ফলাফল বিশ্লেষণ-সৃজনশীল প্রশ্নের ভয় কেটে গেছে by মোশতাক আহমেদ
মুখস্থবিদ্যা পরিহার করতে তিন বছর আগে যখন মাধ্যমিকে সৃজনশীল পদ্ধতির প্রশ্নপত্র চালু হয়, তখন অনেকেই এর বিরোধিতা করেছিলেন। অভিভাবকদের মধ্যেও শঙ্কা ছিল, কেউ কেউ আন্দোলন করেছেন। এ জন্য ২০১০ সালে প্রথমবার বাংলা প্রথম পত্র ও ধর্ম বিষয়ের পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হয় সৃজনশীল প্রশ্নপত্র।
আর এবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র এবং গণিত ছাড়া বাকি সব বিষয়েই সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে। ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নেওয়া বিষয়গুলোতে শিক্ষার্থীরা খুব ভালো করেছে। এমনকি এই পদ্ধতিতে নেওয়া বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে তারা আরও বেশি ভালো করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা বলছেন, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিজে বুঝে পরীক্ষার খাতায় লেখার ক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণে এসব বিষয়ে ফলও ভালো হয়েছে। এর পাশাপাশি কমে যাচ্ছে নোট-গাইডের কদর। প্র্যাকটিস বুক বা বিভিন্ন নামে গাইডবই প্রকাশিত হলেও সেখান থেকে কোনো প্রশ্ন বা অনুশীলনী পরীক্ষায় কমন পড়ছে না।
সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্রের দুটি অংশ থাকে। একটি অংশে বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্ন করা হয়, অন্য অংশে শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণী ক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য একটি প্রশ্ন চার ভাগে উপস্থাপন করা হয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন শুরুর আগে এর প্রস্তাবিত নাম ছিল ‘কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নপত্র’। শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এর নাম সৃজনশীল প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রস্তাব করেন। গতকাল এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালু হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানার আগ্রহ বেড়েছে। তারা এটাতে আনন্দ পায়। আগে মুখস্থ পদ্ধতির সময় শিক্ষার্থীরা অল্প পড়ত, এখন বেশি পড়তে হয়। বেশি জানার কারণে শিক্ষার্থীরা নিজেদের বড় বলে অনুভব করে।
এবারের ফলাফলে দেখা যায়, বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতেও শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে। পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ে সব বোর্ডেই পাসের হার ৯০ শতাংশের বেশি। কোনো কোনো বোর্ডে প্রায় ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী এই দুটি বিষয়ে পাস করেছে। ইংরেজি ও গণিত যে ভালো ফলের বড় কারণ হয়, তার প্রমাণ এবারও পাওয়া গেছে।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় এবার অতীতের মাইলফলক ভেঙে নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে। পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটো বেড়েছে। ১০টি বোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮২ হাজার ২১২ জন। শুধু এসএসসিতে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩২ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ হাজার ২৫২ জন।
এত ভালো ফলের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা প্রশাসনের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে ফল ভালো হচ্ছে। নানামুখী পদক্ষেপে রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞানসহ সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে। পাশাপাশি গণিত ও ইংরেজিতেও শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে। মূলত এ কারণেই সার্বিক ফল ভালো হয়েছে।
বিভিন্ন বোর্ডের ফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, এবার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত পদার্থ ও রসায়নের মতো কঠিন বিষয়ে প্রায় সব বোর্ডেই ভালো ফল হয়েছে। ঢাকা বোর্ডে পদার্থবিজ্ঞানে পাসের হার ৯৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও রসায়নে পাসের হার ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। রাজশাহীতে পদার্থবিজ্ঞানে ৯৮ দশমিক ৩০ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, কুমিল্লায় পদার্থে ৯৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ৮১ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। যশোরে পদার্থে ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে পদার্থে ৯২ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও রসায়নে ৯৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। মাদ্রাসায় পদার্থে ৯৯ দশমিক ৪৮ ও রসায়নে ৯৭ দশমিক ১১ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে পদার্থে ৯৩ দশমিক শূন্য ৪ ও রসায়নে ৯৫ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এই দুটি বিষয় ছাড়াও সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নেওয়া অন্য বিষয়গুলোতে এ রকম ভালো ফল হয়েছে বলে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা সোয়া তিন লাখ শিক্ষককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাঁরা সেটা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এবার ২১টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, এই বিষয়গুলোতে ভালো ফল হয়েছে। এখন বলা যায়, সৃজনশীল নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, সেটা কেটে গেছে।’
বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভয়ের বিষয় বলে পরিচিত ইংরেজি ও গণিতে একটি বোর্ড ছাড়া বাকিগুলোতে পাসের হার ৯০ শতাংশের বেশি। শুধু চট্টগ্রাম বোর্ডে গণিতে পাসের হার ৮৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
প্রকাশিত ফল অনুযায়ী বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও মেধাবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ওই বিভাগেই বেশি। আট বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ হাজার ২৫২ জন। তাদের মধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীই ৫২ হাজার ২৭৭ জন।
ভালো ফলের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের সেরা প্রতিষ্ঠান রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহা. গোলাম হোসেন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এখন শিক্ষাব্যবস্থার ওপর সবার মনোযোগ বেড়েছে। নতুন প্রশ্নপদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতাও বেড়েছে। সর্বোপরি, শিক্ষা প্রশাসনের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সার্বিকভাবে ভালো ফল হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা বলছেন, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিজে বুঝে পরীক্ষার খাতায় লেখার ক্ষমতা বেড়েছে। এ কারণে এসব বিষয়ে ফলও ভালো হয়েছে। এর পাশাপাশি কমে যাচ্ছে নোট-গাইডের কদর। প্র্যাকটিস বুক বা বিভিন্ন নামে গাইডবই প্রকাশিত হলেও সেখান থেকে কোনো প্রশ্ন বা অনুশীলনী পরীক্ষায় কমন পড়ছে না।
সৃজনশীল পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্রের দুটি অংশ থাকে। একটি অংশে বর্তমান পদ্ধতিতে প্রশ্ন করা হয়, অন্য অংশে শিক্ষার্থীদের বিশ্লেষণী ক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য একটি প্রশ্ন চার ভাগে উপস্থাপন করা হয়।
সৃজনশীল প্রশ্ন শুরুর আগে এর প্রস্তাবিত নাম ছিল ‘কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নপত্র’। শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এর নাম সৃজনশীল প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রস্তাব করেন। গতকাল এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র চালু হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে জানার আগ্রহ বেড়েছে। তারা এটাতে আনন্দ পায়। আগে মুখস্থ পদ্ধতির সময় শিক্ষার্থীরা অল্প পড়ত, এখন বেশি পড়তে হয়। বেশি জানার কারণে শিক্ষার্থীরা নিজেদের বড় বলে অনুভব করে।
এবারের ফলাফলে দেখা যায়, বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতেও শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে। পদার্থ ও রসায়ন বিষয়ে সব বোর্ডেই পাসের হার ৯০ শতাংশের বেশি। কোনো কোনো বোর্ডে প্রায় ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী এই দুটি বিষয়ে পাস করেছে। ইংরেজি ও গণিত যে ভালো ফলের বড় কারণ হয়, তার প্রমাণ এবারও পাওয়া গেছে।
আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় এবার অতীতের মাইলফলক ভেঙে নতুন মাইলফলক তৈরি করেছে। পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটো বেড়েছে। ১০টি বোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৮২ হাজার ২১২ জন। শুধু এসএসসিতে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৩২ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ হাজার ২৫২ জন।
এত ভালো ফলের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ফাহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষা প্রশাসনের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে ফল ভালো হচ্ছে। নানামুখী পদক্ষেপে রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞানসহ সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে। পাশাপাশি গণিত ও ইংরেজিতেও শিক্ষার্থীরা ভালো করেছে। মূলত এ কারণেই সার্বিক ফল ভালো হয়েছে।
বিভিন্ন বোর্ডের ফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখা যায়, এবার সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত পদার্থ ও রসায়নের মতো কঠিন বিষয়ে প্রায় সব বোর্ডেই ভালো ফল হয়েছে। ঢাকা বোর্ডে পদার্থবিজ্ঞানে পাসের হার ৯৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ ও রসায়নে পাসের হার ৯৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ। রাজশাহীতে পদার্থবিজ্ঞানে ৯৮ দশমিক ৩০ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ২৩ শতাংশ, কুমিল্লায় পদার্থে ৯৭ দশমিক ৯৭ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ৮১ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। যশোরে পদার্থে ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ ও রসায়নে ৯৮ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং চট্টগ্রামে পদার্থে ৯২ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও রসায়নে ৯৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। মাদ্রাসায় পদার্থে ৯৯ দশমিক ৪৮ ও রসায়নে ৯৭ দশমিক ১১ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে পদার্থে ৯৩ দশমিক শূন্য ৪ ও রসায়নে ৯৫ দশমিক ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এই দুটি বিষয় ছাড়াও সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে নেওয়া অন্য বিষয়গুলোতে এ রকম ভালো ফল হয়েছে বলে বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা সোয়া তিন লাখ শিক্ষককে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। তাঁরা সেটা শিক্ষার্থীদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এবার ২১টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, এই বিষয়গুলোতে ভালো ফল হয়েছে। এখন বলা যায়, সৃজনশীল নিয়ে যে শঙ্কা ছিল, সেটা কেটে গেছে।’
বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভয়ের বিষয় বলে পরিচিত ইংরেজি ও গণিতে একটি বোর্ড ছাড়া বাকিগুলোতে পাসের হার ৯০ শতাংশের বেশি। শুধু চট্টগ্রাম বোর্ডে গণিতে পাসের হার ৮৭ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।
প্রকাশিত ফল অনুযায়ী বিজ্ঞানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম হলেও মেধাবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ওই বিভাগেই বেশি। আট বোর্ডে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫ হাজার ২৫২ জন। তাদের মধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীই ৫২ হাজার ২৭৭ জন।
ভালো ফলের কারণ জানতে চাইলে ঢাকা বোর্ডের সেরা প্রতিষ্ঠান রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহা. গোলাম হোসেন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, এখন শিক্ষাব্যবস্থার ওপর সবার মনোযোগ বেড়েছে। নতুন প্রশ্নপদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সচেতনতাও বেড়েছে। সর্বোপরি, শিক্ষা প্রশাসনের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে সার্বিকভাবে ভালো ফল হয়েছে।
No comments