সারা দেশে আসামি ১০০০০০, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন আল্লামা শফী by মহিউদ্দীন জুয়েল
প্রধান আমীর আল্লামা শফী একেবারেই
নিশ্চুপ। দলের বাইরের কারও সঙ্গে তেমন কোন কথা বলছেন না। একা একাই সময় পার
করছেন। থাকছেন হাটহাজারী মাদরাসার ভেতরে। হরতাল কিংবা অবরোধ। অথবা ঢাকা
ঘেরাও কর্মসূচি। কোনটিই আপাতত আর দিচ্ছেন না তিনি।
ধৈর্য
ধরতে বলেছেন নেতা-কর্মীদের। অন্যদিকে সারা দেশে ১০০০০০-এর বেশি নেতা-কর্মী
মামলার ফাঁদে পড়েছেন। শীর্ষ নেতারা হয়রানি থেকে বাঁচতে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
রাত হলেই পুলিশ মাদরাসায় গিয়ে গিয়ে হানা দিচ্ছে। তাই দল থেকে বার্তা পাঠানো
হয়েছে হেফাজত সমর্থিত সারা দেশের ৪০,০০০ মাদরাসায়। সেখানে দেশের পরিস্থিতি
পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানানো হয়েছে। সরকার কি করছে, মামলা দিচ্ছে কি না,
মন্ত্রী-এমপিরা কি ধরনের কথা বলছেন, পুলিশের ভূমিকা কি সবকিছুই নজরে রাখছেন
দেশের আলোচিত সংগঠন হেফাজত ইসলাম। সামপ্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে মানবজমিন থেকে
দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে এমনি সব তথ্য।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনার পর এই মুহূর্তে অনেকটা লণ্ডভণ্ড হেফাজতে ইসলাম। খানিকটা বিপর্যস্তও। সারা দেশে দলীয় সাংগঠনিক দুর্বলতা আবার কাটিয়ে উঠতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দলটি। দলীয় আমীরের নির্দেশ পাওয়ার জন্য সবাই আবারও যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনায় সরকারের চালে হতভম্ব হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। মিছিল-সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে তাদের ওপর নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে সরকারের পুলিশবাহিনী।
বিষয়টি আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি দলীয় নেতারা। পারলে হয়তো কৌশল পাল্টাতেন। সমুচিত জবাবও দিতেন। এই মুহূর্তে তাই ওইদিনের সমাবেশে কত লোক মারা গেছেন তার একটা তালিকা তৈরি করছেন দলের একটি টিম। তারা প্রতিটি জেলার দায়িত্বশীলদের চিঠি দিয়ে এই বিষয়ে নাম ঠিকানা জানানোর জন্য বলেছেন। একই সঙ্গে কারা আহত হয়েছেন সেই বিষয়েও অবহিত করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।
নেতারা সরে এসেছেন হরতাল কর্মসূচি থেকেও। আগামীকাল ঢাকায় পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠক ডেকে সে হরতাল প্রত্যাহার করা হয়। গণমাধ্যমকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে দেন নেতারা। কেবল তাই নয়, ১৮ দলীয় জোটের দু’দিনের হরতালের হেফাজতে ইসলামের সমর্থন থাকলেও চট্টগ্রামে তাদের কোন নেতা-কর্মীকে রাস্তায় দেখা যায়নি। পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত থেকে তাদের কেউ রাস্তায় নামেননি বলে সূত্র জানিয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতা জানান, ঢাকার শাপলা চত্বরের সমাবেশে যোগ দিতে না পেরে মানসিকভাবে অনেকটাই ক্ষুব্ধ দলীয় আমীর আল্লামা আহমদ শফী। তাকে একপ্রকার জোর করেই ঢাকা থেকে বিমানযোগে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন। ঢাকা থেকে ফেরার পর অনেকটা নীরবে সময় পার করছেন তিনি।
তবে এখনি সবকিছু নিয়ে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না তিনি। দলের সবাই তার দিকে চেয়ে থাকলেও আল্লামা শফী ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন। ঢাকা থেকে আসার পর হাটহাজারী মাদরাসায় কয়েক দফা বৈঠক করেছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহের গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার হাটহাজারী মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, হুজুর সারা দিন মাদরাসাতেই অবস্থান করছেন। তিনি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দাওরা ক্লাসে পাঠদান করান। এরপর বিশ্রামকক্ষে যান। মাঝে মাঝে অঝোরে কেঁদেছেন। আল্লার কাছে নিহতদের জন্য দোয়া করেছেন।
হেফাজতে ইসলামের ৩ জন কেন্দ্রীয় নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকারের সঙ্গে তাদের দলীয় অবস্থান এখন মুখোমুখি পর্যায়ে চলে গেছে। সেখানে অনেকটা ইমেজ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। তবে এ মুহূর্তে সরকার হেফাজত কর্মীদের তছনছ করে দেয়ার মিশনে নেমেছেন। ঢাকার আশপাশের ২০-২৫টি কওমি মাদরাসায় প্রতিদিনই হানা দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
অনাকাঙিক্ষত ঘটনায় অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকার সবচেয়ে বড় কওমি মাদানী মাদরাসা। আরও বেশ কয়েকটি মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে আছে। হাটহাজারী মাদরাসাসহ সারা দেশের এমন বড় বড় কওমি মাদরাসা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে বলে তাদের ধারণা।
১৩ দফা আন্দোলনে এই মুহূর্তে হেফাজতে ইসলামের বেশ কয়েকজন নেতাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এরা হলেন- মুফতি ওয়াক্কাছ, মাওলানা নূর হোসেন কাশেমী, আবদুর রউফ ইউসুফী, ইছহাক, ফয়েজউল্লাহ, জুনায়েদ আল হাবীব, আবদুল লতিফসহ অন্তত ২৫ জন নেতা।
জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের সাহিত্য সম্পাদক আশরাফ আলী নিজামপুরী মানবজমিনকে বলেন, ‘এ কথা সত্যি হেফাজত সরকারের আক্রমণে কিছুটা বিপর্যস্ত। তারা পুলিশ বাহিনী দিয়ে যেভাবে রাতের আঁধারে আমাদের লোকজনকে হত্যা করেছে তাতে প্রতিবাদ জানানোর ভাষা নেই। তবে এর একটা সমুচিত জবাব হয়তো আর কিছুদিন পর দেয়া হবে।’
এ মুহূর্তে দলীয় অবস্থান কি?- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বড় ধরনের কোন কর্মসূচি না দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবকিছু ঠিকঠাক করতে দুই সপ্তাহতো লাগবে। নেতা-কর্মীরা মামলার জালে আটকা পড়েছেন। অনেকের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে হুজুর (শফী সাহেব) সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন। শিগগিরই ঝামেলা কাটিয়ে বড় কোন কর্মসূচির দিকে যাবো। তখন আর পেছনে ফেরার সুযোগ থাকবে না।’
একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ইসমাঈল খান ফয়েজী। গতকাল দুপুরে এ বিষয়ে তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তিনি মানবজমিনকে বলেন, ‘হেফাজতের নেতা-কর্মীরা কখনও ১৩ দফা থেকে পিছপা হবে না। আমরা শিগগিরই নতুনভাবে কর্মসূচিতে যাবো। হুজুর (শফী সাহেব) এই বিষয়ে নতুন করে করণীয় ঠিক করছেন। তিনি জানালে হয়তো সবাই একত্রিত হবো।’
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনার পর এই মুহূর্তে অনেকটা লণ্ডভণ্ড হেফাজতে ইসলাম। খানিকটা বিপর্যস্তও। সারা দেশে দলীয় সাংগঠনিক দুর্বলতা আবার কাটিয়ে উঠতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দলটি। দলীয় আমীরের নির্দেশ পাওয়ার জন্য সবাই আবারও যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনায় সরকারের চালে হতভম্ব হেফাজতে ইসলামের নেতা-কর্মীরা। মিছিল-সমাবেশ করার অনুমতি দিয়ে তাদের ওপর নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে সরকারের পুলিশবাহিনী।
বিষয়টি আগে থেকে আঁচ করতে পারেননি দলীয় নেতারা। পারলে হয়তো কৌশল পাল্টাতেন। সমুচিত জবাবও দিতেন। এই মুহূর্তে তাই ওইদিনের সমাবেশে কত লোক মারা গেছেন তার একটা তালিকা তৈরি করছেন দলের একটি টিম। তারা প্রতিটি জেলার দায়িত্বশীলদের চিঠি দিয়ে এই বিষয়ে নাম ঠিকানা জানানোর জন্য বলেছেন। একই সঙ্গে কারা আহত হয়েছেন সেই বিষয়েও অবহিত করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।
নেতারা সরে এসেছেন হরতাল কর্মসূচি থেকেও। আগামীকাল ঢাকায় পুলিশি বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়ে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার এক জরুরি বৈঠক ডেকে সে হরতাল প্রত্যাহার করা হয়। গণমাধ্যমকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়ে দেন নেতারা। কেবল তাই নয়, ১৮ দলীয় জোটের দু’দিনের হরতালের হেফাজতে ইসলামের সমর্থন থাকলেও চট্টগ্রামে তাদের কোন নেতা-কর্মীকে রাস্তায় দেখা যায়নি। পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত থেকে তাদের কেউ রাস্তায় নামেননি বলে সূত্র জানিয়েছে।
হেফাজতে ইসলামের কয়েকজন নেতা জানান, ঢাকার শাপলা চত্বরের সমাবেশে যোগ দিতে না পেরে মানসিকভাবে অনেকটাই ক্ষুব্ধ দলীয় আমীর আল্লামা আহমদ শফী। তাকে একপ্রকার জোর করেই ঢাকা থেকে বিমানযোগে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেন। ঢাকা থেকে ফেরার পর অনেকটা নীরবে সময় পার করছেন তিনি।
তবে এখনি সবকিছু নিয়ে মুখ খুলতে চাচ্ছেন না তিনি। দলের সবাই তার দিকে চেয়ে থাকলেও আল্লামা শফী ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার কথা জানিয়েছেন। ঢাকা থেকে আসার পর হাটহাজারী মাদরাসায় কয়েক দফা বৈঠক করেছেন তিনি।
চলতি সপ্তাহের গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার হাটহাজারী মাদরাসায় গিয়ে দেখা যায়, হুজুর সারা দিন মাদরাসাতেই অবস্থান করছেন। তিনি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দাওরা ক্লাসে পাঠদান করান। এরপর বিশ্রামকক্ষে যান। মাঝে মাঝে অঝোরে কেঁদেছেন। আল্লার কাছে নিহতদের জন্য দোয়া করেছেন।
হেফাজতে ইসলামের ৩ জন কেন্দ্রীয় নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকারের সঙ্গে তাদের দলীয় অবস্থান এখন মুখোমুখি পর্যায়ে চলে গেছে। সেখানে অনেকটা ইমেজ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। তবে এ মুহূর্তে সরকার হেফাজত কর্মীদের তছনছ করে দেয়ার মিশনে নেমেছেন। ঢাকার আশপাশের ২০-২৫টি কওমি মাদরাসায় প্রতিদিনই হানা দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
অনাকাঙিক্ষত ঘটনায় অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে ঢাকার সবচেয়ে বড় কওমি মাদানী মাদরাসা। আরও বেশ কয়েকটি মাদরাসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে আছে। হাটহাজারী মাদরাসাসহ সারা দেশের এমন বড় বড় কওমি মাদরাসা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে বলে তাদের ধারণা।
১৩ দফা আন্দোলনে এই মুহূর্তে হেফাজতে ইসলামের বেশ কয়েকজন নেতাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এরা হলেন- মুফতি ওয়াক্কাছ, মাওলানা নূর হোসেন কাশেমী, আবদুর রউফ ইউসুফী, ইছহাক, ফয়েজউল্লাহ, জুনায়েদ আল হাবীব, আবদুল লতিফসহ অন্তত ২৫ জন নেতা।
জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের সাহিত্য সম্পাদক আশরাফ আলী নিজামপুরী মানবজমিনকে বলেন, ‘এ কথা সত্যি হেফাজত সরকারের আক্রমণে কিছুটা বিপর্যস্ত। তারা পুলিশ বাহিনী দিয়ে যেভাবে রাতের আঁধারে আমাদের লোকজনকে হত্যা করেছে তাতে প্রতিবাদ জানানোর ভাষা নেই। তবে এর একটা সমুচিত জবাব হয়তো আর কিছুদিন পর দেয়া হবে।’
এ মুহূর্তে দলীয় অবস্থান কি?- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বড় ধরনের কোন কর্মসূচি না দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবকিছু ঠিকঠাক করতে দুই সপ্তাহতো লাগবে। নেতা-কর্মীরা মামলার জালে আটকা পড়েছেন। অনেকের পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তবে হুজুর (শফী সাহেব) সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন। শিগগিরই ঝামেলা কাটিয়ে বড় কোন কর্মসূচির দিকে যাবো। তখন আর পেছনে ফেরার সুযোগ থাকবে না।’
একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ইসমাঈল খান ফয়েজী। গতকাল দুপুরে এ বিষয়ে তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। তিনি মানবজমিনকে বলেন, ‘হেফাজতের নেতা-কর্মীরা কখনও ১৩ দফা থেকে পিছপা হবে না। আমরা শিগগিরই নতুনভাবে কর্মসূচিতে যাবো। হুজুর (শফী সাহেব) এই বিষয়ে নতুন করে করণীয় ঠিক করছেন। তিনি জানালে হয়তো সবাই একত্রিত হবো।’
No comments