ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকার তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ডে রেশমা by আদিত্য আরাফাত
৪১৫ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হয়ে
ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে তৃতীয় সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়লেন দিনাজপুরের
রেশমা আক্তার! অনলাইন ঘেঁটে জানা গেছে, এর আগে পৃথিবীর ইতিহাসে ধ্বংসস্তূপে
সর্বোচ্চ বেঁচে থাকার রেকর্ড ছিল পাকিস্তান ও হাইতিতে।
অবশ্য
পাকিস্তান ও হাইতির ঘটনা দু’টি ঘটে ভূমিকম্পের পর আর রেশমার ঘটনাটি শুধুই
ভবন ধসের। তাই কেবলমাত্র ভবন ধসের ক্ষেত্রে ধরলে রেশমাকে প্রথম রেকর্ডধারী
বলে দাবি করা যায়।
পাকিস্তানে ২০০৫ সালে যে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়, সে ঘটনায় ৬৩ দিন বেঁচে থাকা নাকশা বিবি এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকার সর্বোচ্চ রেকর্ডের অধিকারী। নাকশা বিবি আটকা পড়েছিলেন তার রান্নাঘরে। সেখানে তিনি পঁচা খাবার ও পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন ৬৩ দিন।
২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্পের ২৭ দিন পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল৷ তার নাম ছিল ইভান্স মনসিগনাক। ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু দেয়াল ধসে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। একই ঘটনায় ১১ দিন বেঁচে ছিলেন উইসমন্ড এক্সানটস (২৫)। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের ইভান্স মনসিগনাক ২৭ দিন পর এবং উইসমন্ড এক্সানটস ১১ দিন পরও বেঁচে থেকে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।
ভূমিধসে বেঁচে থাকার রেকর্ডে তাদেরকে যথাক্রমে প্রথম ও তৃতীয় হিসেবে ধরা হতো।
ভূমিধসে ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকার দ্বিতীয় রেকর্ডধারী ফিলিপাইনের ফেডরিকো ডে। ১৯৯০ সালে দেশটিতে ভয়াবহ ভূকম্পনের পর একটি হোটেলের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আটকা পড়েন তিনি। সেখান থেকে উদ্ধারের আগে ১৪ দিন পর্যন্ত তিনি বেঁচে ছিলেন পানি ও মূত্র পান করে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় স্যামপোং ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ধসের ১৬ দিন পর উদ্ধার হন পার্ক সেউং হায়ুন নামে ১৯ বছরের এক কিশোরী। ১৬ দিন পর উদ্ধার হলে সেউং ধসে পড়া ভবনে ছিলেন ৪০৯ ঘণ্টা। ১৯৯৫ সালের ওই ঘটনায় মারা যান ৫০২ জন।
আর বাংলাদেশে ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে ১০ এপ্রিল বেলা ৪টা ২৫ পর্যন্ত ধসে পড়া ভবনের ভেতরে অক্ষত অবস্থায় থেকে বের হয়ে সবাইকে তাক লাগালেন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিক রেশমা। ৪১৫ ঘণ্টা অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ছিলেন দিনাজপুরের এ মেয়ে।
রানা প্লাজার তিনতলার নিউ ওয়েভ বটমসের কাজ করতেন এ বস্ত্র বালিকা। ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। ধসের সময় তিন তলার ওই কারখানায় কাপড়ের স্তূপে চাপা পড়েছিলেন তিনি।
উদ্ধারকর্মীরা ভুলেও ভাবেননি ১৭ দিন পর ধসে পড়া ভবনে কেউ বেঁচে থাকতে পারেন। গত দশ দিনের বেশি সময় ধরে যেখানে গলিত আর বিকৃত লাশ বের করে আনছেন তারা, সেখানে এতোদিন পর একটি জীবনের স্পন্দন পাওয়া উদ্ধারকর্মীসহ সকলের কাছেই বিষ্ময়কর!
ধসে পড়ার ১৭ দিন পর রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন সেনা সদস্যরা।
দুপুর সোয়া ৩টার দিকে ভবনটির বেসমেন্টে জীবিত সন্ধান পাওয়া যায় তাকে।
এ খবর পেয়েই সাভারের জিওসিসহ উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে ছুটে যান। রেশমার জন্য খাবার, পানি ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়।
একটি অ্যাম্বুলেন্স ও স্ট্রেচারও নিয়ে আসা হয় সেখানে। এ সময় উপস্থিত সকলেই রেশমার সুস্থভাবে উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেন।
বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে রেশমাকে নিরাপদে বের করে নিয়ে আসা হলে উপস্থিত সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নেওয়া হয় সাভারের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)।
মেজর মোয়াজ্জেম জানান, বেজমেন্ট খোঁড়ার সময় হঠাৎ ওয়ারেন্ট অফিসার রাজ্জাক একটি লাঠি নাড়াতে দেখতে পান। কাছে গিয়ে গর্ত দিয়ে কাছে গেলে রেশমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে রাজ্জাক জানান, একটি গর্ত করা হলে সেখান দিয়ে তিনি দেখতে পান, কেউ একজন একটি ছোট পাইপ নাড়ছেন। তিনি আওয়াজ দিলে মেয়েটি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘স্যার আমাকে বাঁচান’।
এ সময় ওই সেনা সদস্য কোনো খাবার বা পানি আছে বা খেয়েছেন কি না জানতে চাইলে রেশমা জানান, মেঝেতে পড়ে থাকা পানি ও তার সহকর্মীদের ফেলে যাওয়া খাবারে ১৫ দিন পর্যন্ত চলেছেন। তবে গত দু’দিন তিনি অভুক্ত অবস্থায় আছেন।
এরপর তাকে গর্ত দিয়ে পানি ও খাবার দেওয়া হয়। উদ্ধারের পর রেশমা সম্পূর্ণ অক্ষত থাকলেও তাকে দুর্বল দেখাচ্ছিল।
উদ্ধার অভিযানে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান বলেন, “সৌভাগ্যক্রমে সেখানে একটি ‘ক্যাভিটি’ ছিল, যার কারণে অক্সিজেনের প্রবাহ ছিল। ভেতরে ভাগ্যবান আর কেউ আছেন কি না তা আমরা খুঁজে দেখছি।”
গত ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নয় তলা রানা প্লাজা ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, রেড ক্রিসেন্টসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।
উদ্ধার কার্যক্রম শুরুর ১১০ ঘণ্টা পর গত ২৮ এপ্রিল জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরুর ঘোষণা দেন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
রানা প্লাজা ধসের পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
পাকিস্তানে ২০০৫ সালে যে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়, সে ঘটনায় ৬৩ দিন বেঁচে থাকা নাকশা বিবি এখন পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকার সর্বোচ্চ রেকর্ডের অধিকারী। নাকশা বিবি আটকা পড়েছিলেন তার রান্নাঘরে। সেখানে তিনি পঁচা খাবার ও পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন ৬৩ দিন।
২০১০ সালের ১২ জানুয়ারি হাইতির ভয়াবহ ভূমিকম্পের ২৭ দিন পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল৷ তার নাম ছিল ইভান্স মনসিগনাক। ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু দেয়াল ধসে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। একই ঘটনায় ১১ দিন বেঁচে ছিলেন উইসমন্ড এক্সানটস (২৫)। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের ইভান্স মনসিগনাক ২৭ দিন পর এবং উইসমন্ড এক্সানটস ১১ দিন পরও বেঁচে থেকে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন।
ভূমিধসে বেঁচে থাকার রেকর্ডে তাদেরকে যথাক্রমে প্রথম ও তৃতীয় হিসেবে ধরা হতো।
ভূমিধসে ধ্বংসস্তূপে বেঁচে থাকার দ্বিতীয় রেকর্ডধারী ফিলিপাইনের ফেডরিকো ডে। ১৯৯০ সালে দেশটিতে ভয়াবহ ভূকম্পনের পর একটি হোটেলের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে আটকা পড়েন তিনি। সেখান থেকে উদ্ধারের আগে ১৪ দিন পর্যন্ত তিনি বেঁচে ছিলেন পানি ও মূত্র পান করে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় স্যামপোং ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ধসের ১৬ দিন পর উদ্ধার হন পার্ক সেউং হায়ুন নামে ১৯ বছরের এক কিশোরী। ১৬ দিন পর উদ্ধার হলে সেউং ধসে পড়া ভবনে ছিলেন ৪০৯ ঘণ্টা। ১৯৯৫ সালের ওই ঘটনায় মারা যান ৫০২ জন।
আর বাংলাদেশে ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টা থেকে ১০ এপ্রিল বেলা ৪টা ২৫ পর্যন্ত ধসে পড়া ভবনের ভেতরে অক্ষত অবস্থায় থেকে বের হয়ে সবাইকে তাক লাগালেন বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিক রেশমা। ৪১৫ ঘণ্টা অবিশ্বাস্যভাবে বেঁচে ছিলেন দিনাজপুরের এ মেয়ে।
রানা প্লাজার তিনতলার নিউ ওয়েভ বটমসের কাজ করতেন এ বস্ত্র বালিকা। ২৪ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। ধসের সময় তিন তলার ওই কারখানায় কাপড়ের স্তূপে চাপা পড়েছিলেন তিনি।
উদ্ধারকর্মীরা ভুলেও ভাবেননি ১৭ দিন পর ধসে পড়া ভবনে কেউ বেঁচে থাকতে পারেন। গত দশ দিনের বেশি সময় ধরে যেখানে গলিত আর বিকৃত লাশ বের করে আনছেন তারা, সেখানে এতোদিন পর একটি জীবনের স্পন্দন পাওয়া উদ্ধারকর্মীসহ সকলের কাছেই বিষ্ময়কর!
ধসে পড়ার ১৭ দিন পর রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমাকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেন সেনা সদস্যরা।
দুপুর সোয়া ৩টার দিকে ভবনটির বেসমেন্টে জীবিত সন্ধান পাওয়া যায় তাকে।
এ খবর পেয়েই সাভারের জিওসিসহ উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনী ও সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তারা রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে ছুটে যান। রেশমার জন্য খাবার, পানি ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়।
একটি অ্যাম্বুলেন্স ও স্ট্রেচারও নিয়ে আসা হয় সেখানে। এ সময় উপস্থিত সকলেই রেশমার সুস্থভাবে উদ্ধারের জন্য প্রার্থনা করেন।
বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে রেশমাকে নিরাপদে বের করে নিয়ে আসা হলে উপস্থিত সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
সেনাবাহিনীর অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নেওয়া হয় সাভারের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)।
মেজর মোয়াজ্জেম জানান, বেজমেন্ট খোঁড়ার সময় হঠাৎ ওয়ারেন্ট অফিসার রাজ্জাক একটি লাঠি নাড়াতে দেখতে পান। কাছে গিয়ে গর্ত দিয়ে কাছে গেলে রেশমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
পরে রাজ্জাক জানান, একটি গর্ত করা হলে সেখান দিয়ে তিনি দেখতে পান, কেউ একজন একটি ছোট পাইপ নাড়ছেন। তিনি আওয়াজ দিলে মেয়েটি চিৎকার করে বলে ওঠেন, ‘স্যার আমাকে বাঁচান’।
এ সময় ওই সেনা সদস্য কোনো খাবার বা পানি আছে বা খেয়েছেন কি না জানতে চাইলে রেশমা জানান, মেঝেতে পড়ে থাকা পানি ও তার সহকর্মীদের ফেলে যাওয়া খাবারে ১৫ দিন পর্যন্ত চলেছেন। তবে গত দু’দিন তিনি অভুক্ত অবস্থায় আছেন।
এরপর তাকে গর্ত দিয়ে পানি ও খাবার দেওয়া হয়। উদ্ধারের পর রেশমা সম্পূর্ণ অক্ষত থাকলেও তাকে দুর্বল দেখাচ্ছিল।
উদ্ধার অভিযানে থাকা লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান বলেন, “সৌভাগ্যক্রমে সেখানে একটি ‘ক্যাভিটি’ ছিল, যার কারণে অক্সিজেনের প্রবাহ ছিল। ভেতরে ভাগ্যবান আর কেউ আছেন কি না তা আমরা খুঁজে দেখছি।”
গত ২৪ এপ্রিল সকালে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নয় তলা রানা প্লাজা ধসে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনী, ফায়ার ব্রিগেড, রেড ক্রিসেন্টসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।
উদ্ধার কার্যক্রম শুরুর ১১০ ঘণ্টা পর গত ২৮ এপ্রিল জীবিত কাউকে উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরুর ঘোষণা দেন অভিযানের নেতৃত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী।
রানা প্লাজা ধসের পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
No comments