সঙ্কট সমাধানে চাপ by মঈন উদ্দিন খান
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে মঙ্গলবার দেখা করতে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে যান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেনস ব্লুম বার্নিকাটসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা। ছবি-বিএনপির সৌজন্যে |
জাতীয়পর্যায়ে
নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে এক দিকে বিরোধী জোটের টানা আন্দোলন, অন্য
দিকে সারা দেশে একের পর এক সহিংস ঘটনায় এখন প্রভাবশালী গণতান্ত্রিক
দেশগুলোর তীè নজরে রয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসঙ্ঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এখন কেবল
বিবৃতিতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রভাবশালী এসব দেশের
কূটনীতিক তৎপর রয়েছেন নেপথ্যে। সঙ্কট সমাধানে সরকারি দল ও বিএনপি জোটকে
সমঝোতার টেবিলে বসাতে যারপরনাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এর ফলে
রাজনৈতিক সঙ্কট দ্রুত সমাধানে সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রয়েছে। চলমান
পরিস্থিতিতে বাহ্যিকভাবে ‘নির্বিকার’ ভাব দেখালেও সরকারের অভ্যন্তরে
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাজ করছে। ‘প্রশাসনযন্ত্র’ ও ‘সাংগঠনিক শক্তি’ ব্যবহার করে
আন্দোলন দমানোর বিভিন্নমুখী চেষ্টা এখন পর্যন্ত সফল না হওয়ায় এ উদ্বেগ আরো
বেড়ে গেছে বলে সরকারের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের টানা হরতাল-অবরোধ চলছে দুই মাস ধরে। আন্দোলনমুখর এই দুই মাসে রক্ত ঝরেছে দেশের বিভিন্ন জনপদে। হত্যা, খুন, গুম ও ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন অনেকে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশজুড়ে। জীবন-জীবিকা হুমকিতে পড়েছে। অর্থনীতিতে নেমেছে ধস। নাগরিক জীবন কাটছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। রাতের ঢাকা ভীতিকর রূপ নিয়েছে। ঠিক কবে নাগাদ দুঃসহ এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে, তাও অনিশ্চিত।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সাথে কোনো ধরনের আলোচনায় যেতে এখনো রাজি নয়। অন্য দিকে বিএনপি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে পিছু না হটার ঘোষণা দিয়েছে। যত দিন প্রয়োজন, তত দিন হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যেতে অনড় ২০ দলীয় জোট।
উভয়পক্ষের এমন অনড় অবস্থানে সঙ্কট নিরসনে প্রধান দূতিয়ালির ভূমিকায় চলে এসেছে আন্তর্জাতিক মহল। সাম্প্রতিক সময়ে এর মাত্রা বেড়ে গেছে। জাতিসঙ্ঘ থেকে সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানানো হচ্ছে বারবার। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার চলমান অচলাবস্থা নিরসনের উপায় বের করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সঙ্কট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রকে আরো উদ্যোগী হতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশী ককাসের ১১ কংগ্রেসম্যান। সরকারকে অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া দ্রুত নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে বলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হুগো সোয়ার।
এর আগে চলমান সঙ্কট উত্তরণে সংলাপে বসতে দুই নেত্রীকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন। বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে দায়িত্ব দেয়ার বিষয়টিও জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। চলমান সঙ্কট নিরসনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকারসংক্রান্ত সংসদীয় একটি দল গত মাসের মাঝামাঝিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন।
ঢাকায় নিযুক্ত প্রভাবশালী দেশগুলোর কূটনীতিকেরা সঙ্কট নিরসনে ব্যাপকভাবে তৎপর রয়েছেন। নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্্রদূত বার্নিকাট দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এই তৎপরতা আরো গতি পেয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১৬টি দেশের কূটনীতিকেরা প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। নাটকীয়ভাবে গত সপ্তাহে এসব দেশের কূটনীতিকেরা দেখা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে। খালেদা জিয়ার সাথে কূটনীতিকদের ওই বৈঠক সরকারের অনেক হিসাব পাল্টে দিয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, কূটনীতিক মহল কোন প্রক্রিয়ায় সঙ্কটের সমাধান হতে পারে, তা নিয়ে উভয় দলের সাথে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিকভাবে নিয়মিত কথা বলছে। কোন দলের কী চাওয়া, তা বোঝার চেষ্টা করছে তারা। কূটনৈতিকপাড়ায় এ নিয়ে প্রতিদিনই বৈঠক হচ্ছে। শিগগিরই দুই দলের সাথে আবার বৈঠক করবেন এরা। জাতিসঙ্ঘ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ সপ্তাহে নতুন বার্তা আসতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে কর্মসূচি থেকে সরছে না ২০ দল। দলের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, সরকারের অবস্থান বিবেচনায় এনে ২০ দল আন্দোলন কর্মসূচি স্থিরভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। প্রয়োজনে মার্চ মাসজুড়ে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি চলবে।
বিএনপির এক নেতা গতকাল বলেছেন, সরকার মনে করেছিল, দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ায় বিএনপি নিজ থেকেই কর্মসূচির ইতি টানবে, কিন্তু তা হয়নি। বিএনপি জোট পিছু হটবে না, বরং নতুন কৌশলে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, অবরোধ রেখে ঢাকায় বড় ধরনের একটি শোডাউন করার চিন্তাভাবনা চলছে। গত ৫ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকে এ ধরনের একটি শোডাউন করতে চেয়েছিল বিএনপি। ডিএমপি বরাবর লিখিত আবেদনও প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা স্থগিত করা হয়। জানা গেছে, অবরোধ রেখেই শিগগিরই ঢাকায় একটি বড় সমাবেশের ডাক দিতে পারে ২০ দলীয় জোট।
আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নয়া দিগন্তকে জানান, আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করার কথা ভাবা হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকায় ২০ দলের নেতাকর্মীরা মাঠে নামছেন। সারা দেশেও তৃণমূল নেতাকর্মীরা মাঠে থেকে আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহলের তৎপরতায়ও আশাবাদী বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করছেন, কূটনীতিক মহলের কাছে এটি এখন পরিষ্কার যে, সরকার সংলাপে আন্তরিক নয়। আর এ কারণেই আন্দোলনে থাকতে বাধ্য হচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের টানা হরতাল-অবরোধ চলছে দুই মাস ধরে। আন্দোলনমুখর এই দুই মাসে রক্ত ঝরেছে দেশের বিভিন্ন জনপদে। হত্যা, খুন, গুম ও ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন অনেকে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশজুড়ে। জীবন-জীবিকা হুমকিতে পড়েছে। অর্থনীতিতে নেমেছে ধস। নাগরিক জীবন কাটছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। রাতের ঢাকা ভীতিকর রূপ নিয়েছে। ঠিক কবে নাগাদ দুঃসহ এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে, তাও অনিশ্চিত।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের সাথে কোনো ধরনের আলোচনায় যেতে এখনো রাজি নয়। অন্য দিকে বিএনপি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে পিছু না হটার ঘোষণা দিয়েছে। যত দিন প্রয়োজন, তত দিন হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যেতে অনড় ২০ দলীয় জোট।
উভয়পক্ষের এমন অনড় অবস্থানে সঙ্কট নিরসনে প্রধান দূতিয়ালির ভূমিকায় চলে এসেছে আন্তর্জাতিক মহল। সাম্প্রতিক সময়ে এর মাত্রা বেড়ে গেছে। জাতিসঙ্ঘ থেকে সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানানো হচ্ছে বারবার। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার চলমান অচলাবস্থা নিরসনের উপায় বের করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সঙ্কট নিরসনে যুক্তরাষ্ট্রকে আরো উদ্যোগী হতে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশী ককাসের ১১ কংগ্রেসম্যান। সরকারকে অংশগ্রহণমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া দ্রুত নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে বলেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হুগো সোয়ার।
এর আগে চলমান সঙ্কট উত্তরণে সংলাপে বসতে দুই নেত্রীকে চিঠি দিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন। বাংলাদেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে দায়িত্ব দেয়ার বিষয়টিও জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। চলমান সঙ্কট নিরসনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকারসংক্রান্ত সংসদীয় একটি দল গত মাসের মাঝামাঝিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের সাথে বৈঠক করেছেন।
ঢাকায় নিযুক্ত প্রভাবশালী দেশগুলোর কূটনীতিকেরা সঙ্কট নিরসনে ব্যাপকভাবে তৎপর রয়েছেন। নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্্রদূত বার্নিকাট দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এই তৎপরতা আরো গতি পেয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১৬টি দেশের কূটনীতিকেরা প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্কট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। নাটকীয়ভাবে গত সপ্তাহে এসব দেশের কূটনীতিকেরা দেখা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে। খালেদা জিয়ার সাথে কূটনীতিকদের ওই বৈঠক সরকারের অনেক হিসাব পাল্টে দিয়েছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, কূটনীতিক মহল কোন প্রক্রিয়ায় সঙ্কটের সমাধান হতে পারে, তা নিয়ে উভয় দলের সাথে আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিকভাবে নিয়মিত কথা বলছে। কোন দলের কী চাওয়া, তা বোঝার চেষ্টা করছে তারা। কূটনৈতিকপাড়ায় এ নিয়ে প্রতিদিনই বৈঠক হচ্ছে। শিগগিরই দুই দলের সাথে আবার বৈঠক করবেন এরা। জাতিসঙ্ঘ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এ সপ্তাহে নতুন বার্তা আসতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে কর্মসূচি থেকে সরছে না ২০ দল। দলের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, সরকারের অবস্থান বিবেচনায় এনে ২০ দল আন্দোলন কর্মসূচি স্থিরভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। প্রয়োজনে মার্চ মাসজুড়ে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি চলবে।
বিএনপির এক নেতা গতকাল বলেছেন, সরকার মনে করেছিল, দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ায় বিএনপি নিজ থেকেই কর্মসূচির ইতি টানবে, কিন্তু তা হয়নি। বিএনপি জোট পিছু হটবে না, বরং নতুন কৌশলে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, অবরোধ রেখে ঢাকায় বড় ধরনের একটি শোডাউন করার চিন্তাভাবনা চলছে। গত ৫ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকে এ ধরনের একটি শোডাউন করতে চেয়েছিল বিএনপি। ডিএমপি বরাবর লিখিত আবেদনও প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা স্থগিত করা হয়। জানা গেছে, অবরোধ রেখেই শিগগিরই ঢাকায় একটি বড় সমাবেশের ডাক দিতে পারে ২০ দলীয় জোট।
আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নয়া দিগন্তকে জানান, আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করার কথা ভাবা হচ্ছে। তিনি বলেন, ঢাকায় ২০ দলের নেতাকর্মীরা মাঠে নামছেন। সারা দেশেও তৃণমূল নেতাকর্মীরা মাঠে থেকে আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মহলের তৎপরতায়ও আশাবাদী বিএনপি। দলটির নেতারা মনে করছেন, কূটনীতিক মহলের কাছে এটি এখন পরিষ্কার যে, সরকার সংলাপে আন্তরিক নয়। আর এ কারণেই আন্দোলনে থাকতে বাধ্য হচ্ছে বিএনপি।
No comments