৫৯৭ পরিবারের দখলে পার্লামেন্ট!
পাকিস্তানের বিদায়ী জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের প্রায় ৪৪ শতাংশ আসন পূর্ববর্তী পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সদস্যদের আত্মীয়স্বজনের দখলে ছিল। মাসিক হেরাল্ড-এর এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানে প্রথম এক ব্যক্তি এক ভোট নিয়ম চালু হয়। মূলত সেই থেকেই পার্লামেন্টে রাজনৈতিক পরিবারগুলোর প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি এই গবেষণার হিসাবে নেওয়া হয়। পত্রিকাটির গবেষণায় দেখা গেছে, গত নয়টি সাধারণ নির্বাচনে সিনেট, জাতীয় পরিষদ ও চারটি প্রাদেশিক পরিষদের সাত হাজার ৬০০ আসনের মধ্যে প্রায় তিন হাজার ৩০০ আসন ৫৯৭টি পরিবারের দখলে ছিল। এসব পরিবারের মধ্যে ৩৭৯টিই পাঞ্জাবভিত্তিক। বাকিগুলোর মধ্যে ১১০টি সিন্ধু, ৫৬টি খাইবার পাখতুনখাওয়া, ৪৫টি বেলুচিস্তান ও কেন্দ্র শাসিত উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলের (ফাতা) সাতটি পরিবার রয়েছে। বিদায়ী জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে প্রতিনিধিত্ব ছিল ৩৬৫টি রাজনৈতিক পরিবারের। গবেষণায় দেখা গেছে, বিগত পার্লামেন্টগুলোতে এসব রাজনৈতিক পরিবারের প্রতিনিধিত্বের হার খুব কমই পরিবর্তিত হয়েছে। ১৯৭৭ সালে সর্বনিম্ন ৩৭ শতাংশ এবং ১৯৯৩ সালে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ আসন রাজনৈতিক পরিবারগুলোর দখলে ছিল। অতীতে পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের মধ্যে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ আসন এসব রাজনৈতিক পরিবারগুলোর দখলে ছিল। এর পরই রয়েছে বেলুচিস্তান (৪৪ শতাংশ), সিন্ধু (৪১ শতাংশ), খাইবার পাখতুনখাওয়া (২৮ শতাংশ) ও কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত উপজাতীয় এলাকার (১৮ শতাংশ) অবস্থান। গবেষণার ক্ষেত্রে সেই সব পরিবারকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে, যেসব পরিবারের অন্তত দুজন সদস্য ১৯৭০ সাল থেকে সিনেট কিংবা জাতীয় পরিষদ অথবা প্রাদেশিক পরিষদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর মধ্যে এমনও অনেক পরিবার রয়েছে, যেসব পরিবারের দুজনের বেশি সদস্য পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করছেন। যেমন—সাবেক প্রেসিডেন্ট ফারুক লেঘারির পরিবারের ১৪ জন সদস্য এ পর্যন্ত দেশটির বিভিন্ন পর্যায়ের পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও ১৯৯০ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী গুলাম মুস্তাফা জাতোইয়ের পরিবারও পিছিয়ে নেই। তাঁর পরিবারের ১১ জন সদস্য পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
No comments