মালালার জন্য ভালোবাসা by বেলাল হোসাইন রাহাত

প্রতিবাদের প্রতীক মালালার খ্যাতি এখন বিশ্বজোড়া। তাকে নিয়ে গান লিখেছেন অনেকে। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নেমেছে মানুষ। তার ছবি অঙ্কিত ব্যানার দেখা গেছে। সেলিব্রেটি ম্যাডোনা তার পিঠে মালালা ট্যাটু প্রদর্শন করেন।


বিবিসির এই ব্লগার মালালা দ্রুত সেরে উঠছে এটা স্বস্তির খবর। তালেবান জঙ্গিদের গুলিতে আহত হওয়া পাকিস্তানের ১৫ বছর বয়সী কিশোরী মালালা ঈদে তার মা-বাবাকে পাশে পেয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে হাসপাতালে তার পরিবারের সঙ্গে আমরা দেখেছি। তাকে হাসপাতালে দেখতে তিন দেশের মন্ত্রীরাও গিয়েছেন। তারা মালালাকে সবার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন। মালালা শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ কিডস রাইটস ফাউন্ডেশনের 'ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজ'-এর জন্য মনোনীত হয়েছে। বুদ্ধিমতী, সাহসী মালালার লেখাপড়ায় ভীষণ আগ্রহ। যে কোনো মূল্যে পড়াশোনা করতে চায় সে। হাসপাতালে থেকেও মালালা তার বাবার কাছে বই চেয়েছে। নিজের পড়াশোনার পাশাপাশি নারী শিক্ষার জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছিল। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে তার এ আন্দোলনের সূচনা। ১১ বছর বয়স থেকেই সে ব্লগিং করত। সেটাই হয়ে দাঁড়াল তার জন্য কাল। বলা যায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেল। যুক্তরাজ্যের হাসপাতাল এখন তার ঠিকানা। যে বয়সে সবার সঙ্গে হাসবে, কথা বলবে, সেই বয়সে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে বিছানায় সে। যদিও তালেবান জঙ্গিরা তাকে পুনরায় আক্রমণের কথা বলেছে। আমরা আশা করি, মালালা সুস্থ হয়ে ফিরে এলে পাকিস্তান সরকার তার যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করবে। আমাদের জন্য এটাও স্বস্তির খবর যে, মালালা আহত হলেও সবাই তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ব্রিটেনের কুইন্স এলিজাবেথ হাসপাতালে তার চিকিৎসা হচ্ছে। পাকিস্তান সরকার তার পরিবারেরও নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মালালার বাবা সোয়াত উপত্যকায় একটি বেসরকারি স্কুলশিক্ষক। তাদের জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু ২০০৭ সালে এই উপত্যকায় তালেবান জঙ্গিরা নারীশিক্ষা নিষিদ্ধ করে। বন্ধ হয়ে যায় মেয়েদের স্কুলে যাওয়া। তালেবানদের চাপানো এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেনি ছোট্ট মালালা। এর প্রতিবাদে সংগ্রামী হয়ে ওঠে সে। মেয়েদের শিক্ষার অধিকার নিয়ে প্রচারণা চালায়। এ সময় রোষানলে পড়ে তালেবানদের। এর পরিণতি হিসেবেই তালেবান জঙ্গিদের হামলার শিকার হয় মালালা। মালালা এখন খুদে শান্তির মডেল। তার জন্য আমাদের ভালোবাসা। দোয়া করি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আবার সামনে এগিয়ে যাক মালালা। আমরা বিশ্বাস করি, মালালাদের বিজয় একদিন হবেই হবে।
য় বেলাল হোসাইন রাহাত :শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
rahatju64@gmail.com
 

No comments

Powered by Blogger.