টাঙ্গাইল-৫ আসন-বিএনপির মাহমুদুল হাসানকে জয়ী ঘোষণা

আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী টাঙ্গাইল-৫ আসনের জাতীয় পার্টির সাংসদ আবুল কাশেমের সদস্যপদ বাতিল করে ওই আসনে বিএনপির প্রার্থী মাহমুদুল হাসানকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।


গতকালই এ-সংক্রান্ত গেজেট ছাপার জন্য সরকারের ছাপাখানায় পাঠানো হয়। আজ মঙ্গলবার গেজেটের কপি সংসদ সচিবালয়ে পাঠানো হবে বলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্র জানিয়েছে।
এ ছাড়া সরকারের সঙ্গে আইনবহির্ভূত ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। এনামুল হকের বিষয়ে গতকাল নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে কমিশন আবার বৈঠকে বসবে।
কমিশনের বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালত যেভাবে নির্দেশ দিয়েছেন, কমিশন সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন সচিবালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের একটি সূত্র জানায়, একজন সাংসদের আসন শূন্য ঘোষণা করে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিজয়ী ঘোষণার ঘটনা দেশে এই প্রথম ঘটল।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৫ আসনে মহাজোটের প্রার্থী আবুল কাশেম পেয়েছিলেন এক লাখ ৪৭ হাজার ১৫২ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মাহমুদুল হাসান পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ৮০৫ ভোট।
নির্বাচনের পর কাশেমকে বিল এবং ঋণখেলাপি দাবি করে মাহমুদুল হাসান ২০০৯ সালে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট ২০০৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর আবুল কাশেমের সদস্যপদ বাতিল করে মাহমুদুল হাসানকে বিজয়ী ঘোষণার নির্দেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আবুল কাশেম আপিল করেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখা হয়। এতে বলা হয়, আদালতের আদেশের কপি হাতে পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে। গত ২৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কপি নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে।
আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গতকালই সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন জমা দিয়েছেন। দুপুরের পর পিটিশনের কপি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে উচ্চ আদালতের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে ২০০৯ সালে বর্তমান জাতীয় সংসদের ভোলা-৩ আসনের নির্বাচন বাতিল এবং সরকারদলীয় সাংসদ জসিম উদ্দিনের সদস্যপদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে ওই আসনে আবার নির্বাচন হয়। তাতে সরকারদলীয় প্রার্থী নুরুন্নবী চৌধুরী সাংসদ নির্বাচিত হন। এ ছাড়া ২০১০ সালের ১৫ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট সরকারদলীয় আরেক সাংসদ মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সদস্যপদ বাতিল করে ওই আসনে নতুন করে নির্বাচনের নির্দেশ দেন। নির্বাচন কমিশন ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর আসনটি শূন্য ঘোষণা করলেও ২৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ওই গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেন। এ কারণে মহীউদ্দীন খানের সদস্যপদ এখনো বহাল আছে।

No comments

Powered by Blogger.