ভারতের আইনমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ
ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পবন কুমার বানসাল ও আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার গতকাল শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন। ভাগনের ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দলের ভেতরে ও বাইরে প্রচণ্ড চাপের মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন রেলমন্ত্রী। এর পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন আইনমন্ত্রী। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি আইনমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিল। একের পর এক দুর্নীতির ঘটনায় বিপর্যস্ত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার এই দুই মন্ত্রীর পদত্যাগের ফলে আরেকটি বড়সড় ধাক্কা খেল। বানসাল ও অশ্বিনী কুমারের পদত্যাগের দাবিতে বিরোধীদের কঠোর অবস্থানের ফলে ভারতীয় পার্লামেন্টে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি চলতি সপ্তাহের বাজেট অধিবেশন দুই দিন কমিয়ে আনতেও বাধ্য হয় ইউপিএ সরকার। বানসাল ও অশ্বিনী কুমারের এই পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সেই অচলায়তনের অবসান ঘটল। কয়লাখনি কেলেঙ্কারি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের একটি খসড়া প্রতিবেদন আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রোষানলে পড়েছিলেন আইনমন্ত্রী অশ্বিনী কুমার। এর পর থেকে বিরোধীদেরও সমালোচনায় পড়েন তিনি। সুপ্রিম কোর্ট বলেন, একজন মন্ত্রী একটি প্রতিবেদনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। কিন্তু সিবিআইয়ের তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। রেলওয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে উচ্চ পদে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে বানসালের ভাগনে বিজয় সিংলা বড় অঙ্কের ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত সপ্তাহে বিজয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। সিবিআই সূত্র বলেছে, ভাগনের ঘুষ কেলেঙ্কারিতে বানসালের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য শিগগিরই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সূত্রটি বলছে, সিবিআই বানসালের ব্যাপারে ‘বড় ধরনের সন্দেহ’ নিয়েই এগোচ্ছে। রেলওয়ের দুর্নীতি ও ভাগনের ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় কয়েক মাস ধরে তদন্ত করছে সিবিআই। সিবিআই জানিয়েছে, বিজয়কে ঘুষ দেওয়া রেলওয়ে কর্মকর্তা মহেশ কুমার জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, দিল্লিতে রেলমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে ঘুষবিনিময় নিয়ে বিজয়ের সঙ্গে তাঁর বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়। তিনি বলেন, বিজয় প্রায়ই তাঁর মামার রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহযোগীদের কক্ষ ব্যবহার করতেন। এ ব্যাপারে বানসালের ব্যক্তিগত সহকারীকে ইতিমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁর কাছে বিজয়কে কেন সরকারি দপ্তর ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ভাগনের ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই বানসাল পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। গত অক্টোবরে রেলমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন বানসাল।
No comments