর্তন হয়েছে বাড়ি ঘরের চিত্রও। প্রতিটি ব্যক্তি কয়েক তলা
ভবনের মালিক। নামে বেনামে, স্ত্রীর নামে কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়
তাদের একাধিক জমি রয়েছে। রয়েছে কোটি টাকার গাড়িও। টেকনাফ পৌরসভার সংসদ
সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ মুজিবুর রহমানের
প্রধান সহযোগী ইসলাম হুন্ডি ব্যবসা করে কক্সবাজারে বেশ প্রতিষ্ঠিত। অথচ এক
সময় তার আর্থিক অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। এসব ব্যক্তির প্রত্যেকের ব্যাংক
অ্যাকাউন্টে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অবৈধভাবে হুন্ডি ব্যবসা করে তারা এখন
কোটিপতি। যেভাবে টাকা জমা হয়েছে তা খুবই অস্বাভাবিক।
প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার মানবজমিনকে বলেন, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা তৈরি করে আমরা ঢাকায় হেডকোর্য়ার্টারে পাঠিয়েছি। সেখানে ২৬ জনের নাম রয়েছে। এসব ব্যক্তি কয়েক কোটি টাকার মালিক। অবৈধভাবে লোক পাঠিয়ে এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো।
তিনি আরও বলেন, দুই একজন ধরা পড়ে এখন কারাগারে। বাকিদের বেশির ভাগই পলাতক। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি দেশের বাইরেও তাদের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে তারা হুন্ডি ব্যবসা করে। বিষয়টি পুলিশের হেডকোর্য়ার্টারকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার মানবজমিনকে বলেন, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা তৈরি করে আমরা ঢাকায় হেডকোর্য়ার্টারে পাঠিয়েছি। সেখানে ২৬ জনের নাম রয়েছে। এসব ব্যক্তি কয়েক কোটি টাকার মালিক। অবৈধভাবে লোক পাঠিয়ে এরা মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতো।
তিনি আরও বলেন, দুই একজন ধরা পড়ে এখন কারাগারে। বাকিদের বেশির ভাগই পলাতক। আমরা তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুনেছি দেশের বাইরেও তাদের পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে তারা হুন্ডি ব্যবসা করে। বিষয়টি পুলিশের হেডকোর্য়ার্টারকে জানানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
No comments