ধসের শঙ্কা নিয়ে ঢাবির কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর হলবাস by মাহমুদুল হাসান
হলের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফাটল, ঘন ঘন
প্লাস্টার খসে পড়া আর মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হলেই যেকোনো সময় ধসে পরতে
পারে হলের পুরো কাঠামো— এভাবেই আতঙ্কের মধ্যে হলবাস করছেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি
মুহসীন হলের টিভি কক্ষের ছাদের একটি বড় অংশের প্লাস্টার ধসে ২ শিক্ষার্থী
আহত হওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। আর আতঙ্ক
বৃদ্ধির নতুন কারণ হিসেবে তো আগেই যোগ হয়েছে সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার
মতো ভয়াবহ ঘটনা।
শিক্ষার্থীরা জানান, যেকোনো সময় ভূমিকম্প বা অন্য যেকোনো কারণে হল ধসে পড়তে পারে। তাই এখানে আমাদের সময় কাটাতে হয় এক ধরনের আতঙ্কের মধ্য দিয়ে। তাছাড়া মাঝে মাঝে প্লাস্টার ধসে আহতও হতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। কম মাত্রার ভূমিকম্প হলেই শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে হল থেকে বের হওয়ার জন্য ছোটাছুটি শুরু করে দেন । অনেকেই প্রাণভয়ে দু’তলা কিংবা তিন তলা থেকে লাফিয়েও পড়েন।
সংশ্লিষ্ট হলগুলোর প্রাধ্যক্ষরা জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তারা লিখিতভাবে হল ভবন সংস্কারের বিষয়টি জানান। কিন্তু আবেদনে প্রশাসন এতই সামান্য অর্থ দেয় যে, তা দিয়ে পুরোপুরি সংস্কার সম্ভব হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, অর্থের অভাবেই তারা পুরোপুরি সংস্কার করতে পারছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞরা বেশ কয়েকটি হলকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে— ‘৬৭ সালে নির্মিত মুহসীন হল, ’৬২ সালে নির্মিত মাস্টার দা সূর্যসেন হল, ’৫৭ সালে নির্মিত জহুরুল হক হল, ’৬৬ সালে নির্মিত স্যার পি জে হার্টস ইন্টারন্যাশনাল হল ও ’৬৩ সালে নির্মিত রোকেয়া হল।
এছাড়া ফজলুল হক মুসলিম হল, শহীদুল্লাহ হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ হলের তালিকায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুহসীন হল, সূর্যসেন হল, ফজলুল হক হল, জহুরুল হক হলের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ফাটল। এসব হলের বিমগুলোতেও দেখা দিয়েছে গভীর ফাটল। প্রায়ই প্লাস্টার খসে পড়াও একটি আতঙ্ক উদ্রেককারী ঘটনা। হল প্রশাসনের কাছে বারবার জানিয়েও তারা এর কোনো স্থায়ী প্রতিকার পাচ্ছেন না। এর মধ্যে মুহসীন হলের অবস্থাই বেশি নাজুক।
বুয়েটের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা মনে করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হল ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকলেও ’৭০ সালের আগে নির্মিত ভবনগুলোই তুলনামূলক বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জগন্নাথ হলের পুরাতন ভবনসমূহ, এসএম হল, শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, মুহসীন হল, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এবং মাস্টার দা সূর্য সেন হল।
বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েটি হল ঝুঁকিপূ্র্ণ, ভূমিকম্পের জন্য তো বটেই। কারণ এগুলো বেশির ভাগই নির্মাণের পর প্রায় ৬০-৭০ বছর অতিক্রম করেছে। আর যে সব হলে ফাটল দেখা দিয়েছে তার বেশির ভাগই অনেক আগে তৈরি, তখন ভবন নির্মাণে ভূমিকম্পের কথা চিন্তা করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, “সাভার ট্রাজেডিতে সতর্ক হয়ে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন হলের স্থায়িত্ব এবং বর্তমান অবস্থার ওপর এক্সপার্টদের দ্বারা সার্ভে চালাচ্ছি। একটি বিখ্যাত বিদেশী কোম্পানির সহায়তায় খুব শীঘ্রই একটি সমীক্ষা চালানো হবে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে সব হলে ফাটল দেখা দিচ্ছে বা প্লাস্টার ধসে পড়ছে সেসব হলে আমরা মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জিয়াউর রহমান ও বঙ্গবন্ধু হলে কাজ চলছে। মুহসীন হলের এক অংশের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, কিন্তু অর্থের অভাবে পুরোটা সম্পন্ন করা যায়নি। আমরা ২০১১ সালের দিকে সংস্কারের জন্য ১৬ কোটি টাকা পাই, এর পুরো অর্থ এখনো হাতে আসেনি। টাকা পেলে বাকিগুলোতে দ্রুত হাত দেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল হলে পিছনের স্টাফ কোয়ার্টার, আইবিএর হোস্টেল, ফজলুল হক হলের একটি ব্লক, জহুরুল হক হলের এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবনে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, কিছু কিছু ভবন এতটাই অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে যেগুলো সংস্কার করলেও কোনো লাভ হবে না। সেজন্য নতুন কোনো হল নির্মিত হলে তাতে ঝঁকিপূর্ণ হলের শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরিত করে সেটা ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করতে হবে। তা না হলে কেবল সংস্কার ভূমিকম্প রোধ করতে পারবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য় অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, “আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বত্রই সংস্কার কাজ চলছে। নতুন নতুন হল নির্মাণ করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা কেটে যাবে।”
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ই অক্টোবর জগন্নাথ হলের টিভি কক্ষের ছাদ ধসে ৩৯ শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, যেকোনো সময় ভূমিকম্প বা অন্য যেকোনো কারণে হল ধসে পড়তে পারে। তাই এখানে আমাদের সময় কাটাতে হয় এক ধরনের আতঙ্কের মধ্য দিয়ে। তাছাড়া মাঝে মাঝে প্লাস্টার ধসে আহতও হতে হচ্ছে কাউকে কাউকে। কম মাত্রার ভূমিকম্প হলেই শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে হল থেকে বের হওয়ার জন্য ছোটাছুটি শুরু করে দেন । অনেকেই প্রাণভয়ে দু’তলা কিংবা তিন তলা থেকে লাফিয়েও পড়েন।
সংশ্লিষ্ট হলগুলোর প্রাধ্যক্ষরা জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তারা লিখিতভাবে হল ভবন সংস্কারের বিষয়টি জানান। কিন্তু আবেদনে প্রশাসন এতই সামান্য অর্থ দেয় যে, তা দিয়ে পুরোপুরি সংস্কার সম্ভব হয় না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, অর্থের অভাবেই তারা পুরোপুরি সংস্কার করতে পারছেন না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশেষজ্ঞরা বেশ কয়েকটি হলকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে— ‘৬৭ সালে নির্মিত মুহসীন হল, ’৬২ সালে নির্মিত মাস্টার দা সূর্যসেন হল, ’৫৭ সালে নির্মিত জহুরুল হক হল, ’৬৬ সালে নির্মিত স্যার পি জে হার্টস ইন্টারন্যাশনাল হল ও ’৬৩ সালে নির্মিত রোকেয়া হল।
এছাড়া ফজলুল হক মুসলিম হল, শহীদুল্লাহ হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলও রয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ হলের তালিকায়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মুহসীন হল, সূর্যসেন হল, ফজলুল হক হল, জহুরুল হক হলের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে ফাটল। এসব হলের বিমগুলোতেও দেখা দিয়েছে গভীর ফাটল। প্রায়ই প্লাস্টার খসে পড়াও একটি আতঙ্ক উদ্রেককারী ঘটনা। হল প্রশাসনের কাছে বারবার জানিয়েও তারা এর কোনো স্থায়ী প্রতিকার পাচ্ছেন না। এর মধ্যে মুহসীন হলের অবস্থাই বেশি নাজুক।
বুয়েটের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীরা মনে করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হল ভূমিকম্প ঝুঁকিতে থাকলেও ’৭০ সালের আগে নির্মিত ভবনগুলোই তুলনামূলক বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জগন্নাথ হলের পুরাতন ভবনসমূহ, এসএম হল, শহীদুল্লাহ হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, মুহসীন হল, সার্জেন্ট জহুরুল হক হল এবং মাস্টার দা সূর্য সেন হল।
বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েটি হল ঝুঁকিপূ্র্ণ, ভূমিকম্পের জন্য তো বটেই। কারণ এগুলো বেশির ভাগই নির্মাণের পর প্রায় ৬০-৭০ বছর অতিক্রম করেছে। আর যে সব হলে ফাটল দেখা দিয়েছে তার বেশির ভাগই অনেক আগে তৈরি, তখন ভবন নির্মাণে ভূমিকম্পের কথা চিন্তা করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, “সাভার ট্রাজেডিতে সতর্ক হয়ে আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন হলের স্থায়িত্ব এবং বর্তমান অবস্থার ওপর এক্সপার্টদের দ্বারা সার্ভে চালাচ্ছি। একটি বিখ্যাত বিদেশী কোম্পানির সহায়তায় খুব শীঘ্রই একটি সমীক্ষা চালানো হবে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে সব হলে ফাটল দেখা দিচ্ছে বা প্লাস্টার ধসে পড়ছে সেসব হলে আমরা মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জিয়াউর রহমান ও বঙ্গবন্ধু হলে কাজ চলছে। মুহসীন হলের এক অংশের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে, কিন্তু অর্থের অভাবে পুরোটা সম্পন্ন করা যায়নি। আমরা ২০১১ সালের দিকে সংস্কারের জন্য ১৬ কোটি টাকা পাই, এর পুরো অর্থ এখনো হাতে আসেনি। টাকা পেলে বাকিগুলোতে দ্রুত হাত দেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ইন্টারন্যাশনাল হলে পিছনের স্টাফ কোয়ার্টার, আইবিএর হোস্টেল, ফজলুল হক হলের একটি ব্লক, জহুরুল হক হলের এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ের অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ভবনে যেকোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, কিছু কিছু ভবন এতটাই অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে যেগুলো সংস্কার করলেও কোনো লাভ হবে না। সেজন্য নতুন কোনো হল নির্মিত হলে তাতে ঝঁকিপূর্ণ হলের শিক্ষার্থীদের স্থানান্তরিত করে সেটা ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করতে হবে। তা না হলে কেবল সংস্কার ভূমিকম্প রোধ করতে পারবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য় অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, “আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বত্রই সংস্কার কাজ চলছে। নতুন নতুন হল নির্মাণ করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এসব সমস্যা কেটে যাবে।”
উল্লেখ্য, ১৯৮৫ সালের ১৫ই অক্টোবর জগন্নাথ হলের টিভি কক্ষের ছাদ ধসে ৩৯ শিক্ষার্থীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
No comments