থানায় ফেনসিডিল ব্যবসা! by অরূপ রায়
ঢাকার সাভার মডেল থানার ভেতর থেকে ফেনসিডিল বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও কয়েকজন কনস্টেবল ফেনসিডিল ব্যবসায় জড়িত। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে আটক করা ফেনসিডিল উদ্ধার না দেখিয়ে থানায় রেখে বিক্রি করা হয়।
আবার যে পরিমাণ ফেনসিডিল আটক করা হয়, তার পুরোটা উদ্ধার দেখানো হয় না।
সাভার থানার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ এপ্রিল ভোরে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পল্টু ঘোষ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের আমিনবাজার এলাকা থেকে ৪০০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরের আশরাফুজ্জামান (৩২) ও রাজধানীর মিরপুরের সুমন (৩২)। এ ঘটনায় থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাফর ইকবাল বাদী হয়ে ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলার আরজিতে বলা হয়, আশরাফুজ্জামান ও সুমন আমিনবাজার এলাকায় বস্তার ভেতরে ফেনসিডিল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রের ভাষ্যমতে, ১১ এপ্রিল ভোরে ঢাকাগামী একটি বাস থেকে এক হাজার ৪০০ বোতল ফেনসিডিলসহ আশরাফুজ্জামান ও সুমনকে আটক করেন এসআই পল্টু ঘোষ। ওই দুই ব্যক্তি বাসেরই চালক ও সহকারী। ফেনসিডিল উদ্ধারের পর ওই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গোপন তথ্যদাতাকে (সোর্স) ২৭০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে বাকিগুলো নিয়ে থানায় যান। তিনি ৪০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে থানায় মামলা করেন। অবশিষ্ট ৭৩০ বোতল ফেনসিডিল থানায় রেখে বিক্রি করেন। পল্টু ঘোষকে ফেনসিডিল বিক্রিতে সহযোগিতা করেন কনস্টেবল হুমাযুন কবীর। ওই সোর্স সাভার ব্যাংক কলোনির বাসিন্দা। তিনিও একজন চিহ্নিত ফেনসিডিল ব্যবসায়ী।
সূত্র জানায়, ঢাকাগামী একটি ট্রাকে (ঢাকা-মেট্রো-নম্বর-১৬-২২৭৮) ফেনসিডিল রয়েছে—সোর্সের মাধ্যমে এমন তথ্য পেয়ে এসআই পল্টু ঘোষ ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ট্রাকটি ধাওয়া করেন। পুলিশের ধাওয়ায় পড়ে সাভারের আমিনবাজারের কাছে একটি সিএনজি স্টেশনের পাশে ট্রাকটি রেখে চালক পালিয়ে যান। ট্রাকের ভেতরে কুঁড়ার বস্তার মধ্য থেকে ৮০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে গভীর রাতে তিনি থানায় নিয়ে যান। ফেনসিডিলগুলো উদ্ধার না দেখিয়ে থানায় রেখে বিক্রি করেন। আর ট্রাকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার দেখিয়ে থানায় রেখে দেন।
সূত্র আরও জানায়, প্রায়ই সন্ধ্যার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি নিয়ে সাভার থানায় আসেন ফেনসিডিল ব্যবসায়ীরা। দাম ঠিক করে টাকা দেওয়ার পর থানার টিনের ছাউনির কার্যালয় কক্ষ অথবা এই কক্ষের পেছনে কনস্টেবলদের ব্যারাক থেকে ব্যাগে করে ফেনসিডিল এনে তুলে দেওয়া হয় গাড়িতে। এ ছাড়া খুচরাও বিক্রি করা হয়।
সাভার থানার পাশেই সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। যিনি ফেনসি সিদ্দিক হিসেবে পরিচিত। গত ২ এপ্রিল প্রথম আলোতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর মামলার আসামি হওয়ায় সিদ্দিক পলাতক। ৩০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার হন সিদ্দিকের স্ত্রী ও তাঁর দুই সহযোগী। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সাভার থানা থেকেই তিনি ফেনসিডিল সংগ্রহ করেন।
সূত্র জানায়, সিদ্দিক গা ঢাকা দেওয়ার পর কিছু দিন বেকায়দায় ছিলেন ফেনসিডিল ব্যবসায় জড়িত পুলিশ সদস্যরা। পরে ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীদের বেছে নেন তাঁরা।
যোগাযোগ করা হলে কনস্টেবল হুমায়ুন কবীর এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এসআই পল্টু ঘোষ থানা থেকে ফেনসিডিল বিক্রির কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি এ ব্যাপারে খবর না লিখতে এ প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।
যোগাযোগ করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে এসআই পল্টু ঘোষসহ জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগেও তো এমন অভিযোগ উঠেছে, তখন কোনো ব্যবস্থা নেননি কেন, জানতে চাইলে ওসি বলেন, প্রথম আলোর প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর থানার সব কর্মকর্তা ও কনস্টেবলদের হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়।
সাভার থানার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ এপ্রিল ভোরে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পল্টু ঘোষ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের আমিনবাজার এলাকা থেকে ৪০০ বোতল ফেনসিডিলসহ দুই ব্যক্তিকে আটক করেন। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, নীলফামারীর সৈয়দপুরের আশরাফুজ্জামান (৩২) ও রাজধানীর মিরপুরের সুমন (৩২)। এ ঘটনায় থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জাফর ইকবাল বাদী হয়ে ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলার আরজিতে বলা হয়, আশরাফুজ্জামান ও সুমন আমিনবাজার এলাকায় বস্তার ভেতরে ফেনসিডিল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রের ভাষ্যমতে, ১১ এপ্রিল ভোরে ঢাকাগামী একটি বাস থেকে এক হাজার ৪০০ বোতল ফেনসিডিলসহ আশরাফুজ্জামান ও সুমনকে আটক করেন এসআই পল্টু ঘোষ। ওই দুই ব্যক্তি বাসেরই চালক ও সহকারী। ফেনসিডিল উদ্ধারের পর ওই কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গোপন তথ্যদাতাকে (সোর্স) ২৭০ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে বাকিগুলো নিয়ে থানায় যান। তিনি ৪০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার দেখিয়ে থানায় মামলা করেন। অবশিষ্ট ৭৩০ বোতল ফেনসিডিল থানায় রেখে বিক্রি করেন। পল্টু ঘোষকে ফেনসিডিল বিক্রিতে সহযোগিতা করেন কনস্টেবল হুমাযুন কবীর। ওই সোর্স সাভার ব্যাংক কলোনির বাসিন্দা। তিনিও একজন চিহ্নিত ফেনসিডিল ব্যবসায়ী।
সূত্র জানায়, ঢাকাগামী একটি ট্রাকে (ঢাকা-মেট্রো-নম্বর-১৬-২২৭৮) ফেনসিডিল রয়েছে—সোর্সের মাধ্যমে এমন তথ্য পেয়ে এসআই পল্টু ঘোষ ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ট্রাকটি ধাওয়া করেন। পুলিশের ধাওয়ায় পড়ে সাভারের আমিনবাজারের কাছে একটি সিএনজি স্টেশনের পাশে ট্রাকটি রেখে চালক পালিয়ে যান। ট্রাকের ভেতরে কুঁড়ার বস্তার মধ্য থেকে ৮০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে গভীর রাতে তিনি থানায় নিয়ে যান। ফেনসিডিলগুলো উদ্ধার না দেখিয়ে থানায় রেখে বিক্রি করেন। আর ট্রাকটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার দেখিয়ে থানায় রেখে দেন।
সূত্র আরও জানায়, প্রায়ই সন্ধ্যার পর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গাড়ি নিয়ে সাভার থানায় আসেন ফেনসিডিল ব্যবসায়ীরা। দাম ঠিক করে টাকা দেওয়ার পর থানার টিনের ছাউনির কার্যালয় কক্ষ অথবা এই কক্ষের পেছনে কনস্টেবলদের ব্যারাক থেকে ব্যাগে করে ফেনসিডিল এনে তুলে দেওয়া হয় গাড়িতে। এ ছাড়া খুচরাও বিক্রি করা হয়।
সাভার থানার পাশেই সরকারি খাস জমিতে বসবাস করে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। যিনি ফেনসি সিদ্দিক হিসেবে পরিচিত। গত ২ এপ্রিল প্রথম আলোতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর মামলার আসামি হওয়ায় সিদ্দিক পলাতক। ৩০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার হন সিদ্দিকের স্ত্রী ও তাঁর দুই সহযোগী। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের আগে সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, সাভার থানা থেকেই তিনি ফেনসিডিল সংগ্রহ করেন।
সূত্র জানায়, সিদ্দিক গা ঢাকা দেওয়ার পর কিছু দিন বেকায়দায় ছিলেন ফেনসিডিল ব্যবসায় জড়িত পুলিশ সদস্যরা। পরে ঢাকার মাদক ব্যবসায়ীদের বেছে নেন তাঁরা।
যোগাযোগ করা হলে কনস্টেবল হুমায়ুন কবীর এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এসআই পল্টু ঘোষ থানা থেকে ফেনসিডিল বিক্রির কথা স্বীকার করেন। তবে তিনি এ ব্যাপারে খবর না লিখতে এ প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন।
যোগাযোগ করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে এসআই পল্টু ঘোষসহ জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগেও তো এমন অভিযোগ উঠেছে, তখন কোনো ব্যবস্থা নেননি কেন, জানতে চাইলে ওসি বলেন, প্রথম আলোর প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর থানার সব কর্মকর্তা ও কনস্টেবলদের হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়।
No comments