রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার লড়াইয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত জিন্দাল
২০১৬
সালে অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের
প্রার্থিতার লড়াইয়ে নামার ইঙ্গিত দিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন গভর্নর
ববি জিন্দাল। তার পিতামাতা ভারতের পাঞ্জাব থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী
হয়েছিলেন। যদি শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামেন, তবে তা
হবে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে প্রথম ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার ৪৩
বছর বয়সী এ গভর্নর সোমবার প্রেসিডেন্সিয়াল এক্সপ্লেটরি কমিটি তৈরি করেছেন।
সাধারণত, এটিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রাথমিক
পদক্ষেপ। আগামী কয়েক সপ্তাহজুড়ে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থিতা
চাওয়ার ব্যাপারে তিনি সম্ভাব্যতা যাচাই করবেন। তবে রিপাবলিকান দলে
ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধ-ডজন নেতা দলের প্রার্থিতা পেতে আগ্রহী। জুনের মাঝামাঝি
শেষ হতে যাওয়া লুইজিয়ানা রাজ্যের আইনসভার অধিবেশনের পরই নিজের চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন জিন্দাল। এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। এক
বিবৃতিতে জিন্দাল বলেন, এখন আমি ও আমার স্ত্রী চিন্তা ও প্রার্থনা করছি।
ভাবছি, আমাদের দেশের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো কি
না। যদি আমি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করি তবে আমার প্রার্থিতা হবে একটি ধারণার ওপর
ভিত্তি করে। সেটি হবে নাটকীয় রকম ভিন্ন পথ। জিন্দালই নন শুধু,
ভারতীয়-আমেরিকান সম্প্রদায় থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকজন তারকা উঠে আসছেন।
আগামী বছর সিনেটে প্রথমবারের মতো নিজেদের সম্প্রদায় থেকে একজন সদস্য দেখতে
চান ভারতীয়-আমেরিকানরা। এজন্য ডেমোক্রেট কামালা হ্যারিস এগিয়ে আছেন
প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তার মা দক্ষিণ ভারতীয় ও তার বাবা জ্যামাইকান। তবে
সরাসরি মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে লড়তে হলে জিন্দালকে আগে নিজ দল অর্থাৎ
রিপাবলিকান দল থেকে সমর্থন আদায় করতে হবে। তবে অনেক রিপাবলিকানই নিজেদের
প্রার্থিতার কথা ঘোষণা করেছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন সিনেটর টেড ক্রুজ,
র্যান্ড পল ও মার্কো রুবিও। দৌড়ে রয়েছেন সাবেক গভর্নর মাইক হাকাবি ও
কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এইচপির সাবেক প্রধান কার্লি ফিওরিনা।
জিন্দালের মতো নিজের প্রার্থিতার সম্ভাব্যতা নিরূপণে কমিটি বানিয়েছিলেন আরও
চার রিপাবলিকান প্রার্থী। এরা হলেন জেব বুশ, ক্রিস ক্রিস্টি, জন কাসিচ ও
স্কট ওয়াকার। তবে রিপাবলিকান দলের চূড়ান্ত প্রার্থিতা পেতে জিন্দালকে কেবল
ব্যাপক অর্থই জোগাড় করতে হবে না। তার আদর্শগত চরমপন্থাও পরিহার করতে হবে।
নয়তো তিনি উদারপন্থি রিপাবলিকানদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। তিনি
ইতিমধ্যে বহু কারণে অনেক ভারতীয়-আমেরিকানের সমর্থন হারিয়েছেন। অথচ এ
সমর্থনের ওপর ভর করেই তিনি কংগ্রেস সদস্য ও লুইজিয়ানার গভর্নর হয়েছিলেন। এক
বিবৃতিতে জিন্দাল লিখেছেন, ৪০ বছর আগে আমেরিকায় খালি হাতে এসেছিলেন আমার
বাবা-মা। কিন্তু তাদের মনে একটি বিশ্বাস ছিল যে, আমেরিকা হচ্ছে স্বাধীনতা ও
সম্ভাবনার দেশ। সবার সমর্থন চেয়ে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে
হবে যে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যেন তাদের পিতা-মাতার চেয়ে কম সুযোগ না
পায়। আপনি কি আমার সঙ্গে থাকবেন? কিন্তু জিন্দালের প্রেসিডেন্ট হওয়ার
সম্ভাবনা নিয়ে উৎসাহী নন অনেকেই। আমেরিকান রক্ষণশীল কলামিস্ট রোড ড্রেহের
বলেন, আপনি যদি মনে করেন, ববি জিন্দালের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ রয়েছে,
তাহলে লুইজিয়ানায় একজন রিপোর্টার পাঠান। দেখুন তার রাজ্যকে সে কি বাজে
অবস্থায় রেখেছে! এছাড়া বহু ভারতীয়-আমেরিকান জিন্দালের নিজ সংস্কৃতি বাদ
দেয়ার প্রবণতাকে পছন্দ করছেন না। এছাড়া উগ্রবাদী আদর্শ তো আছেই।
No comments