আইনজীবীদের সংবর্ধনায় কাঁদলেন পদত্যাগী বিচারক
চট্টগ্রাম আদালতের পদত্যাগী বিচারক, সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আব্দুর রহমানকে বৃহস্পতিবার বিদায়ী সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। সংবর্ধনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বদলির আদেশের ক্ষুব্ধ হয়ে চাকুরিতে ইস্তফা দেয়া এ বিচারক।
এছাড়া বক্তব্যে তিনি তার সঙ্গে বদলি হওয়া চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম এবিএম নিজামুল হকের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগও তুলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের ৩ নম্বর হলরুমে এ সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অশোক কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, `পদত্যাগী বিচারক আব্দুর রহমান আইন পেশায় ফিরে যাবার কথা বললে আমরা তাকে সর্বসম্মতভাবে চট্টগ্রামে আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। তবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি তার চাকুরীতে ইস্তফা দেয়ার কথা বলে অঝোরে কেঁদেছেন।`
সংবর্ধনা সভায় বক্তব্যে কান্নজাড়িত কন্ঠে আব্দুর রহমান বলেন, `এক অপ্রত্যাশিত সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি আজ উপস্থিত হয়েছি কিছু বলার সুযোগ নিয়ে। সাবেক সিএমএম এবিএম নিজামুল হকের দুর্নীতির সহচয় না হওয়ায় এবং আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নামে মিথ্যা তদবির না শুনায় তিনি আমাকে রাজনৈতিক ক্রীড়নকে পরিণত করেন। তিনি মহামান্য হাইকোর্টে ও আইন মন্ত্রণালয়ে আমার নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রেরণে বদলির ব্যবস্থা করেন।`
তিনি বলেন, `মহামান্য হাইকোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা আমাকে কোনরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চট্টগ্রামে যোগদানের মাত্র চার মাসের মাথায় আমাকে বরিশালে বদলি করেন। অথচ সিএমএম`র বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির জেলা আইনজীবী সমিতির বস্তুনিষ্ঠ অভিযোগ থাকা স্বত্ত্বেও তাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও আঞ্চলিকতার বিবেচনায় নিজ জেলার পাশে প্রাইজ পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এ অন্যায়ের প্রতিবাদে আমি সুচিন্তিত ও সজ্ঞানে আমার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।`
আব্দুর রহমান বলেন, `সাবেক সিএমএম এবিএম নিজামুল হক নিজের দুর্নীতিকে জায়েজ করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের তদবিরের অপেক্ষায় থাকতেন। তিনি নিজে তদবির শুনতেন এবং অধ:স্তন ম্যাজিস্ট্রেটদের এসিআর এর ভয় দেখিয়ে তদবির শুনতে বাধ্য করতেন।`
তিনি বলেন, `ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত নীতি, ৯৯ জন দোষী মুক্তি পাক, তথাপি একজন নিরাপরাধী সাজা না পাক, মানা হলেও আমাদের বিচার প্রশাসনে ৯৯ জন দুর্নীতিবাজ বহাল থাকলেও একজন ভাল বিচারক যেন চাকুরি থেকে ঝরে না পড়ে সেই নীতি এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।`
তিনি বলেন, `একজন দেষপ্রেমিক কখনও আঞ্চলিকতায় বিশ্বাস করেন না। অথচ আমাদের বিচার ব্যবস্থা ক্ষমতার আঞ্চলিক বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।`
তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, `আমি চাকুররি পূর্বে আইন পেশায় ছিলাম। আবার আইন পেশায় ফিরে এলাম। আমি বিচারক হযে হয়ত পরিপূর্ণ সফল হতে পারিনি, তবে আমার বিশ্বাস, আইনজীবী হয়ে আমি আইনরে শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিরাট ভূমিকা রাখতে পারি এবং পারব।`
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক অশোক দাশ, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, জেলা পিপি আবুল হাশেম, সাবেক পিপি আব্দুস সাত্তার সহ বেশ কয়েকজন জেষ্ঠ্য আইনজীবী।
অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে মানসিক হতাশা এবং বদলির আদেশ মানতে না পেরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আব্দুর রহমান। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর আব্দুর রহমান বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পদ থেকে তিনি চূড়ান্তভাবে পদত্যাগ করেন।
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম আদালতের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) এবিএম নিজামুল হকের (সদ্য বদলি হওয়া) বদলির দাবিতে গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল জেলা আইনজীবী সমিতি।
এ আন্দোলনের মধ্যেই আব্দুর রহমানকে বরিশালের যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে বদলির আদেশ দেয়া হয়। এ আদেশকে অন্যায়, অযৌক্তিক এবং নিজের জন্য অপমানজনক হিসেবে বিবেচনা করে ওই বিচারক পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
তবে আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে এবিএম নিজামুল হককেও সিএমএম পদ থেকে বদলি করা হয়।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট অশোক কুমার দাশ বাংলানিউজকে বলেন, `পদত্যাগী বিচারক আব্দুর রহমান আইন পেশায় ফিরে যাবার কথা বললে আমরা তাকে সর্বসম্মতভাবে চট্টগ্রামে আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। তবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি তার চাকুরীতে ইস্তফা দেয়ার কথা বলে অঝোরে কেঁদেছেন।`
সংবর্ধনা সভায় বক্তব্যে কান্নজাড়িত কন্ঠে আব্দুর রহমান বলেন, `এক অপ্রত্যাশিত সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি আজ উপস্থিত হয়েছি কিছু বলার সুযোগ নিয়ে। সাবেক সিএমএম এবিএম নিজামুল হকের দুর্নীতির সহচয় না হওয়ায় এবং আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নামে মিথ্যা তদবির না শুনায় তিনি আমাকে রাজনৈতিক ক্রীড়নকে পরিণত করেন। তিনি মহামান্য হাইকোর্টে ও আইন মন্ত্রণালয়ে আমার নামে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ প্রেরণে বদলির ব্যবস্থা করেন।`
তিনি বলেন, `মহামান্য হাইকোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ের বিচার শাখা আমাকে কোনরূপ আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে চট্টগ্রামে যোগদানের মাত্র চার মাসের মাথায় আমাকে বরিশালে বদলি করেন। অথচ সিএমএম`র বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির জেলা আইনজীবী সমিতির বস্তুনিষ্ঠ অভিযোগ থাকা স্বত্ত্বেও তাকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও আঞ্চলিকতার বিবেচনায় নিজ জেলার পাশে প্রাইজ পোস্টিং দেয়া হয়েছে। এ অন্যায়ের প্রতিবাদে আমি সুচিন্তিত ও সজ্ঞানে আমার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি।`
আব্দুর রহমান বলেন, `সাবেক সিএমএম এবিএম নিজামুল হক নিজের দুর্নীতিকে জায়েজ করার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের তদবিরের অপেক্ষায় থাকতেন। তিনি নিজে তদবির শুনতেন এবং অধ:স্তন ম্যাজিস্ট্রেটদের এসিআর এর ভয় দেখিয়ে তদবির শুনতে বাধ্য করতেন।`
তিনি বলেন, `ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত নীতি, ৯৯ জন দোষী মুক্তি পাক, তথাপি একজন নিরাপরাধী সাজা না পাক, মানা হলেও আমাদের বিচার প্রশাসনে ৯৯ জন দুর্নীতিবাজ বহাল থাকলেও একজন ভাল বিচারক যেন চাকুরি থেকে ঝরে না পড়ে সেই নীতি এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।`
তিনি বলেন, `একজন দেষপ্রেমিক কখনও আঞ্চলিকতায় বিশ্বাস করেন না। অথচ আমাদের বিচার ব্যবস্থা ক্ষমতার আঞ্চলিক বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।`
তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে বলেন, `আমি চাকুররি পূর্বে আইন পেশায় ছিলাম। আবার আইন পেশায় ফিরে এলাম। আমি বিচারক হযে হয়ত পরিপূর্ণ সফল হতে পারিনি, তবে আমার বিশ্বাস, আইনজীবী হয়ে আমি আইনরে শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় বিরাট ভূমিকা রাখতে পারি এবং পারব।`
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক অশোক দাশ, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, জেলা পিপি আবুল হাশেম, সাবেক পিপি আব্দুস সাত্তার সহ বেশ কয়েকজন জেষ্ঠ্য আইনজীবী।
অভ্যন্তরীণ বিরোধ নিয়ে মানসিক হতাশা এবং বদলির আদেশ মানতে না পেরে গত ১৮ সেপ্টেম্বর পদত্যাগপত্র জমা দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আব্দুর রহমান। এরপর গত ২৭ সেপ্টেম্বর আব্দুর রহমান বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পদ থেকে তিনি চূড়ান্তভাবে পদত্যাগ করেন।
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে চট্টগ্রাম আদালতের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) এবিএম নিজামুল হকের (সদ্য বদলি হওয়া) বদলির দাবিতে গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল জেলা আইনজীবী সমিতি।
এ আন্দোলনের মধ্যেই আব্দুর রহমানকে বরিশালের যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে বদলির আদেশ দেয়া হয়। এ আদেশকে অন্যায়, অযৌক্তিক এবং নিজের জন্য অপমানজনক হিসেবে বিবেচনা করে ওই বিচারক পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন।
তবে আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে এবিএম নিজামুল হককেও সিএমএম পদ থেকে বদলি করা হয়।
No comments