খালেদা জিয়ার দীর্ঘ কারাবাস, কোন পথে এগোবে বিএনপি
বাংলাদেশে বিরোধীদল বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন ৮ই মে পর্যন্ত স্থগিত করেছে সুপ্রিমকোর্ট।
তার আইনজীবীরা এই আদেশকে নজিরবিহীন এবং অপ্রত্যাশিত বলে বর্ণনা করেছেন। তারা বলছেন, এখন খালেদা জিয়া খুব সহসা মুক্তি পাচ্ছেন না। দলটির একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন, এমন পরিস্থিতির জন্য বিএনপি প্রস্তুত ছিল না। তাদের মধ্যে নতুন করে এক ধরণের হতাশা তৈরি হয়েছে। তবে বিএনপি পরিস্থিতিটাকে বাস্তবতা হিসেবে ধরে নিয়ে নির্বাচন সামনে রেখে কৌশলে এগুতে চাইছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট চার মাসের জামিন দিয়েছিল।
এখন সরকার এবং দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্ট থেকে দেড় মাসেরও বেশি সময়ের জন্য জামিন স্থগিত হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলেছে ১০ বছর ধরে। কিন্তু সেই বিচার কার্যক্রম এখনই শেষ হয়ে যাবে, এমনটা ধারণা করতে পারেননি বিএনপি'র শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। ফলে বিচার শেষে পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে যখন জেলে নেয়া হয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে এসে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছে। বিএনপি নেতাদের অনেকের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, খালেদা জিয়া কারাবন্দী হলেও অল্প সময়ের মধ্যে জামিনে মুক্তি পাবেন, দলটিতে এমন ধারণাও তৈরি হয়েছিল। দক্ষিণ পশ্চিমে খুলনায় বিএনপির ভাল অবস্থান রয়েছে। সেখানকার বিএনপির একজন সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলছিলেন, খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হবে, এ ব্যাপারে তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন না। "বিএনপি এটার জন্য প্রস্তুত ছিল না। এই যে নির্বাচন সামনে রেখে তাঁকে আটক রাখা হয়েছে। এর পিছনে বিএনপিকে ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। নেতা-কর্মিদের মাঝে হতাশা দেখা দিতে পারে। নানান ধরণের ষড়যন্ত্রের মধ্যে বিএনপিকে ফেলতে পারে।"
বিএনপির এই নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু আরও বলেছেন, "বিএনপি বলুক যে বেগম জিয়ার মুক্তি না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি বলুক যে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা না হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এবং এধরণের প্রতিকূল পরিবেশে যাতে বিএনপি নির্বাচনে না যায়, তারই ষড়যন্ত্র চলছে।"
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মিদের অনেকের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, তাদের শীর্ষ নেত্রীকে জেলে নেয়ার ঘটনায় বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা কর্মিরা সক্রিয় হয়েছিল, সেটাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচন সামনে রেখে জনগণকে সম্পৃক্ত করার কৌশল নিয়ে এগুনোর কথা দলের কেন্দ্র থেকে তাদের বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত হওয়ায় বিএনপি আবার হোঁচট খেয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
উত্তরের রাজশাহী থেকে বিএনপির একজন নেত্রী জাহান পান্না বলছিলেন, তাদের তৃণমুলে আবার যে হতাশা তৈরি হলো, তা কাটিয়ে উঠতে সময় প্রয়োজন হবে।
যদিও বিএনপিতে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ায় মানুষের মাঝে একটা সহানুভুতির সৃষ্টি হয়েছে এবং গণসংযোগের মতো তাদের কর্মসূচিগুলোকে মানুষ সমর্থন করছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপির কর্মসূচি সরকারের উপর কোন চাপ তৈরি করতে পারেনি। সিনিয়র সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবির বলছিলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুর কাছে এখন নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিএনপির দাবি চাপা পড়ে গেছে। "নির্বাচনের সময় সহায়ক সরকারের যে দাবি বিএনপি করেছিল, সেটা এখন 'ফরগট ইট' বা অতীত হয়ে গেছে। বিএনপি আর সে সুযোগ পাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার কারাবাসের পর যে আন্দোলন গড়ে তোলার কথা ছিল, সেটা কিন্তু পারেনি। সব মিলিয়ে তাদের নেতৃত্বে এক ধরণের হতাশা এবং একই সাথে কনফিউশন সৃষ্টি করেছে" বলে মি. কবির মনে করেন।
বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়। সেই প্রেক্ষাপটে দলটি সতর্কতার সাথে এগুবে বলে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলে আসছেন। এখনও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত হওয়ায় তাদের দলে কিছুটা হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। এরপরও তাঁরা সতর্কতার সাথে এগুতে চান। "কিছুটাতো আপনার এতে ক্ষোভ হতাশা সবই সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ নেতা-কর্মিদের। কিছুটা প্রভাবতো পড়বেই। তবে এটা ঠিক সরকারের দিক থেকে এটা আরেকটা প্রভোকেশন।যাতে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আমরা সচেতনভাবে চেষ্টা করছি, প্রভোকেশনে ট্র্যাপ্ট না হতে|" বিএনপির নেতারা আরও বলছেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে এবং নেতা-কর্মিদের অংশগ্রহণ থাকে, এই ধরণের কর্মসূচিই তাঁরা অব্যাহত রাখতে চাইছেন।
তারা মনে করেন, একটা কঠিন সময় তারা পার করছেন, এই পরিস্থিতিতে তাদের সিনিয়র নেতারা ঐক্যবদ্ধ আছেন। তবে বিএনপি এখনও সরকারের উপর কোন চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বলে বিশ্লেষকরা যে বলছেন, সেখানে দলটি ভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল নেয়ার কথা বলছে। বিএনপি চাইছে, তাদের জোট এবং সরকারের জোটের বাইরে থাকা দলগুলোর সাথে যুগপৎভাবে কর্মসূচি নিয়ে এগুতে। এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে সব দলকে দাঁড় করানোর একটা চেষ্টা তাদের রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
তার আইনজীবীরা এই আদেশকে নজিরবিহীন এবং অপ্রত্যাশিত বলে বর্ণনা করেছেন। তারা বলছেন, এখন খালেদা জিয়া খুব সহসা মুক্তি পাচ্ছেন না। দলটির একাধিক নেতা স্বীকার করেছেন, এমন পরিস্থিতির জন্য বিএনপি প্রস্তুত ছিল না। তাদের মধ্যে নতুন করে এক ধরণের হতাশা তৈরি হয়েছে। তবে বিএনপি পরিস্থিতিটাকে বাস্তবতা হিসেবে ধরে নিয়ে নির্বাচন সামনে রেখে কৌশলে এগুতে চাইছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজা নিয়ে কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট চার মাসের জামিন দিয়েছিল।
এখন সরকার এবং দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্ট থেকে দেড় মাসেরও বেশি সময়ের জন্য জামিন স্থগিত হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলেছে ১০ বছর ধরে। কিন্তু সেই বিচার কার্যক্রম এখনই শেষ হয়ে যাবে, এমনটা ধারণা করতে পারেননি বিএনপি'র শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। ফলে বিচার শেষে পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর খালেদা জিয়াকে যখন জেলে নেয়া হয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে এসে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেছে। বিএনপি নেতাদের অনেকের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, খালেদা জিয়া কারাবন্দী হলেও অল্প সময়ের মধ্যে জামিনে মুক্তি পাবেন, দলটিতে এমন ধারণাও তৈরি হয়েছিল। দক্ষিণ পশ্চিমে খুলনায় বিএনপির ভাল অবস্থান রয়েছে। সেখানকার বিএনপির একজন সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলছিলেন, খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হবে, এ ব্যাপারে তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন না। "বিএনপি এটার জন্য প্রস্তুত ছিল না। এই যে নির্বাচন সামনে রেখে তাঁকে আটক রাখা হয়েছে। এর পিছনে বিএনপিকে ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। নেতা-কর্মিদের মাঝে হতাশা দেখা দিতে পারে। নানান ধরণের ষড়যন্ত্রের মধ্যে বিএনপিকে ফেলতে পারে।"
বিএনপির এই নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জু আরও বলেছেন, "বিএনপি বলুক যে বেগম জিয়ার মুক্তি না হলে তারা নির্বাচনে যাবে না। বিএনপি বলুক যে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা না হলে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এবং এধরণের প্রতিকূল পরিবেশে যাতে বিএনপি নির্বাচনে না যায়, তারই ষড়যন্ত্র চলছে।"
দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মিদের অনেকের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, তাদের শীর্ষ নেত্রীকে জেলে নেয়ার ঘটনায় বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা কর্মিরা সক্রিয় হয়েছিল, সেটাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচন সামনে রেখে জনগণকে সম্পৃক্ত করার কৌশল নিয়ে এগুনোর কথা দলের কেন্দ্র থেকে তাদের বলা হয়েছিল। কিন্তু এখন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত হওয়ায় বিএনপি আবার হোঁচট খেয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
উত্তরের রাজশাহী থেকে বিএনপির একজন নেত্রী জাহান পান্না বলছিলেন, তাদের তৃণমুলে আবার যে হতাশা তৈরি হলো, তা কাটিয়ে উঠতে সময় প্রয়োজন হবে।
যদিও বিএনপিতে একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যে, খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেয়ায় মানুষের মাঝে একটা সহানুভুতির সৃষ্টি হয়েছে এবং গণসংযোগের মতো তাদের কর্মসূচিগুলোকে মানুষ সমর্থন করছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপির কর্মসূচি সরকারের উপর কোন চাপ তৈরি করতে পারেনি। সিনিয়র সাংবাদিক আমানউল্লাহ কবির বলছিলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির ইস্যুর কাছে এখন নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিএনপির দাবি চাপা পড়ে গেছে। "নির্বাচনের সময় সহায়ক সরকারের যে দাবি বিএনপি করেছিল, সেটা এখন 'ফরগট ইট' বা অতীত হয়ে গেছে। বিএনপি আর সে সুযোগ পাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার কারাবাসের পর যে আন্দোলন গড়ে তোলার কথা ছিল, সেটা কিন্তু পারেনি। সব মিলিয়ে তাদের নেতৃত্বে এক ধরণের হতাশা এবং একই সাথে কনফিউশন সৃষ্টি করেছে" বলে মি. কবির মনে করেন।
বিএনপি নির্বাচনে যেতে চায়। সেই প্রেক্ষাপটে দলটি সতর্কতার সাথে এগুবে বলে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বলে আসছেন। এখনও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত হওয়ায় তাদের দলে কিছুটা হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। এরপরও তাঁরা সতর্কতার সাথে এগুতে চান। "কিছুটাতো আপনার এতে ক্ষোভ হতাশা সবই সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ নেতা-কর্মিদের। কিছুটা প্রভাবতো পড়বেই। তবে এটা ঠিক সরকারের দিক থেকে এটা আরেকটা প্রভোকেশন।যাতে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। আমরা সচেতনভাবে চেষ্টা করছি, প্রভোকেশনে ট্র্যাপ্ট না হতে|" বিএনপির নেতারা আরও বলছেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে এবং নেতা-কর্মিদের অংশগ্রহণ থাকে, এই ধরণের কর্মসূচিই তাঁরা অব্যাহত রাখতে চাইছেন।
তারা মনে করেন, একটা কঠিন সময় তারা পার করছেন, এই পরিস্থিতিতে তাদের সিনিয়র নেতারা ঐক্যবদ্ধ আছেন। তবে বিএনপি এখনও সরকারের উপর কোন চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি বলে বিশ্লেষকরা যে বলছেন, সেখানে দলটি ভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল নেয়ার কথা বলছে। বিএনপি চাইছে, তাদের জোট এবং সরকারের জোটের বাইরে থাকা দলগুলোর সাথে যুগপৎভাবে কর্মসূচি নিয়ে এগুতে। এর মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে সব দলকে দাঁড় করানোর একটা চেষ্টা তাদের রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
No comments