এবার কূটনীতিকের লাগেজে স্বর্ণ, তোলপাড়
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বর্ণের চোরাচালান ধরা পড়া নিত্য দিনের ঘটনা। কখনও যাত্রীর ব্যাগে, জুতায়, জামায় পাওয়া যাচ্ছে স্বর্ণ। স্বর্ণ আসছে বিমানের সিটে, টয়লেটে করে। চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধরা পড়েছেন খোদ বিমান কর্মকর্তা পর্যন্ত। ধরা পড়েছেন বিমানের ক্রু, মসজিদের ইমাম। এবার স্বর্ণসহ ধরা পড়লেন বিদেশী এক কূটনীতিক। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে শুল্ক বিভাগ ও কূটনৈতিক অঙ্গনে। বিমানবন্দরে কূটনীতিকের ব্যাগ ভরে স্বর্ণ আনার ঘটনা এটিই প্রথম। একজন কূটনীতিক হয়ে লাগেজ ভরে স্বর্ণ নেয়ার ঘটনায় হতবাক হয়েছেন শুল্ক বিভাগের কর্মীরাও। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে স্বর্ণসহ উত্তর কোরিয়ার কূটনীতিক সন ইয়াং ন্যাম (৫০) কে আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা পুলিশ ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তিনি বাংলাদেশে অবস্থিত উত্তর কোরিয়ার হাইকমিশনের ফার্স্ট ইকোনমিক ফর কমার্শিয়াল সেক্রেটারি। এ সময় তার লাগেজ থেকে ২৭ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। কূটনীতিক পরিচয়ে বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার সময় তাকে আটক করে এপিবিএন। ওই কূটনীতিককে আটক করা হলেও ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী নিজ দেশের দূতাবাসের তত্ত্বাবধানে মুচলেকা নিয়ে তাকে পরে ছেড়ে দেয়া হয়। কনভেনশন অনুযায়ী দোষী কূটনীতিকের বিচার তার নিজ দেশের আইন অনুযায়ী হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আটক কূটনীতিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার উপস্থিতিতে দোষ স্বীকার করে মুচলেকা দেন। দোষ স্বীকার করায় ওই কূটনীতিককে প্রত্যাহার করতে পারে কোরীয় সরকার। তা না করলে বাংলাদেশ তাকে প্রত্যাহারের অনুরোধ করবে কোরীয় সরকারকে।
কূটনীতিকের লাগেজে স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনা একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি’র বরাত দিয়ে খবর এসেছে আল-জাজিরা, গার্ডিয়ান, টাইম ম্যাগাজিন, ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান, ব্যাংকক পোস্ট, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস সহ অন্যান্য পত্রপত্রিকায়। এ ছাড়া এ খবর এসেছে বিবিসি, ইকোনমিক টাইমস, আউটলুক ইন্ডিয়া প্রভৃতি সংবাদ মাধ্যমে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসকিউ ৪৪৬, নম্বরের একটি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে চোরাচালানকারী দলের সদস্যরা স্বর্ণ আনতে পারে এমন তথ্য ছিল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যদের কাছে। ফ্লাইটটি অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে কাস্টমস ও আর্মড পুলিশের একটি যৌথ দল ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের বসে থাকতে বলেন এবং নিজেদের হ্যান্ডব্যাগ নিজেদের কাছে রাখতে বলেন। ফ্লাইটের বামের দ্বিতীয় সারিতে বসা ছিলেন ন্যাম। এ সময় ন্যাম নিজেকে বিদেশী পরিচয় দিয়ে ফ্লাইট থেকে নেমে যান। এরপর গ্রিন চ্যানেল এলাকায় তার গতিরোধ করেন কাস্টমস ও আর্মড পুলিশের সদস্যরা। ওই কূটনীতিকের সঙ্গে থাকা লাগেজটি স্ক্যানিং করার জন্য চাওয়া হয়। কিন্তু, তিনি ওই লাগেজটি স্ক্যানিং করতে রাজি হননি। ন্যাম এ সময় তার পরিচয় গোপন করেন। দুর্ব্যবহার করেন কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তখন উভয়ের মধ্যে বাগ বিতণ্ডা হয়। তিনি কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের বলেন, এটি কূটনীতিকের লাগেজ। স্ক্যান করা যাবে না। এতে যৌথ দলের আরও সন্দেহ বাড়ে। এক পর্যায়ে তিনি দ্রুত গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ন্যামকে এপিবিএনের সদস্যরা আটক করে তাদের অফিসে নিয়ে যান। এরপর ওই লাগেজ থেকে ১৭০টি সোনার বার ও বেশ কিছু আংটি, হাতের বালা, গলার চেইন উদ্ধার করা হয়। ১৭০ পিস বারের ওজন ১৯ কেজি আর অন্যান্য গহনার ওজন ৮ কেজি মিলে মোট ২৭ কেজি স্বর্ণ ছিল লাগেজে। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বাজার মূল প্রায় ১৩ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে শুল্ক বিভাগ।
এপিবিএন এর সুপার তানজিনা আকতার জানান, সন ইয়াং ব্যাগ স্ক্রিনিংয়ে বাধা দেন এবং নিজের কূটনৈতিক পরিচয় দিয়ে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই কূটনীতিক এরপর ব্যাগ নিয়ে গ্রিন চ্যানেল দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এপিবিএন সদস্যরা তার পথ আটকায়। কাস্টমস কর্মকর্তারা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি কূটনীতিক হলেও তার ব্যাগেজের বিষয়ে আগে থেকে ঘোষণা না দেয়ায় স্ক্রিনিং না করে সেটি ছাড়া যাবে না। দীর্ঘ সময় বাগবিতণ্ডার পর তার কাছ থেকে কালো রঙের ট্রলি ব্যাগটি নেয়া হয় এবং সেটি স্ক্রিনিং করে স্বর্ণের সন্ধান পান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এদিকে কূটনীতিক আটকের খবর পেয়ে কোরিয়ান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি কো চো মিন, থার্ড সেক্রেটারি রি চোল সান ও ডেপুটি চিফ অব মিশন কেং কিং এপিবিএন অফিসে যান। পরে সেখানে উপস্থিত হন উত্তর কোরিয়ার হাইকমিশনার মুন সং হো। তারা বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং উত্তর কোরিয়ার হাইকমিশন দফায় দফায় বৈঠক করে। বৈঠকের পর আটক স্বর্ণ জব্দ করে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ন্যামকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ঢাকা কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার কাজী মো. জিয়াউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ফ্লাইটে অভিযান চালানো হয়েছিল। ওই স্বর্ণগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জব্ধ করেছে। একজন কূটনীতিকের কাছে যে স্বর্ণের বার পাওয়া যাবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী রাষ্ট্রদূতের জিম্মায় ওই কূটনীতিককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, ওই কূটনীতিক দাপ্তরিক কাজে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু, প্রমাণ হিসাবে কোন নথিপত্র দেখাতে পারেননি। কূটনীতিকদের লাগেজ স্ক্যান করার নিয়ম নেই। কিন্তু, এই সুযোগ নিয়ে তারা যদি অবৈধ পণ্য নিয়ে আসেন সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
কূটনীতিকের লাগেজে স্বর্ণ চোরাচালানের ঘটনা একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপি’র বরাত দিয়ে খবর এসেছে আল-জাজিরা, গার্ডিয়ান, টাইম ম্যাগাজিন, ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ান, ব্যাংকক পোস্ট, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস সহ অন্যান্য পত্রপত্রিকায়। এ ছাড়া এ খবর এসেছে বিবিসি, ইকোনমিক টাইমস, আউটলুক ইন্ডিয়া প্রভৃতি সংবাদ মাধ্যমে।
বিমানবন্দর সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের এসকিউ ৪৪৬, নম্বরের একটি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে। ওই ফ্লাইটে চোরাচালানকারী দলের সদস্যরা স্বর্ণ আনতে পারে এমন তথ্য ছিল কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) সদস্যদের কাছে। ফ্লাইটটি অবতরণ করার সঙ্গে সঙ্গে কাস্টমস ও আর্মড পুলিশের একটি যৌথ দল ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের বসে থাকতে বলেন এবং নিজেদের হ্যান্ডব্যাগ নিজেদের কাছে রাখতে বলেন। ফ্লাইটের বামের দ্বিতীয় সারিতে বসা ছিলেন ন্যাম। এ সময় ন্যাম নিজেকে বিদেশী পরিচয় দিয়ে ফ্লাইট থেকে নেমে যান। এরপর গ্রিন চ্যানেল এলাকায় তার গতিরোধ করেন কাস্টমস ও আর্মড পুলিশের সদস্যরা। ওই কূটনীতিকের সঙ্গে থাকা লাগেজটি স্ক্যানিং করার জন্য চাওয়া হয়। কিন্তু, তিনি ওই লাগেজটি স্ক্যানিং করতে রাজি হননি। ন্যাম এ সময় তার পরিচয় গোপন করেন। দুর্ব্যবহার করেন কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তখন উভয়ের মধ্যে বাগ বিতণ্ডা হয়। তিনি কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের বলেন, এটি কূটনীতিকের লাগেজ। স্ক্যান করা যাবে না। এতে যৌথ দলের আরও সন্দেহ বাড়ে। এক পর্যায়ে তিনি দ্রুত গ্রিন চ্যানেল পার হওয়ার চেষ্টা করেন। পরে ন্যামকে এপিবিএনের সদস্যরা আটক করে তাদের অফিসে নিয়ে যান। এরপর ওই লাগেজ থেকে ১৭০টি সোনার বার ও বেশ কিছু আংটি, হাতের বালা, গলার চেইন উদ্ধার করা হয়। ১৭০ পিস বারের ওজন ১৯ কেজি আর অন্যান্য গহনার ওজন ৮ কেজি মিলে মোট ২৭ কেজি স্বর্ণ ছিল লাগেজে। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বাজার মূল প্রায় ১৩ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে শুল্ক বিভাগ।
এপিবিএন এর সুপার তানজিনা আকতার জানান, সন ইয়াং ব্যাগ স্ক্রিনিংয়ে বাধা দেন এবং নিজের কূটনৈতিক পরিচয় দিয়ে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই কূটনীতিক এরপর ব্যাগ নিয়ে গ্রিন চ্যানেল দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে এপিবিএন সদস্যরা তার পথ আটকায়। কাস্টমস কর্মকর্তারা তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি কূটনীতিক হলেও তার ব্যাগেজের বিষয়ে আগে থেকে ঘোষণা না দেয়ায় স্ক্রিনিং না করে সেটি ছাড়া যাবে না। দীর্ঘ সময় বাগবিতণ্ডার পর তার কাছ থেকে কালো রঙের ট্রলি ব্যাগটি নেয়া হয় এবং সেটি স্ক্রিনিং করে স্বর্ণের সন্ধান পান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এদিকে কূটনীতিক আটকের খবর পেয়ে কোরিয়ান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি কো চো মিন, থার্ড সেক্রেটারি রি চোল সান ও ডেপুটি চিফ অব মিশন কেং কিং এপিবিএন অফিসে যান। পরে সেখানে উপস্থিত হন উত্তর কোরিয়ার হাইকমিশনার মুন সং হো। তারা বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এবং উত্তর কোরিয়ার হাইকমিশন দফায় দফায় বৈঠক করে। বৈঠকের পর আটক স্বর্ণ জব্দ করে ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ন্যামকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ঢাকা কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার কাজী মো. জিয়াউদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ফ্লাইটে অভিযান চালানো হয়েছিল। ওই স্বর্ণগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জব্ধ করেছে। একজন কূটনীতিকের কাছে যে স্বর্ণের বার পাওয়া যাবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী রাষ্ট্রদূতের জিম্মায় ওই কূটনীতিককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, ওই কূটনীতিক দাপ্তরিক কাজে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু, প্রমাণ হিসাবে কোন নথিপত্র দেখাতে পারেননি। কূটনীতিকদের লাগেজ স্ক্যান করার নিয়ম নেই। কিন্তু, এই সুযোগ নিয়ে তারা যদি অবৈধ পণ্য নিয়ে আসেন সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক।
No comments