আইনের অপব্যবহার রোধ করতে হবে-বাধ্যতামূলক অবসর
সরকারি কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার আদেশে সহকারী সচিব থেকে সচিব পর্যন্ত যেকোনো কর্মকর্তা সই করতে পারবেন বলে যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তা সরকারকে আশ্বস্ত করলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। এত দিন যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তারা এ ধরনের আদেশে সই করতে পারতেন।
প্রজ্ঞাপনটি জারির কারণ হলো, অতীতে যুগ্ম সচিবের নিচের কর্মকর্তাদের সইয়ে অনেককে অবসরের আদেশ দেওয়া হলেও আদালতে তা নাকচ হয়ে যায়। ফলে সরকার বকেয়া বেতন-ভাতাসহ তাঁদের চাকরি ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছে।
১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৯(২) ধারামতে, সরকারি চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার যে-কাউকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারে। অথবা সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিজেও অবসর নিতে পারেন। স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। বিপত্তি ঘটে থাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার ক্ষেত্রে। চাকরিবিধিতে জনস্বার্থে অবসর দেওয়ার বিধান থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা দলীয় স্বার্থেই করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এ আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার অতীতে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। সাবেক দুই সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান ও এম হাফিজউদ্দিন খান যথার্থই বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার বিধান রহিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। আকবর আলি খান রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালে আইনটি রহিতের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশও করা হয়েছিল।
যেখানে আইনটির যথার্থতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে সেটিকে ‘নিখুঁত’ করার কী যুক্তি থাকতে পারে? বর্তমানে ক্ষমতাসীনেরা বিরোধী দলে থাকতে রাজনৈতিক কারণে জনপ্রশাসনে বাধ্যতামূলক অবসর ও ওএসডির প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তাঁরাও একই কাজ করছেন। গত এক বছরে বেশ কিছু সরকারি কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। কোনো কর্মকর্তা শৃঙ্খলাবিরোধী কিছু করলে সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
দুর্ভাগ্যজনক যে, সব সরকারই জনপ্রশাসনকে নিজেদের কবজায় রাখতে চায়। এটি কারও জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। বরং কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়। এই সুযোগে একশ্রেণীর কর্মকর্তা ক্ষমতাসীনদের সুনজরে থাকতে অনৈতিক কাজ করতে দ্বিধা করেন না। সার্বিকভাবে জনপ্রশাসনের দক্ষতা-যোগ্যতা হ্রাস পায়। জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। অতএব কোনো কারণে সরকারি চাকরিবিধির উল্লিখিত ধারা পুরোপুরি বাতিল করা না গেলেও এর অপব্যবহার রোধে কার্যকর রক্ষাকবচ থাকা জরুরি বলেই আমরা মনে করি।
১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৯(২) ধারামতে, সরকারি চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হলে সরকার যে-কাউকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে পারে। অথবা সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিজেও অবসর নিতে পারেন। স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। বিপত্তি ঘটে থাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার ক্ষেত্রে। চাকরিবিধিতে জনস্বার্থে অবসর দেওয়ার বিধান থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা দলীয় স্বার্থেই করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে এ আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার অতীতে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। সাবেক দুই সচিব ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান ও এম হাফিজউদ্দিন খান যথার্থই বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার বিধান রহিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। আকবর আলি খান রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালে আইনটি রহিতের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশও করা হয়েছিল।
যেখানে আইনটির যথার্থতা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে সেটিকে ‘নিখুঁত’ করার কী যুক্তি থাকতে পারে? বর্তমানে ক্ষমতাসীনেরা বিরোধী দলে থাকতে রাজনৈতিক কারণে জনপ্রশাসনে বাধ্যতামূলক অবসর ও ওএসডির প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতায় এসে তাঁরাও একই কাজ করছেন। গত এক বছরে বেশ কিছু সরকারি কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়া হয়েছে। কোনো কর্মকর্তা শৃঙ্খলাবিরোধী কিছু করলে সরকারি চাকরিবিধি অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
দুর্ভাগ্যজনক যে, সব সরকারই জনপ্রশাসনকে নিজেদের কবজায় রাখতে চায়। এটি কারও জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। বরং কর্মকর্তাদের মধ্যে ভয়ভীতির সৃষ্টি হয়। এই সুযোগে একশ্রেণীর কর্মকর্তা ক্ষমতাসীনদের সুনজরে থাকতে অনৈতিক কাজ করতে দ্বিধা করেন না। সার্বিকভাবে জনপ্রশাসনের দক্ষতা-যোগ্যতা হ্রাস পায়। জনগণ কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। অতএব কোনো কারণে সরকারি চাকরিবিধির উল্লিখিত ধারা পুরোপুরি বাতিল করা না গেলেও এর অপব্যবহার রোধে কার্যকর রক্ষাকবচ থাকা জরুরি বলেই আমরা মনে করি।
No comments