প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর হাতছানি by জেসমিন পাঁপড়ি
জোসনা রাত। আমরা তিনজন তারের বেড়া পার হয়ে ভারতে গেলাম। পার্টির কাছ থেকে ছয়টা গরু নিয়ে বাংলাদেশে আসলাম। লাইন ক্লিয়ার ছিল। তাই আবার গেলাম। আসার সময় বিএসএফ ধাওয়া করল। আমার দুই সঙ্গী পার হয়ে আসতে পারলেও আমি ধরা পড়লাম।
ওরা (বিএসএফ) ছিল দুইজন। আমার সঙ্গে হাতাহাতি হল। বন্দুক দিয়ে ওরা খুব মারে। আমিও খুব করে মেরেছিলাম। হাতে দা থাকায় আমার আরো সুবিধা হয়। এক সময় লাফ দিয়ে এপারে আসতে পারি। তারপর আমার সঙ্গীরা অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করে। শরীরে ৩৭টি সেলাই দিতে হয়। অনেক কষ্ট করে সেরে উঠেছি। যার গরু আনতে গিয়েছিলাম সে ফিরেও চায়নি। এরপর আর যাইনি গরু আনতে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবেই লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানার জোংড়া ইউনিয়নের ধবলকুড়ি গ্রাম ও ভারতের কুচবিহারের মাথাভাঙ্গা থানার নন্দেরঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু পারাপারের কাহিনী বর্ণনা করছিলেন বাংলাদেশি রাখাল আবু বকর।
আবু বকর বলেন, “ধরতে গেলে আমাদেরই দোষ বেশি। আমরা বর্ডার পার হয়ে না গেলেই পারি। অবৈধ উপায়ে ওপারে যাই বলেই ভারতের বিএসএফ আমাদের গুলি করে।”
লালমনিরহাট জেলা সদরের মোগলহাট, পাটগ্রামের দহগ্রাম, বুড়িমারি, মুন্সিবাড়ি, শ্রীরামপুর, তিসামোদ, নিজ্জমা, ভবলসুতি, কুছলিবাড়ি, কলসীর মুখ, ভবলগুড়ি, নাসিরগোমান গ্রামের সীমান্ত; হাতীবান্ধার সিংড়ীমারি, দই খোড়া, বড়খাতা, গেন্দুপুলি, কালিগঞ্জের চাপার হাট এবং আদিতমারীর কিছু এলাকা এবং সদর থানার সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে গরু আনা হয়।
জেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরে জানা যায়, অধিক লাভের আশায় ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আনে ব্যবসায়ীরা। টাকার ভাগ পায় বলে প্রশাসনও থাকে নিশ্চুপ। অথচ গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ দিতে হয় রাখালদের। এসব রাখালেরা রাতের আধারে গরু আনতে যাওয়ার সময় সঙ্গে ধারালো অস্ত্র রাখে। ধরা পড়লে সে অস্ত্র দিয়েই প্রতিহত করার চেষ্টা করে। আর তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের ভয়েই বিএসএফ দূর থেকে গুলি করে, অনেক সময় পাথর ছুঁড়ে মারে।
আবু বকর বলেন, “কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে ব্লাক করতে আসে না। অভাবে পড়ে আমরাই যাই। আর ধরা পড়লে বিএসএফকে ধরে মারি। তাহলে কেন ওরা গুলি করবে না!”
সীমান্ত এলাকার আবু বকরের মত অনেক গরু পাচারকারীই রাখালই স্বীকার করেন এমন কথা।
বুড়িমারি সীমান্তে কর্মরত কয়েকজন বিজিবি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, আমাদের দেশের মানুষরাই নিয়ম ভেঙে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যায়। তাদের হাতে বিভিন্ন সময় বিএসএফ সদস্যরাও আহত হয়। এজন্য তারাও বাংলাদেশিদেরকে হাতের কাছে পেলে শুধু গুলি নয়, ইটপাটকেল ছুঁড়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। যেহেতু বাংলাদেশিরাই অবৈধ অনুপ্রবেশ করে এজন্য আমাদের কিছুই করার থাকে না। তাছাড়া সীমান্ত পাহারায় বিজিবি সদস্যদের তুলনায় বিএসএফের সদস্য থাকে বেশি। একটি বাংলাদেশি ক্যাম্পে ২০ জন বিজিবি থাকলে ভারতীয় সীমান্তের বিএসএফ ক্যাম্পে থাকে দ্বিগুণ।
গরু রপ্তানি নিষিদ্ধ থাকায় ভারত থেকে কোনো বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে গরু আনা যায় না। কিন্তু অবৈধ পথে আনা গরু বৈধ করতে বাংলাদেশে মোট ২১টি করিডোর ব্যবহার করা হয়। এদের মধ্যে পাটগ্রামের ইসলামপুর সীমান্তে আছে একটি করিডোর। সেখানে গরু প্রতি ৫০০ টাকা রাজস্ব দিয়ে এসব গরু দেশের হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়। অনেক ব্যবসায়ী আবার সে রাজস্ব ফাঁকি দেয়। রাখালকে টাকা দিয়ে একজন ব্যবসায়ী গরু প্রতি লাভ করে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের গরুর বিক্রির টাকা আদান-প্রদান হয় হুন্ডির মাধ্যমে। পাসপোর্টধারী হুন্ডি ব্যবসায়ীরা এসব টাকা আনা-নেওয়া করে।
রাখাল আবু বকর বলেন, “গরু এনে দিতে পারলে ব্যবসায়ীরা টাকা দেয়। দুইটা গরু আনতে পারলে ৫ হাজার টাকা। এক রাতেই ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এজন্যই রিস্ক থাকলেও এভাবে গরু আনতে যায় রাখালরা।”
আবু বকরের কথার সত্যতা পাওয়া যায় পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ থানার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে। এখানকার কয়েক হাজার মানুষ গরুর রাখালের কাজ করে।
পাটগ্রাম থানা শহরের হ্যাপি ফুড সেন্টারের কর্মচারী শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “আমিও আগে এ কাজ করতাম। ধরা পড়েও বিএসএফ’র সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনো রকম বেঁচে আসি। জীবনের মায়া ও সন্তানদের কথা ভেবে ওই কাজ ছেড়ে দিয়েছি।”
শহীদুল বলেন, “এ কাজে হাজার হাজার লোক জড়িত। রাখালরা সীমান্ত পার হওয়ার আগে লাঠি, ছুরি, বল্লম, তার কাটা যন্ত্র নিয়ে যায়। বিএসএফের হাতে ধরা পড়লে এসব দিয়ে ওদেরকে মেরে পালাতে হয়।”
তবে একবার বিএসএফর হাতে ধরা পড়লে বেশির ভাগ আর ফেরে না বলে জানান একাধিক গরুর রাখাল। কিছুদিন আগে বিএসএফ’র হাতে প্রাণ দেওয়া ইসলামপুরের বাবুলের কথা মনে করিয়ে দেন অনেকে।
নিহত বাবুলের স্ত্রী আম্বিয়া বলেন, “আমার স্বামী রাখাল ছিল। সে কার গরু আনতি যেত বলতি পারব না। অনেক লোক গরু আনতি টাকা ফেলায়। হাজারের মত লোক রাখাল হয়ে গরু আনতি যায়। আমার স্বামীও গেছিল।”
বাবুলের সঙ্গী রাখাল সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “বাবুলের সঙ্গে আমিও ছিলাম। তারা আমাদেরকে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে ধাওয়া করে। এতে বাবুল হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। শুনেছি পরে ওরা তাকে ধরে নিয়ে বউ-ছাওয়ালের কথা জিগাইছে। পরে গুলি করে মারিছে।”
ব্যবসায়ীরা থেকে যায় আড়ালে
নিহত বাবুলের পরিবারের মত সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পরিবারে স্বামী-স্বজন হারানোর হাহাকার শোনা গেলেও থেমে নেই গরু আনা-নেওয়া। অল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় এ কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে অনেকে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বা কখনো ম্যানেজ করে এ কাজ করছে ব্যবসায়ীরা। আর যারা রাখালদের দিয়ে গরু আনায় সে সব প্রকৃত গরু ব্যবসায়ীরা থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
স্বামী হারানো আম্বিয়া বলেন, “তার মরণের পর বাচ্চাগুলা নিয়ে আমার দিশা খোয়া গেছে। সে কার গরু আনত জানিনে। ক্ষতিপূরণও চাতি পারিনে। যারা গরু আনায় তাদের কিছু হয় না, মরে রাখাল।”
এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে গরুর ব্যবসায়ীরা নিজেদেরকে পাথর ব্যবসায়ী পরিচয় দেন। হাতিবান্ধা থানার বাড়াইপাড়া গ্রামের সেকেন্দার সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বলেন, “আপা, আমি এক সময় গরুর ব্যবসা করলেও এখন আর জড়িত নই। এখন পাথরের ব্যবসা করছি।”
একইভাবে সিঙ্গিমারি গ্রামের বাবলু ও মন্টুসহ একাধিক গরু ব্যবসায়ী এ কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে।
তবে সেকেন্দার স্বীকার করেন, গরু ব্যবসায় মূল ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি কম। জীবনের ঝুঁকি থাকে রাখালদেরই। তবে তারা সে কথা জেনেই এ পেশায় আসে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোখলেছার রহমান সরকার বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা বিভিন্নভাবে জনগণকে এসব কাজে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করি।”
বিএসএফের গুলিতে যাতে কোনো তাজা প্রাণ না ঝরে যায়, সেজন্য আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয় বলেও জানান তিনি।
আবু বকর বলেন, “ধরতে গেলে আমাদেরই দোষ বেশি। আমরা বর্ডার পার হয়ে না গেলেই পারি। অবৈধ উপায়ে ওপারে যাই বলেই ভারতের বিএসএফ আমাদের গুলি করে।”
লালমনিরহাট জেলা সদরের মোগলহাট, পাটগ্রামের দহগ্রাম, বুড়িমারি, মুন্সিবাড়ি, শ্রীরামপুর, তিসামোদ, নিজ্জমা, ভবলসুতি, কুছলিবাড়ি, কলসীর মুখ, ভবলগুড়ি, নাসিরগোমান গ্রামের সীমান্ত; হাতীবান্ধার সিংড়ীমারি, দই খোড়া, বড়খাতা, গেন্দুপুলি, কালিগঞ্জের চাপার হাট এবং আদিতমারীর কিছু এলাকা এবং সদর থানার সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে গরু আনা হয়।
জেলার বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ঘুরে জানা যায়, অধিক লাভের আশায় ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু আনে ব্যবসায়ীরা। টাকার ভাগ পায় বলে প্রশাসনও থাকে নিশ্চুপ। অথচ গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে প্রাণ দিতে হয় রাখালদের। এসব রাখালেরা রাতের আধারে গরু আনতে যাওয়ার সময় সঙ্গে ধারালো অস্ত্র রাখে। ধরা পড়লে সে অস্ত্র দিয়েই প্রতিহত করার চেষ্টা করে। আর তাদের কাছে থাকা অস্ত্রের ভয়েই বিএসএফ দূর থেকে গুলি করে, অনেক সময় পাথর ছুঁড়ে মারে।
আবু বকর বলেন, “কোনো ভারতীয় বাংলাদেশে ব্লাক করতে আসে না। অভাবে পড়ে আমরাই যাই। আর ধরা পড়লে বিএসএফকে ধরে মারি। তাহলে কেন ওরা গুলি করবে না!”
সীমান্ত এলাকার আবু বকরের মত অনেক গরু পাচারকারীই রাখালই স্বীকার করেন এমন কথা।
বুড়িমারি সীমান্তে কর্মরত কয়েকজন বিজিবি সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, আমাদের দেশের মানুষরাই নিয়ম ভেঙে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যায়। তাদের হাতে বিভিন্ন সময় বিএসএফ সদস্যরাও আহত হয়। এজন্য তারাও বাংলাদেশিদেরকে হাতের কাছে পেলে শুধু গুলি নয়, ইটপাটকেল ছুঁড়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। যেহেতু বাংলাদেশিরাই অবৈধ অনুপ্রবেশ করে এজন্য আমাদের কিছুই করার থাকে না। তাছাড়া সীমান্ত পাহারায় বিজিবি সদস্যদের তুলনায় বিএসএফের সদস্য থাকে বেশি। একটি বাংলাদেশি ক্যাম্পে ২০ জন বিজিবি থাকলে ভারতীয় সীমান্তের বিএসএফ ক্যাম্পে থাকে দ্বিগুণ।
গরু রপ্তানি নিষিদ্ধ থাকায় ভারত থেকে কোনো বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে গরু আনা যায় না। কিন্তু অবৈধ পথে আনা গরু বৈধ করতে বাংলাদেশে মোট ২১টি করিডোর ব্যবহার করা হয়। এদের মধ্যে পাটগ্রামের ইসলামপুর সীমান্তে আছে একটি করিডোর। সেখানে গরু প্রতি ৫০০ টাকা রাজস্ব দিয়ে এসব গরু দেশের হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়। অনেক ব্যবসায়ী আবার সে রাজস্ব ফাঁকি দেয়। রাখালকে টাকা দিয়ে একজন ব্যবসায়ী গরু প্রতি লাভ করে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের গরুর বিক্রির টাকা আদান-প্রদান হয় হুন্ডির মাধ্যমে। পাসপোর্টধারী হুন্ডি ব্যবসায়ীরা এসব টাকা আনা-নেওয়া করে।
রাখাল আবু বকর বলেন, “গরু এনে দিতে পারলে ব্যবসায়ীরা টাকা দেয়। দুইটা গরু আনতে পারলে ৫ হাজার টাকা। এক রাতেই ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। এজন্যই রিস্ক থাকলেও এভাবে গরু আনতে যায় রাখালরা।”
আবু বকরের কথার সত্যতা পাওয়া যায় পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ থানার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে। এখানকার কয়েক হাজার মানুষ গরুর রাখালের কাজ করে।
পাটগ্রাম থানা শহরের হ্যাপি ফুড সেন্টারের কর্মচারী শহীদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “আমিও আগে এ কাজ করতাম। ধরা পড়েও বিএসএফ’র সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনো রকম বেঁচে আসি। জীবনের মায়া ও সন্তানদের কথা ভেবে ওই কাজ ছেড়ে দিয়েছি।”
শহীদুল বলেন, “এ কাজে হাজার হাজার লোক জড়িত। রাখালরা সীমান্ত পার হওয়ার আগে লাঠি, ছুরি, বল্লম, তার কাটা যন্ত্র নিয়ে যায়। বিএসএফের হাতে ধরা পড়লে এসব দিয়ে ওদেরকে মেরে পালাতে হয়।”
তবে একবার বিএসএফর হাতে ধরা পড়লে বেশির ভাগ আর ফেরে না বলে জানান একাধিক গরুর রাখাল। কিছুদিন আগে বিএসএফ’র হাতে প্রাণ দেওয়া ইসলামপুরের বাবুলের কথা মনে করিয়ে দেন অনেকে।
নিহত বাবুলের স্ত্রী আম্বিয়া বলেন, “আমার স্বামী রাখাল ছিল। সে কার গরু আনতি যেত বলতি পারব না। অনেক লোক গরু আনতি টাকা ফেলায়। হাজারের মত লোক রাখাল হয়ে গরু আনতি যায়। আমার স্বামীও গেছিল।”
বাবুলের সঙ্গী রাখাল সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, “বাবুলের সঙ্গে আমিও ছিলাম। তারা আমাদেরকে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে ধাওয়া করে। এতে বাবুল হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। শুনেছি পরে ওরা তাকে ধরে নিয়ে বউ-ছাওয়ালের কথা জিগাইছে। পরে গুলি করে মারিছে।”
ব্যবসায়ীরা থেকে যায় আড়ালে
নিহত বাবুলের পরিবারের মত সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন পরিবারে স্বামী-স্বজন হারানোর হাহাকার শোনা গেলেও থেমে নেই গরু আনা-নেওয়া। অল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় এ কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে অনেকে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বা কখনো ম্যানেজ করে এ কাজ করছে ব্যবসায়ীরা। আর যারা রাখালদের দিয়ে গরু আনায় সে সব প্রকৃত গরু ব্যবসায়ীরা থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
স্বামী হারানো আম্বিয়া বলেন, “তার মরণের পর বাচ্চাগুলা নিয়ে আমার দিশা খোয়া গেছে। সে কার গরু আনত জানিনে। ক্ষতিপূরণও চাতি পারিনে। যারা গরু আনায় তাদের কিছু হয় না, মরে রাখাল।”
এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে গরুর ব্যবসায়ীরা নিজেদেরকে পাথর ব্যবসায়ী পরিচয় দেন। হাতিবান্ধা থানার বাড়াইপাড়া গ্রামের সেকেন্দার সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে বলেন, “আপা, আমি এক সময় গরুর ব্যবসা করলেও এখন আর জড়িত নই। এখন পাথরের ব্যবসা করছি।”
একইভাবে সিঙ্গিমারি গ্রামের বাবলু ও মন্টুসহ একাধিক গরু ব্যবসায়ী এ কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে।
তবে সেকেন্দার স্বীকার করেন, গরু ব্যবসায় মূল ব্যবসায়ীদের ঝুঁকি কম। জীবনের ঝুঁকি থাকে রাখালদেরই। তবে তারা সে কথা জেনেই এ পেশায় আসে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোখলেছার রহমান সরকার বাংলানিউজকে বলেন, “আমরা বিভিন্নভাবে জনগণকে এসব কাজে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করি।”
বিএসএফের গুলিতে যাতে কোনো তাজা প্রাণ না ঝরে যায়, সেজন্য আইনগত ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয় বলেও জানান তিনি।
No comments