সহায়তার জন্য সমঝোতা হতে হবে গণমুখী-উন্নয়ন ফোরাম বৈঠকে ভিন্নমাত্রা
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিদেশি সাহায্যের অংশ গাণিতিক হিসাবে ব্যাপক কমে গেলেও এর প্রাসঙ্গিকতা ফুরিয়ে যায়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সহায়তার প্রয়োজনীয়তার মাত্রাগত পরিবর্তন ঘটেছে। এই বাস্তবতায় প্রায় পাঁচ বছর পর বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো ঢাকায়।
কথিত দাতাগোষ্ঠী বা উন্নয়ন-সহযোগীদের সঙ্গে সরকারের এই বৈঠক মূলত মধ্যমেয়াদে বিভিন্ন খাতে সহায়তা পাওয়ার জন্য সমঝোতা করার আনুষ্ঠানিকতা। এখানে তাত্ক্ষণিকভাবে আর্থিক সহায়তার কোনো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় না। এর বদলে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে সরকার ও উন্নয়ন-সহযোগীদের চিন্তাভাবনা এবং সেগুলো বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে পরস্পর মতবিনিময় করা হয়। এবারের বৈঠকেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তবে আনুষ্ঠানিকতার সীমা ছাড়িয়ে এবারের বৈঠকটির গুরুত্ব রয়েছে একাধিক কারণে।
প্রথমত, বিশ্বমন্দার পর এই প্রথম এ ধরনের একটি বৈঠক হয়েছে। গরিব ও ছোট দেশ হিসেবে মন্দায় বাংলাদেশের যে ক্ষতি, তা বৈশ্বিক বিবেচনায় হয়তো খুব কম, কিন্তু বাংলাদেশের নিজের জন্য তা খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। ফলে মন্দা-পরবর্তী সময়কালে উন্নয়ন-সহযোগীরা সহায়তার হাত কতটা ও কীভাবে প্রসারিত করবে, তা বোঝার জন্য এই বৈঠকের প্রয়োজন ছিল। দ্বিতীয়ত, জলবায়ুর অভিঘাতজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোপেনহেগেনে যেটুকু আশার বাণী শুনিয়েছে, তা আরেকটু নিবিড়ভাবে যাচাই করার সুযোগ হয়েছে। তৃতীয়ত, নানা সীমাবদ্ধতার পরও শিক্ষা, মানবসম্পদ, ব্যক্তি-উদ্যোগ ও শ্রম খাতে বাংলাদেশের ইতিবাচক অর্জনগুলো উন্নয়ন-সহযোগীদের মনোজগতে কতটুকু দোলা দিতে পেরেছে, তা জানার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চতুর্থত, এবার বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের উল্লেখযোগ্য হারে সম্পৃক্ত করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে সরকার ও উন্নয়ন-সহযোগী উভয়ের পক্ষ থেকেই ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়েছে। এই প্রবণতা বজায় থাকলে তা বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় গতির সঞ্চার করবে।
পাশাপাশি এটাও ঠিক যে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির পথে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপচয়ের মতো বড় প্রতিবন্ধকতাগুলো বাধা হয়ে রয়েছে। জ্বালানি সংকট ও অবকাঠামোর অপ্রতুলতা বিনিয়োগ ও উত্পাদনকে পেছনে ঠেলে দিতে চাইছে। বিডিএফ বৈঠকে এসব প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষ যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি উদ্বিগ্ন উন্নয়ন-সহযোগীরাও। তবে তাদের উদ্বেগ অনেক সময়ই বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতার বাইরে চলে যায়, যা উন্নয়ন-সহায়তার ক্ষেত্রে নানা ধরনের অযাচিত শর্তারোপে পরিণত হয়। আর তখনই প্রশ্ন ওঠে সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য নিয়ে। সুতরাং উন্নয়ন-সহযোগীদেরও অধিকতর দায়বদ্ধ হতে হবে। অন্যদিকে সরকারকেও মনে রাখতে হবে যে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই বিদেশি সহায়তার সমঝোতা করতে হবে, যেন তা অর্থবহ হয়, দেনা না বাড়ায়। এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে বিডিএফ বৈঠকের যৌক্তিকতা গ্রহণযোগ্য হবে।
প্রথমত, বিশ্বমন্দার পর এই প্রথম এ ধরনের একটি বৈঠক হয়েছে। গরিব ও ছোট দেশ হিসেবে মন্দায় বাংলাদেশের যে ক্ষতি, তা বৈশ্বিক বিবেচনায় হয়তো খুব কম, কিন্তু বাংলাদেশের নিজের জন্য তা খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। ফলে মন্দা-পরবর্তী সময়কালে উন্নয়ন-সহযোগীরা সহায়তার হাত কতটা ও কীভাবে প্রসারিত করবে, তা বোঝার জন্য এই বৈঠকের প্রয়োজন ছিল। দ্বিতীয়ত, জলবায়ুর অভিঘাতজনিত ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোপেনহেগেনে যেটুকু আশার বাণী শুনিয়েছে, তা আরেকটু নিবিড়ভাবে যাচাই করার সুযোগ হয়েছে। তৃতীয়ত, নানা সীমাবদ্ধতার পরও শিক্ষা, মানবসম্পদ, ব্যক্তি-উদ্যোগ ও শ্রম খাতে বাংলাদেশের ইতিবাচক অর্জনগুলো উন্নয়ন-সহযোগীদের মনোজগতে কতটুকু দোলা দিতে পেরেছে, তা জানার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। চতুর্থত, এবার বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের উল্লেখযোগ্য হারে সম্পৃক্ত করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে সরকার ও উন্নয়ন-সহযোগী উভয়ের পক্ষ থেকেই ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়েছে। এই প্রবণতা বজায় থাকলে তা বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রায় গতির সঞ্চার করবে।
পাশাপাশি এটাও ঠিক যে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতির পথে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপচয়ের মতো বড় প্রতিবন্ধকতাগুলো বাধা হয়ে রয়েছে। জ্বালানি সংকট ও অবকাঠামোর অপ্রতুলতা বিনিয়োগ ও উত্পাদনকে পেছনে ঠেলে দিতে চাইছে। বিডিএফ বৈঠকে এসব প্রসঙ্গ আলোচিত হয়েছে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষ যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি উদ্বিগ্ন উন্নয়ন-সহযোগীরাও। তবে তাদের উদ্বেগ অনেক সময়ই বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতার বাইরে চলে যায়, যা উন্নয়ন-সহায়তার ক্ষেত্রে নানা ধরনের অযাচিত শর্তারোপে পরিণত হয়। আর তখনই প্রশ্ন ওঠে সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য নিয়ে। সুতরাং উন্নয়ন-সহযোগীদেরও অধিকতর দায়বদ্ধ হতে হবে। অন্যদিকে সরকারকেও মনে রাখতে হবে যে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই বিদেশি সহায়তার সমঝোতা করতে হবে, যেন তা অর্থবহ হয়, দেনা না বাড়ায়। এসব বিষয়ে ভবিষ্যতে ইতিবাচক ফল পাওয়া গেলে বিডিএফ বৈঠকের যৌক্তিকতা গ্রহণযোগ্য হবে।
No comments